ঢাকা: ওয়ানডে বিশ্বকাপে পাঁচবার শিরোপা জিতলেও ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম সংস্করণের কোনো শিরোপাই নেই অস্ট্রেলিয়ার। অন্যদিকে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে ব্ল্যাক ক্যাপসরা। সবমিলিয়ে আগামীকাল টি-টোয়েন্টির নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের দেখবে ক্রিকেট বিশ্ব।
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় শুরু হবে নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার ফাইনালের মহারণ। এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলতে নামবে অস্ট্রেলিয়া। ২০১০ সালে ফাইনালে উঠলেও, শিরোপার স্বাদ নিতে পারেনি অজিরা। ইংল্যান্ডের কাছে ৭ উইকেটে হারতে হয় অস্ট্রেলিয়াকে।
এরপর আর ফাইনালের টিকিট পায়নি অস্ট্রেলিয়া। সপ্তম আসরে এসে পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে অস্ট্রেলি। বিশ্বকাপের বড় ম্যাচে বরাবর ভালো খেলা অজিদের ভাবা হচ্ছে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়ন। নীরব ঘাতক নিউজিল্যান্ডকেও হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই। তারাও ফাইনালে উন্নীত হয়েছে এই সংস্করণের সাবেক চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হারিয়ে।
অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটাররা একদিক থেকে অনন্য। স্কিল ও পেশাদারিত্বে কোনো ঘাটতি নেই। চাপের মুহূর্তে ভেঙে পড়তে দেখা যায় না। ক্রিকেটের তিন সংস্করণেই নিউজিল্যান্ড বর্তমানে সেরা। ২০১৯ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছে তারা। ৫০ ওভারের ম্যাচ টাই হলে সুপার ওভারে গড়ায় ফাইনাল ম্যাচটি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সুপার ওভারেও টাই হয়।
বেশি বাউন্ডারি মারার সুবিধা পেয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় ইংল্যান্ড। কেন উইলিয়ামসনরা শিরোপা জিততে না পারার আক্ষেপ মেটান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল থেকে ইংলিশদের বিদায় করে। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ড জিততে পারে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা।
কিউইদের জন্য নেতিবাচক দিক হলো, এত বছরেও বিশ্বকাপ জেতার অভিজ্ঞতা নেই। বছরের পর বছর সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেওয়া অভ্যাসে পরিণত করেছিল তারা। ২০১৫ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে প্রথমবার ফাইনাল খেলে। অভিজ্ঞতার ঘাটতি থাকায় মেলবোর্নের সে ফাইনালে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেনি। চোকার নাম ঘোচার পর নিউজিল্যান্ড এখন সবচেয়ে ধারাবাহিক ফাইনাল খেলা দল। ওয়ানডে বিশ্বকাপে টানা দ্বিতীয়বার ফাইনাল খেলে শিরোপার দাবিদার হয়ে উঠেছে। যদিও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই প্রথম ফাইনাল খেলছে দলটি।
বিশ্বকাপ জয়ের অভিজ্ঞতা না থাকলেও অস্ট্রেলিয়ার মতো নিউজিল্যান্ড দলটিও অভিজ্ঞ ক্রিকেটারে সমৃদ্ধ। কেন উইলিয়ামসনের মতো একজন পারফরমার অধিনায়ক আছে কিউইদের। তবে ম্যাচটি ফাইনাল হওয়ায় এবং প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া থাকায় চ্যালেঞ্জটা অন্যরকম। তারা পাঁচবারের ওয়ানডে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন।
নিউজিল্যান্ডকে সমীহ করলেও ফাইনাল জিততে চান অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। তিনি বলেন, ‘এটি ফাইনাল ম্যাচ। আর প্রতিপক্ষ হিসেবে নিউজিল্যান্ড অনেক ক্যালকুলেটিভ দল। তারা অনেক পরিকল্পনা নিয়ে খেলতে নামবে। আমাদের সেভাবেই প্রস্তুত থাকতে হবে। যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করে ফাইনাল জিততে হবে এবং প্রথমবারের মত শিরোপার স্বাদ নিতে হবে।’
অন্যদিকে প্রথমবারের মত ফাইনালে উঠেই বাজিমাত করতে চায় নিউজিল্যান্ড। দলের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন বলেন, ‘ওয়ানডে বিশ্বকাপে শেষ দুই আসরের ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা আমাদের আছে। কিন্তু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই প্রথম ফাইনাল খেলছি আমরা।
শিরোপা জিতে এই প্রথমকে স্মরনীয় করতে চাই। অস্ট্রেলিয়ার মত দলের বিপক্ষে জিততে হলে, তিন বিভাগেই তাদের চেয়ে ভালো খেলতে হবে। ম্যাচের শুরু থেকেই অজিদের উপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে।’ এখন দেখার বিষয় বিশ্বকাপের শিরোপা জিতে কে হাসে শেষ হাসি?
সোনালীনিউজ/এআর
আপনার মতামত লিখুন :