টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

বিশ ওভারের ম্যাচ ৩৪ বলে জিতে সুপার এইটে অস্ট্রেলিয়া

  • ক্রীড়া ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুন ১২, ২০২৪, ০৯:৫২ এএম
বিশ ওভারের ম্যাচ ৩৪ বলে জিতে সুপার এইটে অস্ট্রেলিয়া

ঢাকা : দুর্দান্ত বোলিংয়ে প্রথম ইনিংসেই ম্যাচের ভাগ‍্য প্রায় নির্ধারণ করে দিলেন অ্যাডাম জ্যাম্পা, মার্কাস স্টয়নিসরা। এরপর অল্প যা কাজ বাকি, সেটি চোখের পলকে করে ফেললেন টপ-অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান। নামিবিয়ার বিপক্ষে অনায়াস জয়ে পরের ধাপে নাম লেখাল অস্ট্রেলিয়া।

অ্যান্টিগার স্যার ভিভ রিচার্ড স্টেডিয়ামে বুধবার ৯ উইকেটে জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। নামিবিয়ার ৭২ রান মাত্র ৫.৪ ওভারেই পেরিয়ে যায় তারা। তখনও শেষ হয়নি পাওয়ার প্লে। ইনিংসে অক্ষত ৮৬টি বৈধ ডেলিভারি!

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এর চেয়ে বেশি বল বাকি থাকতে জয়ের নজির আছে আর একটি। ২০১৪ সালে নেদারল্যান্ডসকে ৩৯ রানে গুটিয়ে দিয়ে ৯০ বল বাকি রেখে ম্যাচ জিতে নিয়েছিল শ্রীলঙ্কা।

ওমান, ইংল্যান্ডের পর এবার নামিবিয়াকে উড়িয়ে ‘বি’ গ্রুপের প্রথম দল হিসেবে সুপার এইটে নাম তুলল অস্ট্রেলিয়া।

৪ ওভারে মাত্র ১২ রানে ৪ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের কারিগর জ্যাম্পা। একইসঙ্গে এদিন দেশের প্রথম বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে একশ উইকেট পূর্ণ করেন ৩২ বছর বয়সী লেগ স্পিনার। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে তার হাতেই ওঠে ম্যাচ সেরার পুরস্কার।

ছোট রান তাড়ায় একদমই সময় নেননি ডেভিড ওয়ার্নার, ট্রাভিস হেড ও মিচেল মার্শ। তৃতীয় বলে বাউন্ডারি মারেন ওয়ার্নার। পরের ওভারে ডেভিড ভিসার বলে দুই চারের পর মারেন ইনিংসের প্রথম ছক্কা। তবে পরের বলেই তাকে ফিরিয়ে দেন ভিসা।

এরপর আর উইকেট পড়তে দেননি হেড ও মার্শ। মাত্র ২৪ বলে ৫৩ রানের অবিছিন্ন জুটিতে ম্যাচ শেষ করে ফেরেন তারা দুজন। ৫ চারের সঙ্গে ২ ছক্কায় ১৭ বলে ৩৪ রান করেন হেড। ৩ চার ও ১ ছক্কায় মার্শের সংগ্রহ ৯ বলে ১৮ রান।

এর আগে টস জিতে ফিল্ডিং নিয়ে শুরু থেকেই নামিবিয়াকে চেপে ধরে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ছয় ওভারে ৩ উইকেটে মাত্র ১৭ রান করতে পারে নামিবিয়া। অর্থাৎ পাওয়ার প্লেতে দুই দলের ব্যবধান ৫৭ রানের।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দুই দলের পাওয়ার প্লে স্কোরের মধ্যে এটিই সর্বোচ্চ ব্যবধান। ২০২১ সালে স্কটল্যান্ডের ২ উইকেটে ২৭ রানের বিপরীতে নামিবিয়া করেছিল ২ উইকেটে ৮২ রান। এত দিন এটিই (৫৫) ছিল রেকর্ড।

পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পর আক্রমণে আসেন জ্যাম্পা। প্রথম দুই ওভারে তিনি ধরেন এক শিকার। দশ ওভার শেষে নামিবিয়ার সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ২৭ রান।

বিশ্বকাপে প্রথম দশ ওভারে এর চেয়ে কম রানের ঘটনা আছে আর একটি। ২০১২ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ইনিংসের মাঝপথে আফগানিস্তানের স্কোর ছিল ৮ উইকেটে ২৬ রান।

সতীর্থদের যাওয়া-আসার মিছিলে একপ্রান্ত আগলে রাখেন অধিনায়ক গেরহার্ড এরাসমাস। প্রথম ১৬ বল থেকে কোনো রান অবশ্য নিতে পারেননি তিনি।

বল বাই বলের হিসেব থাকা ম্যাচগুলোর মধ্যে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে রানের খাতা খোলার জন্য এত বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি আর কোনো ব্যাটসম্যানকে। ২০০৭ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৫ বল পর প্রথম রান নিয়েছিলেন কেনিয়ার তন্ময় মিশ্রা।

পরে জ্যাম্পার ছোবলে ৪৩ রানের মধ্যে ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলে নামিবিয়া। নিজের স্পেলের শেষ বলে বের্নার্ড শুলজকে বোল্ড করে একশ উইকেট পূর্ণ করেন অস্ট্রেলিয়ার লেগ স্পিনার।

এরপর এরাসমাসের প্রচেষ্টায় কিছুটা পথ পাড়ি দেয় নামিবিয়া। ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৪৩ বলে ৩৬ রান করেন দলের অধিনায়ক। তবু টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের সর্বনিম্ন স্কোর অবশ্য এড়াতে পারেনি নামিবিয়া।

২০২১ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৯২ রানে থেমেছিল তারা। এই সংস্করণে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কোনো দলের সর্বনিম্ন স্কোরের রেকর্ডও এটি। ২০২১ বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে ৭৩ রানে অলআউট করেছিল তারা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

নামিবিয়া: ১৭ ওভারে ৭২ (ফন লিনগেন ১০, ডেভিন ২, ফ্রাইলিংক ১, এরাসমাস ৩৬, স্মিট ৩, গ্রিন ১, ভিসা ১, ট্রাম্পেলম্যান ৭, শুলজ ০, ব্র্যাসেল ২*; শিকঙ্গো ০; হেইজেলউড ৪-০-১৮-২, স্টয়নিস ৩-০-৯-২, কামিন্স ৩-১-১৬-১, জ্যাম্পা ৪-০-১২-৪, এলিস ৩-১-১২-১)

অস্ট্রেলিয়া: ৫.৪ ওভারে ৭৪/১ (ওয়ার্নার ২০, হেড ৩৪*, মার্শ ১৮*; ট্রাম্পেলম্যান ২-০-১৯-০, ভিসা ১-০-১৫-১, শিকঙ্গো ১-০-১৯-০, এরাসমাস ১-০-৬-০, ব্র্যাসেল ০.৪-০-১৪-০)

ফল: অস্ট্রেলিয়া ৯ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: অ্যাডাম জ্যাম্পা

এমটিআই

Link copied!