সঠিক ধারণা নেই কৃষি সংশ্লিষ্টদের

বরেন্দ্র অঞ্চলে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে বিষাক্ত পার্থেনিয়াম উদ্ভিদ

  • জনাব আলী, রাজশাহী ব্যুরো | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুন ৫, ২০২৪, ০২:৫৯ পিএম
বরেন্দ্র অঞ্চলে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে বিষাক্ত পার্থেনিয়াম উদ্ভিদ

রাজশাহী: রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে বিষাক্ত পার্থেনিয়াম উদ্ভিদ। সঠিক ধারণা নেই কৃষি সংশ্লিষ্টদের। এর বীজ এতোটাই হালকা যে, বাতাসের সঙ্গে উড়ে এক স্থান থেকে সহজেই দূরবর্তী স্থানে পৌঁছে যেতে পারে। মাটির নিচে ওই বীজের আয়ু প্রায় এক যুগ। অর্থাৎ ১২ বছর ধরে মাটির নিচে সুপ্ত থেকে গাছ উৎপাদনের ক্ষমতাও রয়েছে। কড়া রোদ-খরা তার জন্য উপযোগী পরিবেশ। ফসলের পুষ্টি কেড়ে খাওয়ার আগ্রাসী ক্ষমতাও অন্য আগাছার তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। আগ্রাসী বিষাক্ত পার্থেনিয়াম অভিনব গুণে গুণান্বিত এ গাছ মানুষ, পশু-পাখিসহ প্রকৃতির জন্য বিপর্যয়ের কারণ! যা এখন বরেন্দ্রভূমির ‘আতঙ্ক’। কিন্তু সাধারণ মানুষ এখনো এ বিষয়ে জানেনই না। সঠিক ধারণা নেই কৃষি ও প্রাণিদপ্তরের কর্তাদের! একারণে দমনে নেই কার্যকরি উদ্যোগও। এতে বাতাসের গতিতেই এ অঞ্চলের জনস্বাস্থ্য, প্রাণিস্বাস্থ্য, মাটি স্বাস্থ্য ও প্রকৃতিকে হুমকির মুখে ফেলছে বিষাক্ত পার্থেনিয়াম।

গবেষক, কৃষিবিদসহ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে দুই দশক আগেও বিষাক্ত আগাছা পার্থেনিয়ামের অস্তিত্ব ছিল না। কিন্তু প্রতিবেশি দেশ ভারত থেকে একটু একটু করে দেশের উত্তরাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে। যা এখন আগ্রাসী রূপ নিয়েছে। এখন সীমান্তঘেঁষা অন্তত ৩৫টি জেলার ২৫ ধরনের ফসলের খেতে বিস্তার ঘটেছে এ আগাছার। বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলছেন, বিষাক্ত এ আগাছা ত্রি-মাত্রিক ক্ষতি করছে। জনস্বাস্থ্য, প্রাণিস্বাস্থ্য ও কৃষি হুমকির মুখে।

কৃষিতে প্রভাব:
বরেন্দ্র এলাকার কৃষিতে এ আগাছার মারাত্মক প্রভাব দেয়া যাচ্ছে। গবেষকদের মতে, বেগুন, টমেটো, মরিচসহ বিভিন্ন ফসলের পরাগায়ণ কমিয়ে দিচ্ছে পার্থেনিয়াম। ধান, ছোলা, সরিষা, গমসহ বিভিন্ন ফসলের অঙ্কুরোদ্গম ও বৃদ্ধিতে বাঁধা দিচ্ছে। যা খাদ্যনিরাপত্তার জন্য হুমকি। এছাড়া একসময় বরেন্দ্রের রাস্তার দু’পাশে ও পরিত্যক্ত জায়গায় বিভিন্ন উপকারী উদ্ভিদ ও ওষুধি উদ্ভিদ দেখা যেতো। যা আগ্রাসী পার্থেনিয়ামের ছোবলে বিলুপ্তির পথে।

জনস্বাস্থ্যে প্রভাব:
বিশেষজ্ঞদের মতে, আগাছাটির সম্পূর্ণ অংশই ক্ষতিকর। বিশেষ করে ফুলের রেনুতে অবস্থিত ‘সেস্কুটার্পিন ল্যাকটোন’ জাতীয় বিষাক্ত পদার্থ রয়েছে। এরমধ্যে থাকা বিষাক্ত রাসায়নিকগুলো হলো, ক্যাফেইক অ্যাসিড, পি-অ্যানিসিক অ্যাসিড। ক্ষতস্থানে রক্তের সঙ্গে মিশে চর্মরোগ হতে পারে। ফুলের রেনু বা বীজ নাকে প্রবেশ করলে হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট ও জ্বর হয়। যাদের অ্যালার্জি আছে, তাদের চামড়ায় এই রস লাগালে, সেখানে ক্যান্সারও হতে পারে। গরু এই আগাছা খেলে তার অন্ত্রে ঘা দেখা দেয়, দুধ উৎপাদন কমে যাওয়াসহ ক্যান্সারের জীবাণুও যুক্ত হয়। এছাড়া পার্থেনিয়ামের সংস্পর্শে আসা পশুর বিভিন্ন রোগ হতে পারে। যা এক পর্যায়ে মানুষের মধ্যে ছড়াতে পারে।

