২২ লাখ টাকা ঘুষে এয়ারগান হয়ে যায় খেলনা পিস্তল

ওসিকে এসআই পদে পদাবনতির সিদ্ধান্ত

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুন ২৭, ২০২৪, ১২:৫৩ পিএম
ওসিকে এসআই পদে পদাবনতির সিদ্ধান্ত

ঢাকা: অস্ত্রসহ আটকের পর মোটা অঙ্কের ঘুষ নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বাড্ডা থানার সাবেক ওসি (ইন্সপেক্টর) আবদুল কাইউমের পদাবনতির সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া একই ঘটনায় এসআই মেহেদী হাসান এবং কনস্টেবল নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে ডিএমপি। আবদুল কাইউমের পদাবনতির সিদ্ধান্তের বিষয়টি গতকাল আমাদের সময়কে নিশ্চিত করেছেন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান।

জানা গেছে, এলাকায় আধিপত্য নিয়ে বাড্ডার পাখির গলির বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম সুমীতের সঙ্গে একই এলাকার খায়রুল ইসলামের বিরোধ ছিল। গত বছর ২০ আগস্ট বালু চুরির অভিযোগ এনে খায়রুলের এক স্টাফকে রাস্তায় পিস্তল ঠেকিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেয় সুমিত। পরে অস্ত্র ঠেকানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় খায়রুলের লোকজন। এরপর ২২ আগস্ট রাতে ওসি কাইউমের নির্দেশে বাসা থেকে সুমিতকে আটক করে বাড্ডা থানায় নিয়ে আসেন এসআই মেহেদী, কনস্টেবল নজরুলসহ একটি টিম। থানার তিনতলায় অস্ত্রাগারের পাশের একটি কক্ষে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে রাত দেড়টার দিকে অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে সুমিতকে বাসায় পৌঁছে দেন এসআই মেহেদী ও কনস্টেবল নজরুল।

বিষয়টি জানাজানি হলে পরদিন সকালে সুমীতকে সরাসরি গুলশানে ডিসির কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ‘খেলনা পিস্তল’ দেখিয়ে সাজানো জিডি করে ছেড়ে দেওয়ার আয়োজন সম্পন্ন করে পুলিশ। সুমীতকে আটক, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বাসায় পৌঁছে দেওয়া এবং জিডির অধীনে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়গুলো গুলশান বিভাগের বাড্ডা থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী পুলিশ কমিশনার ও অতিরিক্ত উপকমিশনারের কাছে পুরোপুরি চেপে যান আবদুল কাইউম।

জানা গেছে, এয়ারগানকে খেলনা পিস্তল দেখিয়ে মামলা না করেই জিডির ভিত্তিতে অভিযুক্তকে ছেড়ে দেওয়ার ঘটনায় মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন হয়। সুমীতের ব্যাংক হিসাব ও যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী এক আত্মীয়ের কাছ থেকে এ টাকা নেওয়া হয়। পরে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আসল ঘটনা জানার পর ওসি কাইউমকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশে বদলি করেন। একই সঙ্গে ঘটনা তদন্তে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের এডিসি (ডিসি হিসেবে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) হাফিজ আল ফারুকের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি করেন। ওই কমিটি ওসি কাইউম এবং এসআই মেহেদী হাসানের র‌্যাংক ব্যাজ কর্তনসহ তিন সদস্যের শাস্তির সুপারিশ করে।

ওই রিপোর্টের আলোকেই অন্যান্য প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শেষে ৩ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এদের মধ্যে ইন্সপেক্টর কাইউম প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হওয়ায় ঢাকা মহানগর পুলিশ তাদের গৃহীত সিদ্ধান্তের বিষয়টি পাবলিক সার্ভিস কমিশনে জানিয়েছে। সেখান থেকে মতামত এলেই ইন্সপেক্টর কাইউমের পদাবনতির সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। ইন্সপেক্টর থেকে তিনি এসআই হয়ে যাবেন। অন্যদিকে এসআই মেহেদী হাসান হয়ে যাবেন এএসআই।

এমএস

Link copied!