সুজন

সিনিয়র আর রিজার্ভ হয়ে গেছি, এসব চিন্তা বাদ দিতে হবে লিটনকে

  • ক্রীড়া ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: এপ্রিল ৮, ২০২৪, ১০:৪১ এএম
সিনিয়র আর রিজার্ভ হয়ে গেছি, এসব চিন্তা বাদ দিতে হবে লিটনকে

ঢাকা: শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিলেটে ৩ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে লিটনের রান ছিল যথাক্রমে ০, ৩৬, ৭। এরপর ২ ওয়ানডেতেই আউট হয়েছেন কোনো রান না করে। তৃতীয় ওয়ানডেতে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ে আবাহনীর হয়ে প্রিমিয়ার লিগে খেলতে নেমেও চরম ব্যর্থ। 

শাইনপুকুরের বিপক্ষে বিকেএসপিতে এক ম্যাচ খেলে আউট হয়ে যান মাত্র ৫ রানে। এরপর সিলেট টেস্টে দুই ইনিংসে ২৫ আর ০ এবং সর্বশেষ চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের ব্যাটিং স্বর্গে করেছেন ৪ এবং ৩৮ রান। 

অর্থ্যাৎ জাতীয় দলের হয়ে শেষ ৯ ইনিংসে সাকুল্যে লিটনের রান ১১০। এর চেয়ে আর খারাপ আর কি হতে পারে?

এদিকে নিজের ব্যাটের এ করুণ অবস্থা সম্ভবত লিটন নিজেও ঠিকভাবে মানতে পারছেন না। তাই আবাহনীর হয়ে প্রিমিয়ার লিগ থেকেও কিছু দিনের জন্য বিশ্রাম চেয়ে নিয়েছেন লিটন দাস।

লিটনের এ অবস্থা কেন? কী কারণে তার ফর্ম এত খারাপ? দেশের অন্যতম ব্যাটিং প্রতিভার হঠাৎ কেন এই অবনমন? তার সমস্যা কোথায়- টেকনিক, টেম্পরামেন্টে নাকি মানসিক?

এসব প্রশ্নের খুব ভাল ব্যাখ্যা যিনি দিতে পারেন, সেই আবাহনীর কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনের কাছে এ প্রশ্ন রাখা হলে তিনি বোঝানোর চেষ্টা করেন, লিটন দাসের সমস্যাটা খানিক ব্যক্তিগত এবং তার নিজের মনের। তাইতো সুজনের মুখে এমন কথা, ‘লিটন ছোটবেলা থেকে যে রকম ছিল, একটু সিনিয়র প্লেয়ার হয়ে গেছে, একটু রিজার্ভ হয়ে গেছে। এগুলো থেকে বের হতে হবে আসলে। আমার মনে হয় যে তার এগুলো নিয়ে কাজ করা প্রয়োজন।’

লিটন অনেক বেশি অন্তর্মুখি। নিজেকে গুটিয়ে রাখেন। অনেকের সাথেই কথা-বার্তা কম বলেন। সেটা কি কোনো সমস্যা নাকি? খালেদ মাহমুদ সুজন জবাব দিতে গিয়ে বোঝান, লিটন সবার সাথে মেলা মেশা করেন কম। এমনকি ক্রিকেটকেও সময় দেন কম।

সুজন বলেন, ‘আচরণগত কথাটা আমি বলতে চাই না। আমি বলতে চাই সবার সাথে একটু মেলামেশা, ক্রিকেটকে আরেকটু সময় দেওয়া- এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি জানি, সবারই পেশাদার ও ব্যক্তিগত জীবন রয়েছে। লিটনেরও আছে। লিটন আগে বিবাহিত ছিল না, এখন বিবাহিত, পরিবার আছে। সবই আছে। কিন্তু ক্রিকেট তার পেশা। এখানে আরেকটু সময় ব্যয় করা, ক্রিকেটকে সময় দেওয়া প্রয়োজন।’

লিটনের টেকনিক নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই সুজনের। তবে তার চিন্তাধারা ও ট্যাকটিক্সে কোন পরিবর্তন আসতে পারে বলে অনুমান করেন সুজন। তাই মুখে এমন কথা, ‘ক্রিকেটটা মানসিকতার খেলা। লিটনের তো টেকনিক পরিবর্তন হয়নি, ট্যাকটিক্যালি হয়তো চিন্তাধারায় পরিবর্তন আসতে পারে।’

লিটনকে ব্রেক দেয়া সম্পর্কে সুজন বলেন, ‘লিটন একটা ব্রেক চেয়েছে। তার দিনে লিটন ওয়ান অব দ্য বেস্ট প্লেয়ার। আমি সব সময় লিটনের ব্যাটিং অনেক পছন্দ করি। ওর ব্যাটিং দেখা অন্য রকম ব্যাপার। মেন্টালি হয়তো ব্লক আছে। রান করেনি। যদি আমার ওই ফ্লেক্সিবিলিটি না থাকত তাহলে হয়তো আমি লিটনকে এই ব্রেকটা দিতাম না। ফ্লেক্সিবিলিটি আছে, আমাদের যে ব্যাটিং অর্ডার…আমি মনে করি একটা ব্রেক নিয়েই আসুক। তাকে সুপার লিগ থেকে পাব আশা করছি।’

তবে সুপার লিগে ফিরলেও একাদশে জায়গা পাওয়া সহজ হবে না লিটনের, সে আভাসও দিয়েছেন সুজন। তিনি বলেন, ‘আগে কাজটা সহজ ছিল। এখন আর সহজ নেই। আবাহনী এখন জাতীয় দল থেকেও ভালো! আমি কালকে শান্তকে হাসতে হাসতে বলছিলাম, তোর জাতীয় দল থেকে আমার আবাহনী এখন শক্তিশালী। সুতরাং যারা আবাহনীর জন্য প্রতিদিন অনুশীলন করছে, পারফর্ম করছে, তাদের ফেলে দেওয়া সহজ নয়।’

আবাহনী নিয়ে সুজন মনে করেন, তার দল এখন যথেষ্ট শক্তিশালী। তিনি বলেন, ‘আমাদের দলটা যথেষ্ট শক্তিশালী, যথেষ্ট না অনেক শক্তিশালী। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে এ রকম এত শক্তিশালী দল কবে ছিল আমার মনে পড়ে না।’

এআর

Link copied!