যাশোর মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন সহযোগী অধ্যাপক ও বর্তমানে রামেবি’র উপ-কলেজ পরিদর্শক পেশা ও পরিবেশ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. জোহা মোহাম্মদ মেহেরওয়ার হোসেন সোনালীনিউজকে বলেন, পার্থেনিয়াম নিয়ে আমি ২০১১ সাল থেকে কাজ করছি। গবেষণায় আমি ২০১৪ সালে এবং ২০১৫ সালে  রাজশাহী শহর ও আশেপাশের এলাকায় পার্থেনিয়ামের প্রভাব নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছিলাম। সেখানে দুইটি বিষয়ের তুলনা করি। একটি হলো যে এলাকায় পার্থেনিয়ামের বিস্তার আছে, সেখানকার মানুষের সঙ্গে কথা বলি। তাদের রোগের স্টোরিটা নেই। এবং যে এলাকায় পার্থেনিয়াম নেই। সেখানকার মানুষের রোগের স্টোরিটা নেই। তুলনায় দেখা গেছে, যেখানে পার্থেনিয়াম নেই, সেখানে এলার্জি ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগীর সংখ্যাগত চিত্রটা ডাব্লিউএইচও কর্তৃক যে স্বাভাবিক মাত্রা আছে তেমনি।

কিন্তু যেখানে পার্থেনিয়াম ছিলো, এমন এলাকায় এই সংখ্যাটা অস্বাভাবিকের চেয়ে কয়েকগুন বেশি ছিলো। শুধু এটাই নয়; পার্থেনিয়ামের সংস্পর্শে আসা এলার্জি ও শ্বাসকষ্ট দ্রুত সারতেও চায় না। তাদের অ্যাডভান্স লেভেলের চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে। পার্থেনিয়ামের বহুমাত্রিক ক্ষতি আছে। এটা নিয়ে সমন্বিতভাবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে কাজ করতে হবে। অন্যথায় আগামী দিনে মারাত্মক আকার ধারণ করবে এই পার্থেনিয়ামের ক্ষতিকর দিক- মন্তব্য করেন এই বিশেষজ্ঞ।

এ গবেষক বলেন, পার্থেনিয়ামের তথ্য অনুসন্ধানে ২০০৮ সালে বাংলাদেশে আসেন অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক স্টিভ অ্যাডকিনস। তার সঙ্গে ছিলেন দেশের একদল কৃষি বিজ্ঞানী। তারা ওই সময় যশোর অঞ্চলে আগাছাটির উপস্থিতি শনাক্ত করেন। দেশে পার্থেনিয়াম আগাছার আক্রমণের তথ্য অনুসন্ধানে ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত দেশের ৩৫ টি জেলায় জরিপ-চালিয়েছেন কৃষি-বিজ্ঞানী ড. মো. ইলিয়াছ হোসেনসহ তার দল। সেখানে আমিও পরোক্ষভাবে যুক্ত ছিলাম। তাতে দেখা গেছে, বিষাক্ত আগাছাটি ভারতের সীমান্তবর্তী বৃহত্তর যশোর,  রাজশাহী ও ময়মনসিংহ অঞ্চলেই বেশি। কত ধরনের ফসলের ক্ষতি করছে এবং এটি দেশের খাদ্যনিরাপত্তার জন্য হুমকি কি না, সেটিই খতিয়ে দেখেছেন বিজ্ঞানীরা। পরে ২০১৯ সালের দিকে ভারতীয় একটি কৃষিবিজ্ঞান সাময়িকীতে এ গবেষণাপত্র প্রকাশ হয়। তাতে উল্লেখ করা হয়, ফসল উৎপাদন হ্রাস করে দেয়ায় পার্থেনিয়াম এখন দেশের সবচেয়ে উদ্বেগজনক আগাছা। এছাড়া বেশকিছু জার্নালে পার্থেনিয়াম নিয়ে আমার গবেষণাসহ প্রবন্ধও আছে।

এই গবেষক দলের সঙ্গে পরোক্ষভাবে কাজ করেছেন এবং এখনো মাঠ পর্যায়ে এটি নিয়ে কাজ করছেন নওগাঁর শাহ কৃষি লাইব্রেরি জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম শাহ। তিনি বলেন, আমি বেশকিছু জেলায় ঘুরেছি, সেখানকার কৃষকদের সঙ্গে আলাপ হয়েছে। বরেন্দ্রের মাটি পার্থেনিয়ামের জন্য খুবই উপযোগী হওয়ায় এটার বিস্তারও খুব দ্রুত। তবে এখানকার চাষীরা সক্রিয়। এ কারণে খেতে আগাছা পরিষ্কারের বিষয়ে চাষীরা সতর্ক। তবে পার্থেনিয়াম কতটা ক্ষতিকর এ সম্পর্কে তাদের তেমন ধারণা নেই।

পার্থেনিয়াম কতটা বিষাক্ত:
পার্থেনিয়াম ডেজি পরিবারের মধ্যে সূর্যমুখী উপজাতিদের উত্তর আমেরিকান গুল্ম প্রজাতির একটি বংশধর। এর আরও কয়েকটি নাম হলো কংগ্রেস ঘাস, গাজর ঘাস, চেতক চাঁদনী, হোয়াইট টপ ও স্টার উইড। উদ্ভিদ জগতে কম্পোসিটি পরিবারভুক্ত এর প্রজাতির সংখ্যা ১৬ টি। আমাদের দেশে যে পার্থেনিয়াম দেখা যায় তার বৈজ্ঞানিক নাম ‘Parthenium hysterophorus’ । দুর্ভাগ্যজনকভাবে ১৬ টি প্রজাতির মধ্যে এটিই সব থেকে বিষাক্ত উদ্ভিদ।

যেভাবে দেশে আসলো পার্থেনিয়াম:
দেশে দেড়- দুই দশক আগেও বিষাক্ত আগাছা পার্থেনিয়ামের অস্তিত্ব ছিল না। এর আদি নিবাস উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং উত্তর-পূর্ব মেক্সিকো। কিন্তু ভারতবর্ষে এই আগাছা আসার ইতিহাস রয়েছে। মার্কিন কংগ্রেসে গৃহীত একটি আইনের নাম পিএল-৪৮০ এর মাধ্যমে বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে খাদ্যশস্য সাহায্যের জন্যই এই আইনের অধীনে ভারতবর্ষে পাঠানো হতো গম। ১৯৪৫ সালের দিকে আমদানিকৃত গমের মধ্যেই ভারতে প্রবেশ করে পার্থেনিয়াম। স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে আমদানি বাণিজ্যে পোর্ট দিয়েই এই পার্থেনিয়ামের বিস্তার বলে জানা যায়।

বরেন্দ্রের স্থানীয় গবেষকরা বলছেন, ভারতের পাথর ও পণ্যবাহী ট্রাক, সীমান্ত দিয়ে আসা গরুর পায়ে করে, ভারতীয় বীজ ও প্রকৃতিক দূর্যোগ বন্যার মাধ্যমেই এ অঞ্চলে পার্থেনিয়ামের বিস্তার লাভ করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা সোনালীনিউজকে বলেন, সোনামসজিদ পোর্ট দিয়ে প্রতিদিন অন্তত ৩০০ ভারতীয় পাথরসহ পণ্যবাহী ট্রাক দেশে প্রবেশ করে। বাংলাদেশের কোনো ট্রাক সে দেশে প্রবেশ করার পরপরই ট্রাকের চাকাসহ পুরো গাড়ি ওয়াশ করা হয়। কিন্তু ভারতের গাড়ি বাংলাদেশে প্রবেশের পর গাড়ির চাকা ওয়াশ করা হয় না। একারণে সেখানকার ক্ষতিকর বিষাক্ত এ আগাছা ও ক্ষতিকর পোকাও আমাদের দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু এটাই নয়; এই ওয়াশ না করার কারণে আরও অনেক ক্ষতিকর বস্তু আমাদের দেশে ক্ষতিকর প্রভাব ডেকে আনছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের ইনচার্জ মোসা. সিফাত আরা বলেন, আমাদের বন্দরে ওয়াশ করার এমন কোনো সুযোগ নেই। আমাদের স্থলবন্দর এক লেনের। আমদানি পণ্য আসলে রপ্তানি পণ্যের ট্রাক বন্ধ করতে হয়। এভাবে পর্যায়ক্রমে দিনে প্রায় ৪০০ ট্রাক আসে। ওয়াশ করতে গেলে বন্দরের কার্যক্রমই স্থবির হয়ে পড়বে।

এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্ল্যান্ট কোয়ারেন্টাইন স্টেশনের ডেপুটি ডাইরেক্টর সামির চন্দ্র ঘোষ বলেন, আমরা আমদানি পণ্যে ক্ষতিকর পোকার উপস্থিতিটা দেখি। কিন্তু ওয়াশিং সিস্টেম এখানে নেই। আর পার্থেনিয়াম এটা ট্রাকের চাকায়ও আসতে পারে। তবে পাথরের সঙ্গে আসে বলেই জানি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইং’র অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (রুলস, পলিসি ও পরীক্ষাগার) জিয়াউল ইসলাম বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্যিক ব্যপ্তি সর্ম্পকে সবারই জানা। আমরা পোকা-মাকড় নিয়ে কাজ করি। তবে পার্থেনিয়ামের মতো আগাছাগুলোও ক্ষতিকর। কিন্তু এটা নিয়ে আমরা কাজ করি না। তবে এটা নিয়ে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে কৃষি কর্মকর্তা যারা আছেন, তাদেরকে কৃষক পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে তৎপর হতে হবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের কৃষিতত্ত্ব বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. সরকার সাইফুন কাকন বলেন, পার্থেনিয়াম আমাদের কৃষির জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু এটাকে সর্ম্পূণভাবে নির্মূল করা যাবে না। নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এবিষয়ে কিছু কাজ হয়েছে। কিন্তু দেশে কোনো গবেষণা হয় নি। তবে এর ক্ষতিকর দিকগুলো আমরা জানি। সে অনুযায়ী আমাদের ট্রেনিং প্রোগ্রামগুলোতে প্রশিক্ষার্থীদের বিষয়টি নিয়ে তৎপর করা হয়।

নির্মুল কিভাবে:
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি নির্মুল করা সম্ভব নয়। এটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এক্ষেত্রে কার্যকরি হলো গাছটিকে পুড়িয়ে ফেলা। তবে এটা ব্যয়বহুল ও সময় সাধ্য। এছাড়া আগাছা নাশক মেট্রিবুজিন প্রয়োগ করলে এই গাছ শুকিয়ে যায়। তবে এই আগাছা দমন করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করা একান্তই জরুরি। সমস্তকিছু করতে হবে হাতে রাবারের গ্লাভস বা পলিথিন প্যাকেট জড়িয়ে ও মুখে পাতলা মাক্স পরে। অন্যথায় স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হবে।

কৃষকরা যা বলছেন:
বেশকিছু কৃষকের সঙ্গে কথা হয় পার্থেনিয়াম নিয়ে। তাদের কেউ কেউ এটি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা থাকলেও অধিকাংশ কৃষকই এটা অন্য আগাছার মতো করেই দেখছেন। ঘাসের সঙ্গে এই বিষাক্ত পার্থেনিয়ামই পশুকে খাওয়াচ্ছেন অনেকে। কিন্তু জানেন না ক্ষতিকর দিক।
পবা উপজেলার বালিয়ার বাসিন্দা তৃতীয় লিঙ্গের আয়না। তাকে ১০-১২ টি ভেড়া নিয়ে দেখা যায় মাঠ ভর্তি পার্থেনিয়ামের খেতে। তিনি বলেন, এই আগাছা ক্ষতিকর কেন হবে? প্রতিদিনই তো আমার ভেড়া এটা খাচ্ছে। এখন তো ঘাস নেই। এই আগাছাই খাচ্ছে ভেড়া।

এ সময় ওই আগাছার জঙ্গলের আড়ালে বসেই প্রসাব করতে দেখা যায় স্থানীয় এক যুবককে। এ আগাছা ক্ষতিকর জানেন কি না? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ক্ষতিকর এটা তো জানি না।

কতটা সর্তক কৃষি ও প্রাণিদপ্তর:
এ বিষয়ে  রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) শারমিন সুলতানার অফিসে কথা বলতে গেলে তিনি জানান, আমি অসুস্থ। এ বিষয়ে কথা বলতে পারবো না। অন্য কারও সঙ্গে কথা বলেন।

রাজশাহী আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক ড. মোতালেব হোসেন বলেন, এ বিষয়ে আমার খুব বেশি জ্ঞান নেই। আমি এতোটুকু জানি, এটা ক্ষতিকর ও দ্রুতগতিতে বিস্তার ঘটছে। কিন্তু কিভাবে কী করতে হবে এবিষয়ে বিশেষায়িত জ্ঞান নেই। অন্য আগাছার মতোই ব্যবস্থা নেয়া হয়।

এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. জুলফিকার মো. আখতার হোসেন বলেন, পার্থেনিয়াম ক্ষতিকর এটা ফেসবুকের মাধ্যমে জেনেছি। কিন্তু এটা নিয়ে ওই রকম গবেষণা আছে বলে জানি না। প্রাণিস্বাস্থ্যের ক্ষতি করে এমন তথ্যও নেই। পার্থেনিয়াম নিয়ে খুব ভালো জ্ঞানও নেই।

এমএস

Link copied!