ঢাকা: ঈদুল ফিতরের আর পাঁচ-ছয়দিন হাতে থাকলেও এখনো ভিড় জমেনি আতর-টুপির দোকান; বিক্রেতাদের আশা রোজার শেষ শুক্রবার থেকেই বাড়তে পারে বিক্রি।
অথচ প্রতি বছর রোজার অর্ধেকেই জমে ওঠে বায়তুল মোকাররম এলাকার আতর টুপির দোকান, ব্যস্ত সময় পার করেন দোকানিরা, কিন্তু এবার উল্টো চিত্রই দেখা যাচ্ছে।
মঙ্গলবার বায়তুল মোকাররম এলাকার দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, ক্রেতা থাকলেও তা হাতে গোনা। কেউ কিনছেন, কেউ দরদাম করেই চলে যাচ্ছেন।
বিক্রেতারা বলছেন, আতর টুপির বাজার সাধারণত সারা বছরই চলে, তবে ঈদ আসলে বিক্রির পরিমাণ অনেকটা বাড়ে। গতবার রোজার অর্ধেক থেকেই জমে উঠেছিল বাজার। কিন্তু এবার রোজার তৃতীয় সপ্তাহ শেষেও ঈদের ক্রেতা পাচ্ছেন না তারা।
বায়তুল মোকাররম এলাকার টুপির দোকান হোসানিয়া লাইব্রেরিতে বিক্রি হচ্ছে পাকিস্তানি, তুর্কি, চায়না, দেশি ও ভারতীয় টুপি। ৫০ থেকে ৭৫০ টাকা দামের টুপি রয়েছে এই দোকানে।
বায়তুল মোকাররম এলাকার খুশবু আতর হাউজে বিক্রি হচ্ছে বাংলাদেশি, ভারতীয়, অ্যারাবিয়ান ও ফ্রান্সের আতর৷ প্যাকেট করা আতরগুলো ২০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। এর বাইরে কিছু আতর প্রতি মিলি ১০ থেকে ৮০ টাকাও বিক্রি করছেন দোকান মালিক বাইজিদ হোসেন।
টুপি আতরের বাজার জমে না ওঠার পেছনে দাম বাড়ার কথা জানালেন বাইজিদ। তিনি বলেন, এবার আতর ও টুপির দাম ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। ফলে দোকানদারদের বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
“দাম বাড়ার কারণে ক্রেতারা যাচাই-বাছাই করতে দোকানে দোকানে ঘুরছেন। যার ফলে বিক্রিও কম হচ্ছে। গত বছর যে টুপি ৮০ টাকায় বিক্রি করছি, এবার ১০০ চাইলে তারা অবাক হয়ে চলে যায়। বিক্রি কম হচ্ছে, সময়ও নষ্ট হচ্ছে আমাদের। আর কম টাকায় বিক্রি করলেও তো আমরা চলতে পারব না।”
বছরের অন্য সময়ের তুলনায় ঈদের সময় আতর বেশি বিক্রি হলেও এবার দাম বাড়ার কারণে বিক্রি কম হচ্ছে বলে জানান তিনি।
“ঈদে সবাই সুগন্ধি দেয়, তাই এসময়টায় মানুষ কিনে থাকে। মানুষের হাতে ‘টাকা-পয়সা নাই’, তাই এখনো ক্রেতা আসছে না। রমজানের শেষের দিকে বের হবে হয়ত৷” বাইজিদের ভাষ্য, “আতর যদিও বিক্রি হচ্ছে, জায়নামাজ বা তসবির দিকে তো কেউ নজরই দিচ্ছে না।”
বায়তুল মোকাররম এলাকার মাসুম স্টোরে বিক্রি হচ্ছে দেশি ও পাকিস্তানি টুপি। সেখানে পাকিস্তানি টুপির পরিমাণ বেশি থাকলেও দেশি টুপিই বেশি বিক্রির কথা জানালেন মালিক মো. মাসুম। তিনি বলেন, “বেচাবিক্রি এবার অনেক কম হচ্ছে; অর্ধেক ক্রেতাই নাই৷ কম কেন তা বলতে পারছি না।”
মাসুমের দোকানে এবার ১০০ থেকে ৫ হাজার টাকার টুপিও রয়েছে। বায়তুল মোকাররম এলাকা ছাড়াও রাজধানীর বসুন্ধরা শপিং মলেও বিক্রি হচ্ছে আতর-টুপি। রোজার তৃতীয় সপ্তাহ গেলেও সেখানে ‘বেচাকেনা জমে ওঠেনি’ বলে জানাচ্ছেন বিক্রেতারা।
আল-খালিজে ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা দামেরও টুপি বিক্রি হচ্ছে। ২ হাজার টাকায় যে টুপি বিক্রি হচ্ছে, সেগুলো পাকিস্তানি টুপি। মোটা কাপড়ের এই টুপিতে রয়েছে হাতের কারুকাজ।
এছাড়া আল-খালিজে অ্যারাবিয়ান, দুবাই, ভারতীয়, সৌদি আরবেরসহ ২০০ ধরনের আতর বিক্রি হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে পারফিউম আতরের চাহিদা বেশি বলে জানালেন আল-খালিজের মালিক এইচ এম মহিউদ্দিন।
এআর
আপনার মতামত লিখুন :