মহানবী (সা.) ও চার খলিফার আংটিতে কী লেখা ছিল

  • নিউজ ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ১৩, ২০২৪, ০৩:৪৪ পিএম
মহানবী (সা.) ও চার খলিফার আংটিতে কী লেখা ছিল

ঢাকা: আগের যুগের মতো বর্তমানেও আংটি সভ্যতার প্রতীক হিসেবে গণ্য। সুলাইমান (আ.) ও দানিয়াল (আ.)-এর আংটির কথা ইতিহাসে পাওয়া যায়।

প্রাচীন যুগ থেকেই রাজা-বাদশাহ ও সম্মানিত ব্যক্তিরা আংটি পরতেন। আংটিতে বিশেষ চিহ্ন সংবলিত মোহর থাকত, যা দ্বারা দলিল-দস্তাবেজে সিল মারা হতো।

আংটির মোহর অঙ্কন পাথর ইত্যাদির খোদাইয়ে করা হতো। তাতে নাম, গুরুত্বপূর্ণ চিহ্ন ও বাণী ইত্যাদি লেখা থাকত। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও চার খলিফার আংটিতে কী লেখা ছিল তার বর্ণনা নিম্নে উল্লেখ করা হলো—

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আংটির বিবরণ

নবীজি (সা.) যখন রাজা-বাদশাহদের ইসলামের দাওয়াতি চিঠি পাঠানোর ইচ্ছা করলেন তখন তিনি রুপার একটি আংটি বানালেন, যার মধ্যে ‘মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ বাক্যটি অঙ্কিত ছিল। (বুখারি, হাদিস : ৬৫)

অন্য বর্ণনায় আরো স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে নবীজি (সা.)-এর আংটিতে তিন লাইনে বাক্যটি অঙ্কিত ছিল।সর্বনিম্নে ‘মুহাম্মাদ’, মাঝে ‘রাসুল’ এবং ওপরে ‘আল্লাহ’ শব্দটি। (বুখারি, হাদিস : ৩১০৬)

যেহেতু রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আংটিতে আল্লাহর নাম লিখিত ছিল, তাই ইস্তিঞ্জায় যাওয়ার সময় ওই নামের সম্মানার্থে তিনি আংটিটি খুলে রাখতেন। (তিরমিজি : হাদিস ১৭৪৬)

আংটিটি মৃত্যু পর্যন্ত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাতে ছিল। তাঁর ইন্তেকালের পরে আবু বকর (রা.)-এর হাতে, এরপর ওমর (রা.)-এর হাতে, এরপর উসমান (রা.)-এর হাতে ছিল।
দুর্ভাগ্যক্রমে তা উসমান (রা.)-এর হাত থেকে ‘আরিস’ নামক কূপে পড়ে গেলে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও আর পাওয়া যায়নি। (বুখারি, হাদিস : ৫৮৭৩)

ঐতিহাসিকদের অনেকে মনে করেন, আংটিটি হারিয়ে যাওয়ার পর থেকেই ওসমানের (রা.) খেলাফতে অস্থিরতা দেখা দেয়। বিভিন্ন অঞ্চলে তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও বিদ্রোহ দানা বাঁধে। দীর্ঘসময় ধরে অশান্তি ও অস্থিরতা চলতে থাকে এবং একপর্যায়ে তিনি শহীদ হন।

রাসুলের (সা.) আংটি যে কূপে পড়ে গিয়েছিল, সেটি মদিনার দক্ষিণ-পশ্চিমে কুবা মসজিদ থেকে ২০০ মিটার দূরে অবস্থিত। ১২ মিটার গভীর কূপটির নাম আরিস হয়েছিল এক ইহুদি ব্যক্তির নাম অনুসারে। রাসুলের আংটি পড়ে যাওয়ার কারণে এ কূপের পানিকে কেউ কেউ বিশেষ বরকতময় মনে করেন।

চার খলিফার আংটিতে যা লেখা ছিল

খলিফা আবু বকর (রা.)-এর আংটিতে লেখা ছিল :

‘নি’মাল ক্বা-দিরু আল্লাহ’, অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা সর্বোত্তম ক্ষমতাবান। (তারিখে ইবনে কাসির ৭/২৩)

আমিরুল মুমিনিন ওমর (রা.)-এর আংটির লিপি :

‘কাফা বিল মাউতি ওয়াইযান ইয়া উমার’, অর্থাৎ হে ওমর! নসিহতের জন্য মৃত্যুই যথেষ্ট। (ইবনে কাসির ৭/১৫১)

আমিরুল মুমিনিন উসমান (রা.)-এর আংটির লিপি :

‘আ-মানতু বিল্লাহি মুখলিসান’, অর্থাৎ আমি একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ওপর ঈমান আনলাম। (সিরাতে হালবিয়্যা ১/৩৯০)

অন্য একটি বর্ণনায় এসেছে, তাঁর আংটিতে লেখা ছিল :

‘আ-মানতু বিল্লাহিল্লাযি খালাক্বা ফাসাউয়া’ অর্থাৎ আমি আল্লাহর ওপর ঈমান আনলাম, যিনি সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর সুগঠিত করেছেন।

অন্য একটি বর্ণনায় এসেছে : ‘আ-মানতু বিল্লাহিল আযিম’, অর্থাৎ আমি আল্লাহর ওপর ঈমান আনলাম, যিনি মহান। (ইবনে কাসির ৭/২৩৯)

আমিরুল মুমিনিন আলী (রা.)-এর আংটির লিপি :

‘আল-মুল্কু লিল্লাহ’, অর্থাৎ রাজত্ব একমাত্র আল্লাহর। (সিরাতে হালবিয়্যা ১/৩৯০)

আইএ

Link copied!