ফরিদপুর: কৃষি প্রধান জেলা ফরিদপুরেই উৎপাদিত হচ্ছে ভালো মানের কৃষি যন্ত্রপাতি, যা ব্যবহারে উপকৃত হচ্ছেন জেলার কৃষকরা। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত এসব যন্ত্রপাতির মূল্য অপেক্ষাকৃত কম হওয়ায় তা থাকছে ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে। উৎপাদকদের দাবী, সরকারের সহযোগীতা পেলে তাদের এ উদ্যোগ ভূমিকা রাখবে আমদানী নির্ভরতা কমাতে।
এদিকে, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত এসব যন্ত্রপাতি মানসম্পন্ন জানিয়ে জেলার কৃষি বিভাগ বলছে, এসব যন্ত্রপাতি উৎপাদনকারীদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে তাদের উৎপাদিত যন্ত্রপাতি কৃষক পর্যায়ে শতভাগ পৌঁছে দেওয়া গেলে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে জেলার কৃষিতে।
নিউ শাপলা ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ ও আর.কে মেটালসহ অন্তত ১০ প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত হচ্ছে কৃষিতে ব্যবহারযোগ্য নানা ধরনের যন্ত্রপাতি। ব্লোয়ার মেশিন, পাট ছাড়ানোর যন্ত্র, ভুট্রা, গম, ধান মাড়াই-ঝাড়াই যন্ত্রসহ অন্তত ৩০ ধরনের যন্ত্রপাতি স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হওয়ায় তা সহজেই সংগ্রহ করতে পারছেন কৃষকরা।
ফারিদপুর জেলায় প্রতি বছর পাঁচ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদিত হলেও, সংরক্ষণের সু-ব্যবস্থার অভাবে বাধ্য হয়ে মৌসুমেই বিক্রি করে ফেলতে হয় কৃষকদের। কেউ সনাতনী পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করলেও ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ক্ষতিতে পড়েন তারা।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, কয়েক বছর ধরে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা ব্লোয়ার মেশিন ব্যবহার করে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করায় লাভবান হচ্ছেন তারা। তাদের দাবী, স্থানীয় উৎপাদকদের নিকট থেকে মেশিন ক্রয় করতে পারায় যে কোনো প্রয়োজনে বিক্রয়োত্তর সেবা পাওয়া যায় সহজেই। আর ফরিদপুরে উৎপাদিত মেশিনের খবর ছড়িয়ে পড়ায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসেন ক্রেতারাও।
উৎপাদকদের সাথে কথা বললে তারা জানান, এক সময় প্রায় সব ধরনের কৃষি যন্ত্রপাতি বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে হতো, ফলে দামও ছিলো বেশী। কিন্তু স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করায়, এসব যন্ত্রপাতির মূল্য অর্ধেকে নেমে এসেছে। তবে তারা জানান, যন্ত্রপাতি উৎপাদনের সাথে সম্পৃক্ত শ্রমিক প্রশিক্ষণের কোনো ধরনের সরকারী প্রতিষ্ঠান না থাকায় দক্ষ শ্রমিক পাওয়া কষ্টসাধ্য। তাদের দাবী, সরকারের সার্বিক সহযোগীতা পাওয়া গেলে এ ব্যবসাটি সম্প্রসারণের মাধ্যমে আমদানী নির্ভরতা অনেকাংশেই কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ফরিদপুরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ মো. শাহাদুজ্জামান জানান, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত কৃষি যন্ত্রপাতি মানসম্পন্ন। কৃষিতে ব্যবহারযোগ্য যন্ত্রপাতি স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হওয়ায় উপকৃত হচ্ছেন জেলার কৃষকরা। এতে একদিকে যেমন কমছে উৎপাদন ব্যয় এবং বাড়ছে উৎপাদনও। এসব যন্ত্রপাতি কৃষক পর্যায়ে জনপ্রিয় করতে কাজ করছে কৃষি বিভাগ।
আইএ
আপনার মতামত লিখুন :