ঢাকা: রাজধানীর কল্যানপুরে ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভাঙ্গা পায়ের অপারেশন করাতে এসে পূরবী ঘোষ নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনা তদন্তে ৪ সদস্যের একটি কমিটি ঘঠন করেছে ইবনে সিনা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বুধবার (২১ জুন) বিকেলে কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালটি পরিচালক (মেডিকেল সার্ভিসেস) বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব) মো. পারভেজ কবির।
তিনি বলেন, ইবনে সিনা হাসপাতালের অর্থপেডিক বিভাগের কনসালটেন্ট ডাক্তার শাহিদুর রহমান খানের অধিনে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন থাকা রোগীর মৃত্যুর কারণ জানতে চার সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটির আহবায়ক প্রফেসর ডাক্তার মো. ইদ্রিস আলীর নেতৃত্বে মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডাক্তার এ কে এম মাজহারুল ইসলাম, ইনেস্থিওলজি বিভাগের প্রফেসর ডাক্তার সিরাজুল ইসলাম ও সিনিয়র সহকারী ম্যানেজার (এডমিন) মুহাম্মদ হাছানকে সদস্য করা হয়েছে। তারা আগামী দুই কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত করে কারও অবহেলার বিষয় থাকলে সেটি ক্ষতিয়ে দেখবেন। আমরা চাই না ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আবার ঘটুক।
রোগীর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে না পারলেও পারভেজ কবির বলেন, এই ঘটনায় আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। এখনই মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাচ্ছে না। তবে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। এই রোগীর সংশ্লিষ্ট সকল ডাক্তার ও নার্সদের তদন্তের মুখোমুখি করা হবে। কারও দায় পেলে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে নিহত রোগীর আগে থেকেই একটি ব্রেন স্টোকসহ বেশ কিছু সমস্যা ছিলো।
নিহত নারীর নাম পূরবী ঘোষ (৫৮)। তার গ্রামের বাড়ি বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জ উপজেলায়। তিনি শারীরিক চিকিৎসা করাতে রাজধানীর রামপুরায় ছেলে ইমনের বাসা এসেছিলেন। সেখানেই বাথরুমে পড়ে গিয়ে পা ভাঙ্গেন।
চিকিৎসার অবহেলার অভিযোগ তুলে নিহতের ছেলে সৌমিত্র ঘোষ ইমন বলেন, গত ১০ জুন বাসার বাথরুমে গিয়ে আমার মায়ের পায়ে একাধিক ফাটল দেখা দেয়, ফলে অপারেশনের প্রয়োজন পড়ে। গত ১৩ জুন কল্যাণ পুরের ইবনে সিনা হাসপাতালে আমার মায়ের পায়ের অপারেশন হয়। অপারেশনের একদিন পরে থেকে তিনি নিস্তেজ হয়ে পরছিলেন। এই সময়ে তাকে অনেকটা অপেক্ষা করানো হয়। ভালোভাবে চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। এমনকি গতকাল যখন আমরা দেখছিলাম তার অবস্থা খারাপ সেই সময়েও হাসপাতালের ডিউটিরত চিকিৎসকরা আমাদের নানাভাবে আস্বস্ত করার চেষ্টা করছিলেন। বারবার বলার পরেও তারা গুরুত্ব দিচ্ছিলেন না। সব শেষ আজ সকালে আমার মা চলে গেলেন।
জানা গেছে, নিহত পূরবী ঘোষের অপারেশন করেছিলেন ডাক্তার শাহিদুর রহমান। তিনি ইবনে সিনা হাসপাতালে অর্থপেডিক বিভাগের চিকিৎসক।
ইমন আরও বলেন, আমার মায়ের অবস্থার অবনতি হলে ডাক্তার শাহিদুর রহমান রেফার করেন মেডিসিন বিভাগে৷ সেখানের চিকিৎসকরা অবস্থার অবনতির বিষয়টি বুঝিতে পারায় পাঠান নিউরো সায়েন্স বিভাগে। এরপর তার কোনো রকম চিকিৎসা সেবা না দিয়ে নাকে নল লাগিয়ে ফেলে রাখা হয়।
অবহেলায় রোগী মৃত্যুর বিষয়ে জানতে ইবনে সিনা হাসপাতালের ম্যানেজার আ ন ম তাজুল ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে তিনি সাড়া দেননি। এমনকি হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ পাঠালেও তিনি উত্তর দেননি।
সোনালীনিউজ/এলআই/আইএ
আপনার মতামত লিখুন :