কি আছে মুনিয়ার ডায়রিতে

  • নিজস্ব প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: এপ্রিল ২৯, ২০২১, ১১:৫৮ এএম
কি আছে মুনিয়ার ডায়রিতে

ফাইল ছবি

ঢাকা : সম্পর্কের সামাজিক স্বীকৃতি, দাম্পত্য জীবন নিয়ে তার প্রত্যাশা, প্রতিবন্ধকতা, তাদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব ও পারিবারিক সমস্যার কথা লিখে গেছেন ভুক্তভোগী নারী। গুলশানে কলেজছাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলা প্রতিষ্ঠায় ডায়েরি আদালতে জরুরি হবে। ডায়েরির তথ্য অনুযায়ী পুলিশ প্রাসঙ্গিক সাক্ষ্য গ্রহণ করবে।

গুলশানে কলেজছাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী। 

তিনি বলেছেন, মোসারাত জাহান মুনিয়ার নিজ হাতে লেখা ছয়টি ডায়েরি এ মামলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য। পুলিশ ভুক্তভোগীকে ন্যায়বিচার দেয়ার চেষ্টা করছে। গতকাল নিজ কার্যালয়ে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।  

এদিকে, এ মামলার আসামি বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর হাইকোর্টে আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেছেন। হাইকোর্টের আজকের কার্যতালিকায় বিষয়টি রয়েছে। 

ওদিকে পুলিশ উপ-কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ঘটনার শিকার নারীকে হতাশা গ্রাস করেছিল, তিনি মারাত্মক মনঃকষ্টে ছিলেন। ডায়েরির পাতায় পাতায় মানসিক বিপর্যস্ততার প্রমাণ আছে। মানসিক বিপর্যয়ের মুখেই তাকে হয়তো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।

সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, মামলা হয়েছে দণ্ডবিধি ৩০৬ ধারায়। আত্মহত্যায় ‘প্ররোচনা’ ও ‘অভিপ্রায়’ এখন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সে জন্য সাক্ষ্য সংগ্রহ জরুরি। পুলিশ এই ঘটনায় যাবতীয় তথ্য ও সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহের চেষ্টা করছে। বেশকিছু ‘ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট’ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। ঘটনাটিকে এক সুতোয় গাঁথতে, অর্থাৎ কোন ঘটনার পর  কোনটি ঘটেছে, তা জানতে পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ, মুঠোফোন ও পারিপার্শ্বিক যে বিষয়গুলো আছে,  সেগুলো সংগ্রহ করেছে। ভুক্তভোগী নারীর মৃত্যু কী কারণে, সেটি জানা সবচেয়ে জরুরি। ময়নাতদন্তকারী বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পুলিশ যোগাযোগ করেছে। তাছাড়া ডিএনএ প্রোফাইল করাসহ আর যা যা করা প্রয়োজন,  সে সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পুলিশ অনুরোধ করেছে। সাক্ষ্য, বস্তুগত প্রমাণ সংগ্রহের মাধ্যমে মামলাটিকে একটা গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে পুলিশ নিয়ে আসতে পারবে বলে মনে করে। সে অনুযায়ী পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রাথমিকভাবে পুলিশ ওই ফ্ল্যাটের মালিক, মেয়ের জামাই ও ভবনের তত্ত্বাবধায়কের সঙ্গে কথা বলেছে। পরে নিয়মিত সাক্ষ্য নেবে। ফ্ল্যাটে মুনিয়ার ব্যবহৃত দুটি মোবাইলফোন পাওয়া গেছে। ফোনগুলো নিয়ে বিশেষজ্ঞ দল কাজ করছে।

কারও অপরাধ থাকলে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। ওদিকে,  স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, কলেজছাত্রী  মোসারাত জাহান মুনিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় কারও অপরাধ থেকে থাকলে তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। বুধবার রাজধানীতে নিজের বাসায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। 

এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি স্পষ্ট... আইন অনুযায়ী আইন চলবে। যে অপরাধী হয়, তাকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে, বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।’ তবে বিষয়টি  যেহেতু তদন্তাধীন, তা শেষ হলেই এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে বলে মন্তব্য করেন আসাদুজ্জামান খান কামাল।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Link copied!