ঢাকা : রাজধানীতে খতনা করাতে গিয়ে শিশু আয়ানের মৃত্যু নিয়ে আলোচনার মধ্যেই একইভাবে আরো এক শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে খতনা করাতে গিয়ে ওই শিশুর মৃত্যু হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।
আহনাফ তাহমিন আয়হাম নামের ১০ বছর বয়সী ছেলেটি মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত। তার বাবা ব্যবসায়ী ফখরুল আলম, খিলগাঁওয়ে তাদের বাসা।
সন্তানের মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ এনে হাতিরঝিল থানায় মামলা করেছেন ফখরুল। পরে ওই হাসপাতাল বন্ধ করে দিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
হাতিরঝিল থানার ওসি আওলাদ হোসেন মামুন বলেন, চৌধুরীপাড়ার ‘জে এস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারে’ মঙ্গলবার রাতে শিশুটিকে খতনা করাতে নিয়ে যায় তার পরিবার। খতনা করানোর পর জ্ঞান ফিরে এলেও আহনাফ বমি করতে করতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
এ ঘটনায় এসএম মুক্তাদির ওরফে মুক্তার ও মাহবুব নামে দুই চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদের কথা জানিয়ে ওসি বলেন, “জে এস ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি পুলিশ বন্ধ করে দিয়েছে।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার এইচ এম আজিমুল হক বলেন, যিনি খাতনা করেছেন, সেই চিকিৎসককে পাওয়া যায়নি। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে অভিযান চালিয়েছে।
এ ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানতে পারেনি ।
এর আগে গত ৩১ ডিসেম্বর রাজধানীর সাঁতারকুলের ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খতনার জন্য অজ্ঞান করা হয়েছিল শিশু আয়ান আহমেদকে। খতনা করানোর পর ১১ ঘণ্টায়ও তার সংজ্ঞা না ফিরলে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে এনে লাইফসাপোর্টে রাখা হয়। সাত দিন সেখানে থাকার পর গত ৭ জানুয়ারি আয়ানকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
আয়ানের চাচার অভিযোগ ছিল, আংশিক অচেতন করে খতনা করানোর কথা থাকলেও চিকিৎসকরা আয়ানকে পুরোপুরি অজ্ঞান করা করেছিল।
ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেওয়া মৃত্যুসনদে আয়ানের মৃত্যুর কারণ হিসেবে কার্ডিও-রেসপিরেটরি ফেইলিওর, মাল্টিঅর্গান ফেইলিওর এবং কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের কথা লেখা হয়।
শিশু আয়ানের এমন মৃত্যুর ঘটনায় কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিট করে ৯ জানুয়ারি রিট করেন এক আইনজীবী। জনস্বার্থে করা সেই রিটে শিশু আয়ান আহমেদের চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকদের সনদ বাতিল এবং ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়।
এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :