ঢাকা: গোটা ফ্রান্সের দৃষ্টিই তখন পুলে। প্রবল প্রত্যাশার সেই চাপকে জয় করে প্রতিদ্বন্দ্বিদের অনেকটা পেছনে ফেলে সোনা জিতলেন ফ্রান্সের এই বিষ্ময় বালক। গোটা দেশকে তিনি এনে দিলেন আনন্দের উপলক্ষ।
প্যারিস অলিম্পিকের ৪০০ মিটার ব্যক্তিগত মেডলি ইভেন্টে শনিবার সোনা জয় করেন মারশোঁ। অলিম্পিকের মেডলি ইভেন্টের ইতিহাসে ফ্রান্সের প্রথম সোনা এটি।
ফ্রান্সে তাকে ডাকা হয় ‘ফরাসি মাইকেল ফেলপ্স’ নামে। ফেলপ্স স্বয়ং এ দিন উপস্থিত ছিলেন সেখানে। এবারের অলিম্পিকসে এনবিসি টিভির হয়ে কাজ করছেন অলিম্পিকসে ২৩টি সোনাজয়ী এই কিংবদন্তি। সর্বকালের সফলতম অলিম্পিয়ানকে স্বাক্ষী রেখেই অলিম্পিকসে প্রথম সোনার দেখা পেলেন মারশোঁ।
এই ইভেন্টের বিশ্ব রেকর্ড তারই। এ দিন নিজের রেকর্ড ভাঙার সম্ভাবনাও জাগিয়েছিলেন একটা পর্যায়ে। শেষ দিকে খানিকটা মন্থর হয়ে পড়ায় শেষ পর্যন্ত তা আর পারেননি। তবে অলিম্পিকস রেকর্ড ঠিকই গড়েছেন।
লড়াইয়ের শুরু থেকেই এ দিন এগিয়ে ছিলেন মারশোঁ। ক্রমে ব্যবধান বাড়াতে থাকেন অন্যদের সঙ্গে। শেষ পর্যন্ত ৪ মিনিট ২.৯৫ সেকেন্ড সময় নিয়ে জেতেন তিনি। অবিশ্বাস্যভাবে, রূপাজয়ী জাপানের তোমোইউকি মাতসুশিতা ছিলেন তার প্রায় ৬ সেকেন্ড পেছনে! ব্রোঞ্জ জেতেন যুক্তরাষ্ট্রের কার্সন ফস্টার।
লড়াই শুরুর আগে থেকেই পুরোটা সময়ই দর্শকেরা মারশোঁকে উৎসাহ দিয়ে গেছেন গলা ফাটিয়ে। গোটা আঙিনা রূপ নিয়েছিল যেন কোনো রক কনসার্টের। তার জয়ের পর তো উল্লাস থামছিলই না দর্শকদের। প্রধানমন্ত্রী ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ তাকে সরাসরি অভিনন্দনও জানান।
ইতিহাস গড়া সাফল্য, শুভেচ্ছা আর ভালোবাসার জোয়ার, সব মিলিয়ে ২২ বছর বয়সী এই সাঁতারু ছিলেন আপ্লুত।
আমি এখন অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন… এই অনুভূতি, এই উপলব্ধি সহজ কিছু নয়। পোডিয়ামে দাঁড়ানোর সময় গোটা শরীরের লোম দাঁড়িয়ে গেছে আমার। নিজেকে নিয়ে, একজন ফরাসি হিসেবে আমি গর্বিত। অসাধারণ মুহূর্ত এটি, সত্যিই উপভোগ করছিলাম।
ফেলপ্সের সঙ্গে সাঁতারের ধরনে মিল তো আছেই, বড় সংযোগ আছে আরও একটি। যার কোচিংয়ে সোনাজয়ী মেশিন হয়ে উঠেছিলেন ফেলপ্স, সেই বব বাউম্যান এখন মারশোঁরও কোচ। বাউম্যানের আশা, এবারের আসরে ২০০ মিটার ব্যক্তিগত মেডলি, ২০০ মিটার বাটারফ্লাই ও ২০০ মিটার ব্রেস্টস্ট্রোকেও সোনা জিতবেন মারশোঁ। সেটি পারলে ফেলপ্সের সঙ্গে তার নাম আরও ভালোভাবে পোক্ত হবে!
প্যারিসের পুলে এ দিন চমকপ্রদ ফল হয়েছে দুটি ইভেন্টে। ছেলেদের ১০০ মিটার ব্রেস্টস্ট্রোকে ব্রিটেনের অ্যাডান পিটির টানা তৃতীয় অলিম্পিকস সোনা জয়ের স্বপ্ন ভেঙে সেরা হয়েছেন ইতালির নিকোলো মার্তিনেঙ্গি। মেয়েদের ১০০ মিটার বাটারফ্লাইয়ে বিশ্বরেকর্ডধারী ও বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের সেরা আমেরিকার গ্রেচেন ওয়ালশকে তুমুল লড়াইয়ে পেছনে ফেলে সোনা জিতেছেন তার স্বদেশি টরি হাস্ক।
এআর
আপনার মতামত লিখুন :