ঢাকা : কানপুর টেস্টের আগের দিন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন সাকিব আল হাসান। অধিনায়ক কিংবা কোচের পরিবর্তে সিনিয়র এই ক্রিকেটারকে প্রেস কনফারেন্সের কক্ষে আসতে দেখে কিছুটা হলেও অবাক হয়েছিলেন সকলে। তবে সাকিব সংবাদ সম্মেলনে আসা মানেই বাড়তি কিছু। ২৬ তারিখের সংবাদ সম্মেলনে হলো সেটাই। আকস্মিকভাবেই টেস্ট ও টি টোয়েন্টি থেকে দিলেন অবসরের ঘোষণা।
কিন্তু তাতেও মিশে আছে যদি কিন্তুর হিসেব। সাকিব নিজের শেষ টেস্ট ধরে রেখেছেন দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে মিরপুর টেস্ট। কানপুরের পরেই সেই টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। কিন্তু মিরপুরে খেলতে আসার আগে সাকিব চান নিজের নিরাপত্তা। সাম্প্রতিক সময়ের রাজনৈতিক অবস্থা বিবেচনা করেই এমন চাওয়া তার। তা না ঘটলে, কানপুর টেস্টই হতে পারে সাকিবের শেষ।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের সর্বকালের অন্যতম সেরা এই তারকাকে বিদায় দিতে প্রস্তুত ভারতও। সব ঠিক থাকলেও সাদা পোশাকে দেশের বাইরে এটাই সাকিবের শেষ ম্যাচ। এমন অবস্থায় সাকিবকে বিদায়ী সংবর্ধনা দিতে রাজি ভারতের ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। তবে এজন্য বিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকেও আছে শর্ত।
বিসিসিআই চায় নিশ্চয়তা। বাংলাদেশের অলরাউন্ডার যদি নিশ্চিত করেন, কানপুরেই তার শেষ। কেবল সেক্ষেত্রেই সাকিবকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেবে ভারত। বিসিসিআই সহ সভাপতি রাজিব শুক্লা জানিয়েছেন সাকিব স্পষ্ট বার্তা দিলে তারা কানপুরেই বিদায়ী অনুষ্ঠান করতে চান। আর সেজন্য সময় বাকি আছে কেবল আজকের দিনটাই। চলমান টেস্টে আজই শেষ হচ্ছে। আর সাকিব দেশে না এলে আজকেই টেস্ট ক্যারিয়ারে সাকিবের শেষদিন।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে জানালেন, সাকিব এখনও আমাদের সেভাবে জানায়নি (অবসরের ব্যাপারে)। যদি সে জানায় তাহলে অবশ্যই আমরা এই বিষয়টি (বিদায় দেয়ার) নিয়ে চিন্তা করব। আমরা ভেবেছিলাম সে বাংলাদেশে গিয়ে অবসর নেবে। কারণ তাদের পরের সিরিজটি সেখানে।
সাকিবের বিদায়ী অনুষ্ঠানের জন্য তামিম ইকবালের সঙ্গেও কথা বলেছেন রাজিব শুক্লা। জানতে চেয়েছেন সাকিবের অবসর ঘোষণার সার্বিক অবস্থা, গতকাল তামিম ইকবালও আমাকে এটাই বলছিল। সে যদি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে। এবং বাংলাদেশে না যায় তাহলে তাকে আমাদের জানাতে হবে। আনুষ্ঠানিকভাবে আমরা জানলে আমরা কোনো কিছু পরিকল্পনা করতে পারব না।
সাকিব আল হাসান কানপুরের সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে নিজের শেষ ম্যাচ তিনি খেলে ফেলেছেন বিশ্বকাপেই। ওয়ানডে ফরম্যাটে দেশের মাটিতে আপাতত খেলা নেই। আরব আমিরাতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজে অ্যাওয়ে সিরিজ আছে। এরপরেই ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির খেলা।
দেশের মাঠে সাকিবের বিদায় নেয়ার মোক্ষম সুযোগ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ। কিন্তু দেশে ৫ই আগস্ট পরবর্তী সময়ে অনেকের চোখেই রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কারণে ভিলেনে পরিণত হয়েছেন সাকিব আল হাসান। মাথার ওপর আছে হত্যা মামলার খড়গ। এমন অবস্থায় নিরাপত্তার ইস্যুর সঙ্গে সাকিব ঝুলিয়ে রেখেছেন নিজের বিদায়ী ম্যাচটাও।
এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :