ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ

স্লোভাকিয়ার হৃদয় ভেঙে শেষ আটে ইংল্যান্ড

  • ক্রীড়া ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ১, ২০২৪, ১২:০৭ পিএম
স্লোভাকিয়ার হৃদয় ভেঙে শেষ আটে ইংল্যান্ড

ঢাকা : গ্রুপ পর্বের বিবর্ণতা ঝেড়ে ফেলবে কী, উল্টো স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে প্রথমার্ধে দেখা মেলে দুর্বল ও ভঙ্গুর এক ইংল্যান্ড দলের। হজম করে তারা গোলও। বিরতির পর মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালালেও গোলের দেখা পাচ্ছিল না গ্যারেথ সাউথগেটের দল। শেষ মুহূর্তে দুর্দান্ত এক গোলে দলকে ম্যাচে ফেরালেন জুড বেলিংহ্যাম। অতিরিক্ত সময়ের শুরুতে জালের দেখা পেলেন হ্যারি কেইন। বিদায়ের চোখ রাঙানি এড়িয়ে, স্লোভাকিয়ার স্বপ্ন ভেঙে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠল গতবারের ফাইনালিস্টরা।

জার্মানির পশ্চিমের শহর গেলসেনকিরশেনে রোববার শেষ ষোলোর অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো ম্যাচে ২-১ গোলে জিতেছে ইংল্যান্ড।

প্রথমার্ধে ইভান শারাঞ্জ স্লোভাকিয়াকে এগিয়ে নেওয়ার পর ৯৫তম মিনিটে সমতা টানেন বেলিংহ্যাম। অতিরিক্ত সময়ে ব্যবধান গড়ে দেন কেইন।

প্রথম ম্যাচে র‍্যাঙ্কিংয়ে ৪৫ ধাপ এগিয়ে থাকা বেলজিয়ামকে ১-০ গোলে হারিয়ে চমক দেখায় স্লোভাকিয়া। এবার র‍্যাঙ্কিংয়ের পাঁচ নম্বর দল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের দুয়ারে গিয়েও অল্পের জন্য পারল না ৪৫ নম্বরের দলটি। প্রথমবারের মতো ইউরোর শেষ আটে ওঠার আশাও পূরণ হলো না তাদের।

প্রথম পাঁচ মিনিটে দুবার ইংল্যান্ডের রক্ষণে ভীতি ছড়ায় স্লোভাকিয়া। দাভিদ হেঙ্কোর একটি কোনাকুনি শট পোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে যায়।

গ্রুপ পর্বে মাত্র দুটি গোল করা ইংল্যান্ড প্রথম সুযোগ পায় নবম মিনিটে। বেলিংহ্যামের পাস বক্সে পেয়ে অনেক ওপর দিয়ে উড়িয়ে মারেন ডিফেন্ডার কিরান ট্রিপিয়ার।

দ্বাদশ মিনিটে আরেকটি দারুণ সুযোগ তৈরি করে স্লোভাকিয়া। মাঝমাঠ থেকে সতীর্থের থ্রু বল ধরে বক্সে ঢুকে পড়েন লুকাস হারাসলিন। তার শট স্লাইডে ঠেকান ডিফেন্ডার মার্ক গেয়ি।

২৫তম মিনিটে আর জাল অক্ষত রাখতে পারেনি ইংল্যান্ড। দারুণ এক আক্রমণ থেকে এগিয়ে যায় স্লোভাকিয়া। দুই সতীর্থ ঘুরে বক্সের বাইরে বল পান দাভিদ স্ত্রেলেক। তার পাস বক্সে পেয়ে সঙ্গে লেগে থাকা খেলোয়াড়ের চ্যালেঞ্জ এড়িয়ে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন শারাঞ্জ।

আসরে ৩০ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ডের গোল হলো ৩টি, জর্জিয়ার জর্জেস মিকাউতাদজে ও জার্মানির জামাল মুসিয়ালার সঙ্গে যৌথভাবে সর্বোচ্চ।

প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে স্লোভাকিয়ার ওপর চাপ বাড়ায় ইংল্যান্ড। দুটি কর্নারও পায় তারা, তবে তেমন কিছু করে দেখাতে পারেনি।

বিস্ময়করভাবে, প্রথমার্ধে ৭৭ শতাংশ সময় পজেশন রেখে গোলের জন্য ৬ শট নিয়ে একটিও লক্ষ্যে রাখতে পারেনি ইংল্যান্ড। স্লোভাকিয়ার ৪ শটের একটি ছিল লক্ষ্যে, সেটিই সফল।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে তুলনামূলক ভালো খেলে ইংল্যান্ড। ৪৯তম মিনিটে স্লোভাকিয়ার জালে বল পাঠান ফিল ফোডেন, কিন্তু ভিএআরে অফসাইডের কারণে গোল মেলেনি।

রক্ষণে মনোযোগ দেওয়া স্লোভাকিয়ার ওপর চাপ ধরে রাখলেও গোলরক্ষকের পরীক্ষা নিতে পারছিলেন না ফোডেন-কেইনরা।

৮১তম মিনিটে অল্পের জন্য গোল পায়নি সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। ২০ গজ দূর থেকে ডেকলান রাইসের শট পোস্টে লাগে। ফিরতি বল উড়িয়ে মারেন কেইন।

বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে, ছয় মিনিট যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে বেলিংহ্যামের ওই গোলে টিকে থাকে ইংল্যান্ড। কর্নারের পর গেয়ির হেড পাসে ওভারহেড কিকে বল জালে পাঠান আগের দিন ২২ বছরে পা দেওয়া রেয়াল মাদ্রিদ মিডফিল্ডার।

ম্যাচে এটিই ছিল লক্ষ্যে ইংল্যান্ডের প্রথম শট!

অতিরিক্ত সময়ের প্রথম মিনিটে আবার উল্লাসে মেতে ওঠে ইংল্যান্ডের সমর্থকরা। দলকে এগিয়ে নেন কেইন। বক্সে ইভান টনির হেড পাসে হেডেই বল জালে পাঠান ইংল্যান্ডের রেকর্ড স্কোরার।

১০৫তম মিনিটে একটি সুযোগ পায় স্লোভাকিয়া। তবে কাছ থেকে ঠিকমতো শট নিতে পারেননি পেতার পেকারিক।

এরপর বেলিংহ্যাম ও কেইনকে তুলে নিয়ে রক্ষণে শক্তি বাড়ান ইংল্যান্ড কোচ। বেশিরভাগ সময় খেলা হতে থাকে ইংল্যান্ডের অর্ধে, তবে স্লোভাকিয়া পারেনি ম্যাচে ফিরতে। শেষ বাঁশি বাজতেই হতাশায় মাঠে শুয়ে পড়েন তাদের অনেক ফুটবলার, ইংল্যান্ড শিবিরে তখন টিকে থাকার স্বস্তি।

সেমি-ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে সুইজারল্যান্ডের মুখোমুখি হবে গত আসরের রানার্সআপরা।

এমটিআই

Link copied!