ঢাকা : পবিত্র রমজান মাসের সিয়াম সাধনা করা ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম একটি স্তম্ভ। শর্তসাপেক্ষে প্রাপ্তবয়স্ক সকল নারী পুরুষের ওপর রমজান মাসে রোজা রাখা ফরজ। তবে রমজানে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সবার মধ্যেই দেখা দেয়। এর কারণ হলো দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকার পর ইফতারে অপুষ্টিকর খাবার কিংবা অতিরিক্ত খাওয়া।
অতিরিক্ত খাবার, ভাজা-পোড়া খাওয়া কিংবা দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকলে পাকস্থলীতে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যায়। এর ফলে সহজেই গ্যাস্টিক ও বদহজমের সমস্যায় ভুগতে হয়। এক্ষেত্রে পেটে ব্যথা, বুক জ্বালা-পোড়া, দম বন্ধ হয়ে আসা, ঢেঁকুর ওঠা, বমি বমি ভাব, পেট ফেঁপে থাকা ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে।
এই রোজায় গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নিম্নলিখিত উপায়গুলো প্রয়োগ করে দেখতে পারেন।
# ইফতারিতে অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার কিংবা তেলে ডুবিয়ে যেসব খাবার তৈরি করা হয়- পেয়াজু, আলুর চপ, বেগুনি, চিকেন ফ্রাই, জিলাপি ইত্যাদি যতটুকু সম্ভব পরিহার করতে হবে।
# একসাথে অনেক বেশি খাবার খেয়ে ফেলা যাবে না। অনেকে ইফতারিতে বসেই খেতে খেতে ইসোফেগাস তথা গলবিল পর্যন্ত খেয়ে ফেলে তা কখনোই করা যাবে না।
# ইফতারিতে ইসুপগুলের শরবত, ডাবের পানি, ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে আর শর্করা জাতীয় খাবার- খেজুর, পেয়ারা, ছোলা, সেমাই ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে।
# ইফতারি হতে হবে লাইট মিল কিংবা অল্প পরিমাণ খাবার। তারপর মাগরিবের নামাজ পড়ে রাতের খাবার খেয়ে নেয়া ভাল। সম্ভব হলে তারাবীর নামাজের আগেই খেয়ে নিতে হবে। তাহলে খাবারের পরে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে নামাজ পড়তে গেলে নামাজের সময় এক প্রকার ব্যায়াম হয়ে যাবে এবং সেটা খাবার পরিপাকের ক্ষেত্রে সহায়ক সেই সাথে এসিডিটি হবার ঝুঁকি কমে যাবে।
# অবশ্যই রোজার মাসে এসিডিটি থেকে বাঁচার জন্য রাতের খাবার কিংবা সেহরি উভয়ক্ষেত্রে শোয়ার ১ ঘন্টা আগে খাবার শেষ করতে হবে এবং খেয়ে অবশ্যই কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে তারপর ঘুমাতে হবে।অন্যথায় এসিডের ব্যাক ফ্লো হয়ে GERD এর মত রোগ হতে পারে।
# টক জাতীয় ফলে যদিও প্রচুর পরিমান ভিটামিন সি থাকে তথাপি টক জাতীয় ফলে সাইট্রিক এসিডও থাকে। তাই রোজার সময় টক ফল সাবধানতার সাথে খেতে হবে। ভাল হয় রাতের খাবার শেষ করে খেলে।
# টমেটো ইফতারির সময় অনেকের প্রিয় খাবার তবে টমেটোতে প্রচুর পরিমান সাইট্রিক এসিড ও ম্যালিক এসিড থাকে এবং এটা পাকস্থলীতে ইরিটেশন করে তাই টমেটো বেশি পরিমাণ না খাওয়াই উত্তম।
# ঝাল খাবার পাকস্থলীতে এসিডিটির পরিমান বাড়িয়ে দেয় তাই কাচা মরিচ কিংবা অতিরিক্ত ঝাল খাবার পরিহার করে চলতে হবে।
# গরম খাবার- চা, কফি ইত্যাদি পাকস্থলিতে হাইড্রোক্লোরিক এসিড ক্ষরণের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় তাই রোজার সময় চা, কফি ইত্যাদি পরিহার করে চলা উচিত।
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :