বিশ্বকাপ ফাইনাল নিয়ে যা কিছু জানা থাকা প্রয়োজন

  • ক্রীড়া ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২৪, ০৯:৩৮ এএম
বিশ্বকাপ ফাইনাল নিয়ে যা কিছু জানা থাকা প্রয়োজন

ঢাকা : নতুন চ্যাম্পিয়ন পাবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নাকি ফিরে আসবে প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়নরা? আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরই এই প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবে ক্রিকেটবিশ্ব। প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপার সুবাস নিয়ে মাঠে নামবে দক্ষিণ আফ্রিকা, ১৭ বছরের খরা ঘোচানোর স্বপ্নে লড়াইয়ে সামবে ভারত। বারবাডোজের এই মহারণ ঘিরে যা কিছু প্রশ্ন কিংবা কৌতূহল জাগতে পারে আপনার, সেসবের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে এখানে।

ফাইনালের মঞ্চে প্রথমবার

ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি মিলিয়েই প্রথমবার বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তাই বলার অপেক্ষা রাখে না, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে প্রথমবার।

সেমি-ফাইনালে এই দুই দলের লড়াই হয়েছিল একবারই। ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেই ম্যাচে মিরপুরে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৬ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল ভারত।

সেরা দুই দলই কি ফাইনালে

কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালে ওঠা দুই দলকে সেরা দুটি দল বলতেই হয়। এবার ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষেত্রে তা আরও বেশি সত্যি। দুই দলই গ্রুপের সেরা হয়েছে, সুপার এইটের সেরা হয়েছে এবং অপরাজিত থেকে ফাইনালে উঠেছে। টানা আট জয়ে শিরোপার মঞ্চে এসেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ভারতের জয় একটি কম, কারণ কানাডার সঙ্গে তাদের ম্যাচটি ভেস্তে গিয়েছিল বৃষ্টিতে।

ফাইনালে যে দলই জিতবে, ইতিহাস গড়া হবেই। এই প্রথম অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন দেখবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।

দক্ষিণ আফ্রিকার ঐতিহাসিক মুহূর্ত

দক্ষিণ আফ্রিকার সুদীর্ঘ ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ম্যাচ সম্ভবত এটিই। প্রথমবার তারা বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলবে। ১৯৯৮ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়া ছাড়া আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আর কোনো আইসিসি আসরের ফাইনালে তারা উঠতে পারেনি।

ওয়ানডে বিশ্বকাপে তারা পাঁচবার সেমি-ফাইনালে খেলেছে (১৯৯২, ১৯৯৯, ২০০৭, ২০১৫, ২০২৩), টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এবারের আগে খেলেছে দুই দফায় (২০০৯, ২০১৪)। কিন্তু প্রথমবার শিরোপার এতটা কাছে তারা যেতে পেরেছে এবার।

ভারত যে কারণে মরিয়া

প্রথমবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পর এই শিরোপা বারবারই হাতছানি দিয়ে মিলিয়ে গেছে ভারতের সামনে থেকে। দেশের মাঠ ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ের পর দুই সংস্করণের কোনো বিশ্বকাপ শিরোপার স্বাদ আর পায়নি তারা। এমনকি ইংল্যান্ডে ২০১৩ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের পর সিনিয়র ক্রিকেটে আর কোনো আইসিসি ট্রফিই তারা জিততে পারেনি।

অথচ বৈশ্বিক আসরগুলোয় বরাবরই দারুণ ধারাবাহিক তারা। ট্রফি খরার এই ১১ বছরে ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলেছে তারা, এই সংস্করণের সেমি-ফাইনালে খেলেছে ২০১৬ ও ২০২২ আসরেও। ২০১৫ ও ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনাল পর্যন্ত গিয়েছে তারা। গত বছর দেশের মাঠে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে হৃদয়ভাঙা হারের যন্ত্রণা তাদের সইতে হয়েছে। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দুই আসরে দুবারই ফাইনালে উঠে তারা হেরে গেছে, ২০২১ সালে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে, গত বছর অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে।

তাদের জন্য এবার আরেকটি সুযোগ, দীর্ঘ এই ট্রফি খরা ঘুচিয়ে যন্ত্রণা উপশম করার।

ক্যারিবিয়ায় আগের ফাইনাল

ওয়েস্ট ইন্ডিজে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিশ্বকাপের ফাইনাল। আগেরবার ২০১০ আসরের ফাইনালও হয়েছিল বারবাডোজের কেনসিংটন ওভালে। অস্ট্রেলিয়াকে ৭ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবার বৈশ্বিক শিরোপার স্বাদ পেয়েছিল ইংল্যান্ড।

মাঠ, পিচ আর কন্ডিশন

এবারের আসরে এই মাঠে এটি হবে নবম ম্যাচ। প্রথম ম্যাচে নামিবিয়া ও ওমানের লড়াই গড়িয়েছিল সুপার ওভারে, পরের ম্যাচটি ভেসে যায় বৃষ্টিতে। বাকি ছয় ম্যাচের কোনোটিতে সেভাবে লড়াই জমেনি।

প্রথম চারটি পূর্ণ ম্যাচের তিনটিতেই আগে ব্যাট করা দল জিতে যায়। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে স্কটল্যান্ড ১০ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৯০ করার পর ম্যাচ ভেসে যায় বৃষ্টিতে। সবশেষ দুই ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রকে অল্প রানে আটকে সহজেই জিতে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ড।

এবারের আসরে এখানে খেলার সুযোগ পায়নি দক্ষিণ আফ্রিকা। ভারত একটি ম্যাচ খেলেছে সুপার এইটে। আফগানিস্তানকে তারা ৪৭ রানে হারায় সেই ম্যাচে।

ক্যারিবিয়ার অনেক মাঠে বাতাস বড় ভূমিকা রাখে। তবে এখানে বাতাসের প্রভাব ততটা তীব্র থাকবে না।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস

ভারত-ইংল্যান্ডের সেমি-ফাইনালে বৃষ্টি হানা দিয়েছিল দুই দফায়। ফাইনালেও কিছুটা শঙ্কা আছে বৃষ্টির। স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হবে ফাইনাল। এ দিন ভোর চারটা থেকে সকাল ৯টার মধ্যে ৫০ শতাংশ শঙ্কা আছে বৃষ্টির। টসের সময়টায় (১০টা) সেই শঙ্কার হার ৩০ শতাংশ। দুপুর একটা নাগাদ আবার তা বেড়ে হয়ে যাচ্ছে ৫০ শতাংশ।

এ দিনই ম্যাচ শেষ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে। এজন্য বাড়তি ১৯০ মিনিট সময় বরাদ্দ করা আছে। যদিও টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জয়-পরাজয় নির্ধারণ করতে ৫ ওভার করে খেলা হতে হয়। তবে আইসিসি টুর্নামেন্টের সেমি-ফাইনাল ও ফাইনালের ক্ষেত্রে খেলা হতে হয় অন্তত ১০ ওভার করে।

রিজার্ভ ডে

ফাইনালের জন্য রিভার্জ ডে আছে। শনিবার ১০ ওভার করে খেলা শেষ করা না গেলে ম্যাচ গড়াবে পরের দিনে। টস বা ম্যাচ নতুন করে হবে না। যেখানে খেলা থেমেছিল, নতুন দিনে শুরু হবে সেখান থেকেই।

প্রথম দিনের মতো পরের দিনও খেলা শুরুর সময় সকাল সাড়ে ১০টা।

দুই দিনেও যদি খেলা শেষ না হয়
 
রিজার্ভ ডে মিলিয়েও যদি খেলা শেষ করা সম্ভব না হয়, তাহলে দুই দলকেই যৌথভাবে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হবে।

এমটিআই

Link copied!