ঢাকা: হজরত ইউসুফ আলাইহিস সালাম ছিলেন বনী ইসরাঈলের নবী হজরত ইয়াকুব আলাইহিস সালামের সন্তান। তিনি নিজেও পরবর্তীতে নবী হয়েছে। ইয়াকুব আলাইহিস সালামের তিনজন স্ত্রী ছিলেন। প্রথম স্ত্রী ইন্তেকালের পর তিনি সেই স্ত্রীর বোনকে বিয়ে করেছিলেন সন্তানদের লালন-পালনে যেন কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য।
প্রথম স্ত্রী থেকে তাঁর ১০ জন সন্তান ছিলো। দ্বিতীয় স্ত্রী থেকে আরও দুইজন সন্তান জন্মগ্রহণ করে। তাদের একজন ছিলেন ইউসুফ আ.।
দুই সন্তানের জন্মের পর ইয়াকুব আ.-এর দ্বিতীয় স্ত্রী অর্থাৎ, ইউসুফ আ.- এর মা ইন্তেকাল করেন। তখন ইয়াকুব আ. তাঁর স্ত্রীর আরেক বোনকে বিয়ে করেন। যেন তিনি আপন বোনের সন্তানদের সঠিকভাবে লালন-পালন করেন। এবং সৎভাইদের মাঝে কোনো বিদ্বেষ না থাকে।
শৈশবে ইউসুফ আ.-এর মায়ের ইন্তেকালের কারণে ইয়াকুব আ. তাঁকে অন্যান্য সন্তানদের মাঝে কিছুটা বেশি স্নেহ করতেন। তবে ইউসুফ আ.-এর অন্য ভাইয়েরা বিষয়টিকে ভালো চোখে দেখতো না। ছোট্ট ইউসুফের প্রতি বাবার বাড়তি ভালোবাসা তাদের মনে ঈর্ষার জন্ম দিয়েছিল।
ছোট্ট ইউসুফ একদিন রাতে একটি স্বপ্ন দেখলেন যে, তাঁকে ১১ টি তারকা, একটি চাঁদ ও একটি সূর্য সিজদা করছে। তিনি এই স্বপ্নের তাৎপর্য বুঝতে পারলেন না। এই স্বপ্নের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা মূলত তাঁকে ভবিষ্যতে নবী বানানোর একটি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।
ছোট্ট ইউসুফ আ. তাঁর বাবাকে গিয়ে স্বপ্নের কথা বললেন। আল্লাহর নবী ইয়াকুব আ. স্বপ্নের মর্মার্থ বুঝতে পারলেন। তাই তিনি ইউসুফকে বললেন স্বপ্নের বিষয়টি কাউকে বলবে না। কারণ, ইয়াকুব আ. বুঝতে পারতেন যে, ভাইয়েরা ইউসুফকে ঈর্ষা করে, তারা এই স্বপ্নের কথা জানতে পারলে তার ক্ষতি করার চেষ্টা করবে।
পুরো বিষয়টি পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে এভাবে—
১২:৪ اِذۡ قَالَ یُوۡسُفُ لِاَبِیۡهِ یٰۤاَبَتِ اِنِّیۡ رَاَیۡتُ اَحَدَعَشَرَ كَوۡكَبًا وَّ الشَّمۡسَ وَ الۡقَمَرَ رَاَیۡتُهُمۡ لِیۡ سٰجِدِیۡنَ ﴿۴﴾قَالَ یٰبُنَیَّ لَا تَقۡصُصۡ رُءۡیَاكَ عَلٰۤی اِخۡوَتِكَ فَیَكِیۡدُوۡا لَكَ كَیۡدًا ؕ اِنَّ الشَّیۡطٰنَ لِلۡاِنۡسَانِ عَدُوٌّ مُّبِیۡنٌ ﴿۵﴾
স্মরণ কর, ইউসুফ যখন তার পিতাকে বলেছিল, ‘হে আব্বাজান! আমি (স্বপ্নে) দেখেছি এগারটি তারকা আর সূর্য ও চন্দ্র; দেখলাম তারা আমাকে সিজদা করছে।’ তার পিতা বললেন, ‘হে আমার পুত্র! তোমার স্বপ্নের কথা তোমার ভাইদের কাছে বর্ণনা করো না। যদি কর তাহলে তারা তোমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করবে। শয়তান তো মানুষের প্রকাশ্য দুশমন। (সূরা ইউসুফ, আয়াত : ৪-৫)
এম
আপনার মতামত লিখুন :