ঢাকা: জনসমাগমের মধ্যে প্রকাশ্যে রাজধানীর নিউ সুপার মার্কেটে কুরিয়ার সার্ভিসের তালা ভেঙে সাড়ে ১৭ লাখ টাকা লুট করে বীরদর্পে হেঁটে যায় পোশাকে কেতাদুরস্ত ১০ যুবক। তাদের একজনের ফ্রেঞ্চকাট দাড়ি, পরনে দামি টি-শার্ট-প্যান্ট। পিঠে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের ব্যাগ। প্রথম দেখায় যে কারও মনে হবে তারা প্রত্যেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। গত শুক্রবার জুমার নামাজের সময় মাত্র ৮ মিনিটেই এমন দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, গত শুক্রবার জুমার নামাজের উদ্দেশে একদিকে মুসল্লিদের ঢল নেমেছিল, অন্যদিকে পথচারীদের আনাগোনায় মুখরিত রাজধানীর নিউ মার্কেট কমপ্লেক্সের সামনের ফুটপাত; চত্বরে সজাগ দৃষ্টিতে দায়িত্ব পালন করছেন নিরাপত্তারক্ষীরা। বিলাশবহুল এই কমপ্লেক্সের সামনেই অবস্থিত নিউ সুপার মার্কেটের ফুটপাত ঘেঁষে ভ্যানগাড়িতে বসে খদ্দেরের অপেক্ষায় অসংখ্য চালক। নিরাপত্তাকর্মীরাও দায়িত্ব পালন করছিলেন মার্কেটজুড়ে। অথচ এত জনসমাগমের মধ্যেই এমন ডাকাতির ঘটনা ঘটল। গত বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় সাড়ে ১৭ লাখ টাকা জমা হয়। শুক্রবার ব্যাংক বন্ধ থাকায় টাকা প্রতিষ্ঠানেই ছিল। পুরো ঘটনা ধরা পড়েছে কুরিয়ার সার্ভিস ও পাশের মার্কেটের ক্যামেরায়। জুমার নামাজের পর মালিক ও কর্মকর্তারা চুরির তথ্য পান। হাতের আঙুলের ছাপ যেন না পাওয়া যায় সেজন্য দুর্বৃত্তরা দোকানের তালাগুলোও নিয়ে যায়। ঘটনার বিস্তারিত জানাতে অপারগতা প্রকাশ করে মালিক আজিজ বলেন, এত নিরাপত্তার মধ্যেও এমন ঘটনা রহস্যজনক। দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তার করে টাকা উদ্ধারের দাবি জানান তিনি।
এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ১০ জনের বিরুদ্ধে নিউমার্কেট থানায় মামলা করেছেন করতোয়া কুরিয়ার সার্ভিসের মালিক মো. আবদুল আজিজ। কিন্তু ঘটনার দুদিন পেরিয়ে গেলেও চক্রের কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। নিউমার্কেট থানার ওসি মো. শফিকুল গনি সাবু গতকাল আমাদের সময়কে বলেন, চাঞ্চল্যকর ওই চুরির ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করে জড়িতদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, চক্রের সদস্যরা পূর্ব পরিচিত। ধারণা করা হচ্ছে তাদের সঙ্গে স্থানীয় অথবা মার্কেটের কেউ জড়িত রয়েছে। চক্রটি এতটাই পারদর্শী যে কয়েক মিনিটের মধ্যে টার্গেট প্রতিষ্ঠানে চুরি করে মুহূর্তেই সটকে পড়তে পারে। চুরির আগে তারা সাধারণ মানুষদের সঙ্গে মিশে প্রকাশ্যে এলাকায় ঘুরে বেড়ায়। চুরির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট এলাকার স্থানীয় সোর্সকে টার্গেটের সব তথ্য পেতে ব্যবহার করে। এরপর জনসমাগমের মধ্যেই ঘটনা ঘটিয়ে সবকিছু চুরি করে নিয়ে যেতে সক্ষম চক্রটি। তদন্ত কর্মকর্তা নিউমার্কেট থানার এসআই মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, চক্রের সদস্যরা গা ঢাকা দিয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এমএস
আপনার মতামত লিখুন :