বুমরাহর বোলিং অ্যাকশন কি বৈধ

  • ক্রীড়া ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২৪, ১২:০২ পিএম
বুমরাহর বোলিং অ্যাকশন কি বৈধ

ঢাকা: ব্যাটসম্যানদের জমানাতেও আতঙ্ক ছড়িয়ে চলা বুমরাহ গতকাল থেকে আবারও আলোচনায়। পার্থ টেস্ট দিয়ে কাল শুরু হওয়া বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে তিনিই ভারতকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আগে ব্যাটিংয়ে নামা ভারত প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৫০ রানে অলআউট হওয়ার পরও ৪৬ রানের লিড নিয়েছে বুমরার নৈপুণ্যের কারণেই।

একজন বোলার কীভাবে অবলীলায় ইয়র্কার দিয়ে যাচ্ছেন, ধারাবাহিকভাবে একই চ্যানেলে বল ফেলে যাচ্ছেন কিংবা ব্যাটসম্যানদের ক্রমাগত বেকায়দায় ফেলছেন-বর্তমানে ক্রিকেট বিশ্বে এমন বোলারের সবচেয়ে উৎকৃষ্ট উদাহরণ খুব সম্ভবত যশপ্রীত বুমরাহ।

অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইন আপ একরকম ধসিয়ে দিয়েছেন ৩০ বয়স বয়সী এই ফাস্ট বোলার। কাল প্রথম দিনে ৪ উইকেটের পর আজ দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই ফিরিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান অ্যালেক্স ক্যারিকে। টেস্ট ক্যারিয়ারে এ নিয়ে ১১ বার ইনিংসে কমপক্ষে ৫ উইকেট নিলেন তিনি, যা ভারতীয় পেসারদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

কিন্তু অস্ট্রেলিয়াকে ধসিয়ে দেওয়ার পর বুমরাকে নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। অস্ট্রেলিয়ানদের কারও কারও প্রশ্ন, তার বোলিং অ্যাকশন আদৌ বৈধ কি না?

একজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘এই অ্যাকশন নিয়ে যশপ্রীত বুমরাহ বল করার অনুমতি পেল কীভাবে? এটা তো পরিষ্কার চাকিং।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘ফক্স ক্রিকেট বুমরার বোলিং কৌশল স্লো মোশনে বিশ্লেষণ করেছে। এ সময় আমি তার (স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে) বাঁকানো কনুই ও চাকিং দেখতে পেলাম।’

তবে ভারতীয় সমর্থকেরা বুমরার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে অস্বীকার করেছেন এবং তারা এটিকে ‘ষড়যন্ত্রের অংশ’ মনে করছেন।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কোনো বোলার ভালো করলেই তার বিরুদ্ধে লেগে পড়া অস্ট্রেলিয়ানদের জন্য নতুন কোনো ঘটনা নয়। এর সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী সম্ভবত মুত্তিয়া মুরালিধরন। ’৯০-এর দশকে একাধিক ম্যাচে লঙ্কান কিংবদন্তির বোলিং অ্যাকশন অবৈধ প্রমাণ করতে যেন উঠে পড়ে লেগেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ৩ আম্পায়ার টনি ম্যাককুইলান, রস এমারসন ও ড্যারেল হেয়ার।

বুমরাহও অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের জন্য দুর্বোধ্য হয়ে ওঠায় তার বোলিং অ্যাকশনও অবৈধ প্রমাণের চেষ্টা চলছে বলে মনে করেন ভারতের এক সমর্থক। তিনি লিখেছেন, ‘একদম মুরালির মতোই। এটা এমন কিছু, যা জন্মগতভাবে তৈরি হয়েছে। এর বিরুদ্ধে কেউ কিছু করতে (অভিযোগ দিতে) পারেন না।’

ইয়াহু স্পোর্টস অস্ট্রেলিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বুমরার বোলিং অ্যাকশনের সঙ্গে অন্য কারও মিল নেই, তা সবার জানা। অপ্রচলিত অ্যাকশনের কারণে তার বল সামলানো কঠিন বলে মনে করেন অনেকে। তবে বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির অন্যতম সম্প্রচারকারী চ্যানেল ফক্স ক্রিকেট কাল সাইড অ্যাঙ্গেল থেকে বুমরার বল ছাড়ার মুহূর্ত দেখানোর পর অনেকের মনেই বিস্ময় জেগেছে।  

আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, কোনো বোলার বল ছাড়ার সময় কনুই ১৫ ডিগ্রির বেশি বাঁকালে তা অবৈধ। বুমরাও বল করার সময় যে মাত্রায় কনুই বাঁকিয়ে থাকেন, তা ১৫ ডিগ্রির বেশি বলে মনে করছেন কেউ কেউ।

একজন আম্পায়ারের কাছে যদি কোনো বোলারের অ্যাকশন সন্দেহজনক মনে হয়, তাহলে তিনি ম্যাচ রেফারির কাছে রিপোর্ট করতে পারে। এরপর আইসিসি স্বীকৃতি বায়োমেকানিক্‌স টেস্টিং সেন্টারে বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে বোলারকে তার অ্যাকশন পরীক্ষা করাতে হয়। কিন্তু বুমরার বোলিং অ্যাকশন নিয়ে আম্পায়াররা কখনো অভিযোগ জানাননি। পরীক্ষা-নিরীক্ষা তো অনেক দূরের ব্যাপার।

এআর

Link copied!