ঢাকা : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য স্থাপন নিয়ে ক্রমশ উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মামুনুল হকের সংবাদ সম্মেলনের পর কিছুটা ব্যাকফুটে হেফাজত ইসলাম ও ইসলামী দলগুলো। তাদের কয়েকদিনের সমাবেশের বক্তব্যের জের ধরে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসহযোগী সংগঠনগুলো এখন সক্রিয়। লাগাতার তারা বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করে আসছে।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে আবারো উত্তাপ ছড়ানোর আশঙ্কায় সতর্ক রয়েছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।
এদিকে আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, হেফাজতকে সামনে দিয়ে পেছনে কারা কলকাঠি নাড়ছেন তা তারা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ বন্ধ করতে ও সরকার পতনের ইস্যু বানাতে এ দুটি ইসলামী দল সামনে থাকলেও পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে দীর্ঘদিন ধরে কোণঠাসা হয়ে যাওয়া সরকারবিরোধী জামায়াতে ইসলামী।
মূলত ভাস্কর্য নির্মাণ ঠেকানোর আড়ালে জামায়াতে ইসলামীসহ সরকারবিরোধী ধর্মভিত্তিক বেশ কয়েকটি দল দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন সরকারি দলের নেতারা। এ নিয়ে নাশকতা সৃষ্টির শঙ্কার কথাও সাম্প্রতিক একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
এ অবস্থায় হেফাজতে ইসলামের আমির জুনাইদ বাবুনগরী ভাস্কর্যবিরোধী অবস্থান ব্যক্ত করলেও বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ঠেকানোর মতো কোনো শক্তি নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।
একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক অঙ্গনে দীর্ঘদিন ধরে কোণঠাসা জামায়াত। এ অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে দলের আমির ও সেক্রেটারি জেনারেল পদে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয়েছে। কিন্তু তারা নতুন নীতি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি। তাদের আন্দোলনের ক্ষেত্র তৈরিতে এটি জুতসই ইস্যু হতে পারে।
তাই বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের প্রতিবাদে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন বা ধর্মভিত্তিক কোনো দল আন্দোলনের ডাক দিলে বা বড় ধরনের কর্মসূচি হাতে নিলে তা কাজে লাগাবে জামায়াত।
এছাড়া হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নতুন সভাপতি আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী এবং মহাসচিব নূর হোসাইন কাসেমী নিজেদের অরাজনৈতিক ও নিরপেক্ষ দাবি করলেও প্রকৃতপক্ষে তারা সরকারবিরোধী মনোভাবাপন্ন। এরই মধ্যে তারা ধোলাইরপাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
জানা যায়, হেফাজতে ইসলাম সরকারের বিরুদ্ধে ঢাকা অবরোধের ডাক দিয়ে শাপলা চত্বরে অবস্থান নিয়েছিল। তারপর হেফাজত ইসলামের আমীরের সভাপতিত্বেই বিশাল সমাবেশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ দেওয়া হয়। এতে অংশ নিয়েছে হাজার হাজার মাদরাসা শিক্ষক ও শিক্ষার্থী। এ অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনাকে ‘কওমি জননী’ উপাধি দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি আহমদ শফীর লিখিত বক্তৃতা হেফাজতে ইসলামের একজন নেতা অনুষ্ঠানে পড়ে শোনান। সেখানে দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্স সমমান দিয়ে আইন কার্যকর করায় প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে অকাতরে প্রশংসা করেন আহমদ শফী। তারপর ধারাবাহিকভাবে সরকার থেকে বিভিন্ন দাবি আদায় করে নিয়েছে ইসলামি দলগুলো।
তবে তিন বছর আগে ২০১৭ সালে ঢাকায় সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে গ্রিক দেবীর আদলে একটি ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছিল। সেই সময় হেফাজতে ইসলাম একটি বিবৃতিও দিয়েছিলেন ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে।
