ঢাকা: রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার ব্যস্ত সড়কে এলোপাতাড়ি গুলির ঘটনায় থানায় হত্যা চেষ্টা মামলা হয়েছে। গুলি করা সেই যুবকসহ আটজন এখন নজরদারিতে রয়েছে। তাদের যেকোনো সময় গ্রেফতার করা হতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গত সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা এলাকার সড়কে একটি প্রাইভেট কার থামিয়ে চারটি মোটরসাইকেলে আসা সাত থেকে আট যুবক এক শীর্ষ সন্ত্রাসীকে এলোপাতাড়ি গুলি করেন। এতে প্রাইভেট কারে থাকা মামুন নামে ওই শীর্ষ সন্ত্রাসীসহ এক মোটরসাইকেল আরোহী ও একজন পথচারী গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে গুলিবিদ্ধ মোটরসাইকেল আরোহী ভুবন চন্দ্র শীলের অবস্থা খারাপ হলে পরবর্তীতে তাকে পপুলার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভুবন একজন আইনজীবী। তিনি এখন হাসপাতালের আইসিইউতে আছেন।
এ ঘটনার পর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) মামলাটি করেছেন ভুবনের স্ত্রী রত্না রাণী শীল।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই বিএম রানাকে একাধিকবার কল করা হলেও ফোনে পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় থানা পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রাইভেট কারে থাকা মামুন নামে যে ব্যক্তি আহত হয়েছেন তিনি একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী। ঘটনার দিন ২৬ বছর জেল খেটে বের হন। মগবাজার এলাকার প্রেয়সী বার থেকে বের হয়ে ওই সময় মামুন, খোকন ও মিঠু নামের তিনজন প্রাইভেট কারে শুক্রাবাদের বাসায় যাচ্ছিলেন।
পুলিশ জানায়, হামলাকারীরা চারটি মোটরসাইকেলে এসে মামুনকে বহনকারী প্রাইভেট কার লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে এক মোটরসাইকেল আরোহী ও একজন পথচারী আহত হন। মামুন প্রাইভেট কার থেকে বের হয়ে পালানোর চেষ্টার সময় তাকে কুপিয়ে আহত করা হয়।
এই মামুনের সাথে হামলাকারীদের পূর্ব শত্রুতা ছিল এমনটি ধারণা করছে পুলিশ। এ ঘটনার পর মামুন গা ঢাকা দিলেও পরে পুলিশ তার সন্ধান পেয়েছে। তবে মামুনকে নিয়ে বেশি কথা বলছে না কেউই। তবে মামুন নিজেও গুলিতে আহত হলেও কোনো মামলা করেননি। এ বিষয়টিও প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এসব বিষয়কে মাথায় রেখে এখন তদন্ত করছে পুলিশ।
এদিকে পুলিশের আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, ঘটনার সময় যারা মোটরসাইকেলে এসে গুলি করে পালিয়েছে তাদের ব্যাপারে জানতে পেরেছে পুলিশ। সকলকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। সুযোগ বুঝে যে কোনো সময় গ্রেফতার করা হতে পারে।
তবে ঘটনার পর শিল্পাঞ্চল এলাকার সেই সড়কের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। সেগুলো গত ২৪ ঘণ্টা যাচাই-বাছাই করে মোটরসাইকেলে আসা যুবকদের ব্যাপারে তথ্য পেয়েছে। তারা কোন পথ ধরে এসেছিল এবং কোন পথে পালিয়ে গেছে সেটাও পেয়েছে পুলিশ। মোটামুটি সব তথ্য পেলেও তাদের পরিচয় প্রকাশ করছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এদিকে আহত ভুবনের ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘটনার দিন গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকে ভুবনের এখনো জ্ঞান ফেরেনি। তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। সেখানে আছেন তার স্ত্রীসহ স্বজনরা। তার চিকিৎসা বাবদ প্রতিদিন খরচ হচ্ছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। ভুবন শীলের বাড়ি নোয়াখালী। তিনি মতিঝিল এলাকায় একটি মেসে থাকতেন।
বিষয়টি নিয়ে শিল্পাঞ্চল থানার ওসি মাযহারুল ইসলাম বলেন, মামলাটি আমরা তদন্ত করছি। মামুনকে খুঁজে পাওয়া গেছে। যারা তাকে গুলি করেছিল তাদের ব্যাপারে আমরা খোঁজ পেয়েছি। গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
মঙ্গলবার আহত পথচারী ভুবনের স্ত্রীর দায়েরকৃত মামলায় আসামি অজ্ঞাত উল্লেখ করা হয়েছে। তবে মামলার ধারা দেওয়া হয়েছে হত্যা চেষ্টা।
এমএস
আপনার মতামত লিখুন :