হেফাজতে ইসলামসহ ইসলামপন্থি কয়েকটি সংগঠনের বিরোধিতার মুখে সেই ভাস্কর্য সেখান থেকে সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছিল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
প্রায় দুই মাস ধরে ঢাকার ধোলাইপাড় চত্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ভাস্কর্য তৈরি করার পরিকল্পনার বিরোধিতা করে আসছিল বেশকিছু ইসলামপন্থি দল। অক্টোবরের শুরু থেকেই ভাস্কর্য তৈরির প্রতিবাদে বেশ কয়েকটি দল ঢাকার কয়েকটি জায়গায় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করেছে।
গত ১৩ নভেম্বর রাজধানীর ধূপখোলা মাঠে এক সমাবেশে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম (শায়েখে চরমোনাই) বলেন, ধোলাইরপাড় চত্বরে ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপনের পরিবর্তে আল্লাহর ৯৯ নাম খচিত স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করতে হবে।
যেখানে ডানে মসজিদ, বামে মসজিদ, সেখানে মূর্তি স্থাপন মেনে নেওয়া হবে না। প্রথম দফায় এক নম্বর সতর্ক সংকেত দিলাম। দাবি না মানলে ১০ নম্বর বিপদ সংকেত দেওয়া হবে।
একই দাবিতে ১২ অক্টোবর বাংলাদেশ ইমাম ও মুসল্লি পরিষদের ব্যানারে ধোলাইরপাড় উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই সমাবেশে ধোলাইরপাড় ও আশপাশের এলাকার ২৩টি মসজিদ-মাদরাসা থেকে বিপুলসংখ্যক মুসল্লি অংশ নেন।
এসব মসজিদ-মাদরাসার বেশিরভাগেরই জমি, গ্যাস, পানি নিয়ে কোনো না কোনো ত্রুটি আছে। এসব ত্রুটি উদ্ঘাটিত হওয়ায় ঐক্য পরিষদ ১২ অক্টোবরের পর থেকে প্রকাশ্যে কোনো কর্মসূচি পালন করেনি। তবে পরিষদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।
সেখানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের পরিবর্তে আল্লাহর ৯৯ নাম সংবলিত মিনার তৈরি করে এর নাম ‘বঙ্গবন্ধু মিনার’ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
এ সংগঠনটি হেফাজতে ইসলাম, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম এবং ইসলামী শাসনতন্ত্র অন্দোলনসহ সমমনা দলগুলোকে নিয়ে কর্মসূচি পালনের পরিকল্পনা করছে।
বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে একটি ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী যে অনাহূত বিতর্কের সৃষ্টি করছে তার ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
ধর্মকে রাজনৈতিক ইস্যুতে ব্যবহার না করার আহ্বান জানিয়ে গত শনিবার তিনি বলেন, মূর্তি আর ভাস্কর্য এক নয়। ‘ভাস্কর্য নিয়ে মনগড়া ব্যাখ্যা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও দেশের সংস্কৃতির প্রতি চ্যালেঞ্জ। দেশের মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, সংবিধান এবং রাষ্ট্রবিরোধী যে কোনো বক্তব্য বরদাশত করা হবে না। ধর্মীয় ইস্যুকে সামনে এনে ধর্মীয় সহনশীলতা বিনষ্টের যে কোনো অপচেষ্টা সরকার কঠোরহস্তে দমন করবে।
অন্যদিকে কোনো ভাস্কর্য তৈরি হলে তা টেনে-হিঁচড়ে ফেলে দেওয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী।
তিনি বলেন, আমি কোনো রাজনৈতিক দলের নাম নেব না। যারা ভাস্কর্য তৈরি করবে, টেনে-হিঁচড়ে ফেলে দেওয়া হবে। আমার বাবার নামেও যদি কেউ ভাস্কর্য তৈরি করে, টেনে-হিঁচড়ে ফেলে দেব।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের হাটহাজারী পার্বতী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত এক মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ হুমকি দেন জুনায়েদ বাবুনগরী।
সর্বশেষ গত শুক্রবার রাতে হাটহাজারী সরকারি পার্বতী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে চট্টলার ইসলামিক সংগঠন ‘আল আমিন সংস্থা’ আয়োজিত তিন দিনব্যাপী তাফসিরুল কোরআন মাহফিলের প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা হাফেজ জুনায়েদ বাবুনগরী (হাফি.)।
তিনি বলেছেন, মদিনা সনদে দেশ চললে এদেশে কোনো ভাস্কর্য থাকবে না। মদিনায় কোনো ভাস্কর্য নেই। এদেশেও কোনো ভাস্কর্য থাকতে পারে না। আমি কোনো নেতার বা দলের নাম বলব না। আমি শরিয়তের কথা বলব। শরিয়তে কোনো ভার্স্কযের অনুমতি নাই। আমাদের নবীর কোনো ভাস্কর্য কোথাও নাই। আমরা নবীর চাইতে তো বেশি কাউকে ভালোবাসি না। তাহলে অন্য কারো ভাস্কর্য থাকবে কেন?
যে দলের নেতা বা ব্যক্তির ভাস্কর্য বসাক না কেন, এমনকী আমার বাবার ভাস্কর্য বসালেও সেটা টেনে-হিঁচড়ে ফেলে দেব।
বাবুনগরী বলেন, এদেশে ইসলামের কথা বলার কারণে, সত্য কথা বলার কারণে অনেককেই গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করা হচ্ছে। রাসুল (সা.)-এর আমলেও ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার কারণে এরকম গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করত মক্কার কাফেররা। যতই গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করা হোক আমরা সত্য কথা বলা বন্ধ করব না। ইসলামের কথা বলা বন্ধ করব না।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমরা আপনাকে ভালোবাসি। আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ভালোবাসি। আমরা আপনার দুশমন নই। আমাদের দুশমন মনে করবেন না। আপনার পেছনে যে নাস্তিক মুরতাদ ঘাপটি মেরে বসে আছে তারাই আপনার দুশমন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কোনো আলেম ওলামারা মারেন নাই, মেরেছে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে থাকা লোকজন। আমি আশঙ্কা করতেছি আপনার পেছনে থাকা নাস্তিক মুরতাদেরা আপনার ক্ষতি করবে।
হেফাজতের আমির বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে একমত। আমাদের দেশ চলবে মদিনা সনদ অনুযায়ী। আমরাও চাই এ দেশ মদিনার সনদ অনুযায়ী চলুক।
এদেশ রাশিয়ার সনদে চলবে না, চীনের সনদে চলবে না, ভারতের সনদে চলবে না, আমেরিকার সনদে চলবে না। মদিনার সনদ অনুযায়ী চলবে। মদিনার সনদ শান্তির সনদ। এই সনদে দেশ চলার কথা কেবল ঘোষণার মাধ্যমে নয় বাস্তবায়নও করতে হবে।
এদিকে গত শনিবার সকালে সংসদ ভবনের সরকারি বাসভবনে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ভাস্কর্যকে যারা মূর্তি বলে অপপ্রচারে নেমেছে, তারা নিজেরাই ভ্রান্তিতে আছে।
দেশের আলেমসমাজ এবং বিশেষজ্ঞরা ইতোমধ্যেই বারবার বলেছেন, মূর্তি আর ভাস্কর্য এক নয়। ইসলাম আমাদের ধর্ম। এ ধর্মের বিধিবিধানে ধর্মীয় ইস্যুতে বাড়াবাড়ির সুযোগ নেই। নিরুৎসাহিত করা হয়েছে ধর্মীয় বিষয়ে বিতর্ক করতে, নিষেধ করা হয়েছে ফেতনা-ফ্যাসাদ সৃিষ্টতে।
তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের স্থপতির ভাস্কর্য টেনে-হিঁচড়ে নামাবেন বলে কোনো কোনো ধর্মীয় নেতা ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য রাখছেন। তাদের এমন রুচি এবং ভাষা ব্যবহার দেখে তাদের ধর্মচর্চা ও ইসলামী রুচিবোধ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।
প্রকৃত ইসলাম চর্চার আহ্বান জানিয়ে কাদের বলেন, ‘ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করা থেকে সবাই বিরত থাকি। ধর্মকে রাজনৈতিক ইস্যুতে ব্যবহার না করি।’
অন্যদিকে ধোলাইপাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ বন্ধে ইসলামী দলগুলোর অপচেষ্টা সম্পর্কে গোয়েন্দা প্রতিবেদনের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, সারা দেশে ইসলামী শাসনতন্ত্র অন্দোলনের (চরমোনাই) সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড ও কর্মী-সমর্থক রয়েছে। সক্রিয় ইসলামী দলগুলোর মধ্যে তাদের অবস্থানই শক্তিশালী।
এ সংগঠনটি নিজেদেরকে আরো শক্তিশালী প্রমাণের চেষ্টায় ধোলাইরপাড়ে ভাস্কর্য নির্মাণসংক্রান্ত ধর্মীয় স্পর্শকাতর বিষয়টিকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের শক্তিমত্তা প্রদর্শনের চেষ্টা চালাতে পারে। এতে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে।
প্রতিবেদনের মতামত অংশে বলা হয়েছে, জামায়াত কর্মসূচি পালনে কৌশলি ও ধূর্ত প্রকৃতির। ধর্মভিত্তিক কোনো কর্মসূচিতে কর্মী-সমর্থকদের ঢুকিয়ে অনভিপ্রেত কোনো ঘটনা বা সরকারবিরোধী অন্দোলনের ইস্যু তৈরি করতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
‘বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের নামে মূর্তি তৈরি করা হচ্ছে’-এ গুজব বা অপপ্রচার চালিয়ে সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ক্ষেপিয়ে তোলার সুযোগ যেন না পায় সে ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে হবে।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য প্রতিষ্ঠিত হবেই। এটি ঠেকানোর কোনো শক্তির ক্ষমতা নেই।
আলেম-উলামা মাশায়েখের নাম দিয়ে কিছু লোক মাঠ উত্তপ্ত করছে, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরোধিতা করছে। ইসলামে উগ্রবাদের স্থান নেই। তাদের কথার সঙ্গে ইসলামের কোনো মিল নেই।
তিনি সতর্ক করে বলেন, যারা আবার শাপলা চত্বরের হুমকি দেয়, তাদের লজ্জা থাকা উচিত। লেজ গুটিয়ে পালিয়েছিল তারা, কোনো হুমকিতে কাজে আসবে না। সরকারের শক্তি সম্পর্কে তাদের ধারণা থাকা উচিত বলেও জানান তিনি।
পুলিশ সদর ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখছেন তারা। কেউ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করলে তারা কঠোর পদক্ষেপ নেবেন।
এদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য বুড়িগঙ্গায় নিক্ষেপের হুমকিদাতা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির সৈয়দ ফয়জুল করীম ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মামুনুল হককে গ্রেপ্তারের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। গত শনিবার শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে চারদিকের রাস্তা আটকে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে সংগঠনটি।
এছাড়াও আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগসহ অন্যান্য সহযোগী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রতিদিন কর্মসূচি পালন করে আসছে।
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :