ঢাকা: লাল-সবুজের জার্সি গায়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আর দেখা যাবে না তামিম ইকবালকে। তাই তাকে ছাড়াই তাকাতে হবে ভবিষ্যতের দিকে।
সে ভবিষ্যৎ বিসিবিকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে ৫ প্রশ্নের সামনে। আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগেই এই প্রশ্নগুলোর সমাধান খুঁজতে হবে দলকে।
১. ভঙ্গুর টপ অর্ডারের সমাধান কী?
গত কয়েক বছরে টপ অর্ডার বেশ ভুগিয়েছে দলকে। দীর্ঘ ১৫ মাস আন্তর্জাতিক আঙিনায় না থাকলেও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য অভিজ্ঞ ব্যাটার তামিম ইকবালকে বিবেচনা করা হচ্ছিল মূলত এ কারণেই। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভালো কিছু করতে হলে আগে এই টপ অর্ডার ব্যর্থতার একটা সুরাহা করতে হবে দলকে।
বাংলাদেশের শীর্ষ তিন ব্যাটসম্যান পারফরম্যান্সের দিক থেকে সবচেয়ে পিছিয়ে। তামিমের বিকল্প হিসেবে ২০২৩ বিশ্বকাপ থেকে দলে সুযোগ পাওয়া তানজিদ হাসান ধারাবাহিক হতে পারেননি। তার সঙ্গী সৌম্য সরকার ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছেন শেষ কিছু দিনে। তবে তাকেও অধারাবাহিকের কাতারেই ফেলা যায়। এদিকে সাদা বলের ক্রিকেটে লিটন দাসের ফর্মও বেশ বাজে। ২০২৪ সালে তার গড় ছিল মাত্র ১৩.১৩।
অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর ইনজুরি থেকে ফিরে আসা দলের জন্য স্বস্তির বিষয় হতে পারে। তবে শেষ এক বছরে সব ধরনের ক্রিকেটে তার ফর্মও ভালো নয় বললেই চলে। যার ফলে টপ অর্ডার প্রশ্নের সমাধান তার ফিরে আসাটাও দিতে পারছে না আপাতত।
২. মিডল অর্ডার ব্যাটিং ও সাকিবের ভূমিকা
মুশফিকুর রহিম, তৌহিদ হৃদয় এবং মাহমুদউল্লাহ মধ্যসারির প্রধান ভরসা। মেহেদি হাসান মিরাজ ব্যাটিংয়ে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছেন, আর জাকের আলি অভিষেকের পর থেকে গত ১২ মাসে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন।
আপাতদৃষ্টিতে মিডল অর্ডারকেই দলের সবচেয়ে বড় শক্তির জায়গা ধরা হয়। সেই মিডল অর্ডারেই খেলতে হবে সাকিবকে। বোলিংয়ে নিষিদ্ধ থাকলে তিনি শুধুমাত্র একজন ব্যাটার হিসেবে খেলবেন। সেক্ষেত্রেও প্রতিবন্ধকতা আছে। শেষ এক বছরে সাকিব ব্যাট হাতে বড্ড ম্লান। তাই তিনি বোলিং না করতে পারলে কি তাকে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত? এ প্রশ্নও চলে আসছে নির্বাচকদের সামনে।
৩. উইকেটকিপার হবেন কে?
লিটনের ফর্মহীনতার কারণে যদি তাকে একাদশের বাইরে রাখতে হয়, সেক্ষেত্রে মুশফিক বা জাকেরকে উইকেটকিপিংয়ের দায়িত্ব নিতে হতে পারে। মুশফিক সদ্যই চোট কাটিয়ে ফিরেছেন, চলতি বিপিএলে উইকেট কিপিংও করেননি বরিশালের হয়ে শেষ কয়েক ম্যাচে। দলে এখনও সেভাবে থিতু হতে না পারা জাকেরকে কি এই দায়িত্ব দেওয়া হবে, তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
৪. পেস বোলিংয়ে সমস্যাটা মধুর
এতক্ষণ যা পড়েছেন, তার সব দুর্ভাবনার বিষয়। এই অংশটায় কিছুটা স্বস্তি পেতে পারেন। পেস বোলিং যে বাংলাদেশকে মধুর সমস্যাতেই ফেলেছে। তাসকিন আহমেদ পেস আক্রমণের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এখন। নাহিদ রানা দলের নতুন অস্ত্র, বিপিএলেও আছেন দারুণ ছন্দে। মুস্তাফিজুর রহমান ডেথ ওভারে অপরিহার্য অংশ দলের বোলিংয়ের। এদিকে নতুন বলে দলের সবচেয়ে ভালো বোলার শরিফুল ইসলামকে কীভাবে বাদ দেবেন দল থেকে?
তৃতীয় পেসার হিসেবে হাসান মাহমুদ ও তানজিম হাসান প্রস্তুত। এদিকে এনসিএলের পর থেকে খেলায় না থাকলেও এবাদত হোসেনকে ভাবনায় রাখা যেতে পারে। সব মিলিয়ে পেস বোলিংয়ে ‘কাকে রেখে কাকে খেলাব’ এই প্রশ্নের মুখে পড়ে যেতে পারেন নির্বাচকরা।
স্পিনার হিসেবে দলে থাকবেন কারা?
মধুর সমস্যা ছেড়ে আবারও দুর্ভাবনায় ফেরাবে স্পিন বিভাগ। মেহেদি হাসান মিরাজের ফর্ম দলের উদ্বেগের কারণ। তাইজুল ইসলাম আর নাসুম আহমেদও দলে আসা যাওয়ার মধ্যেই আছেন। এদিকে শেখ মেহেদি হাসান টি-টোয়েন্টিতে দলের গুরুত্বপূর্ণ একজন হয়ে উঠেছেন। ওয়ানডে ফরম্যাটে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলেও তাকে দেখা যাবে কি না, তাহলে এ চার জনের কোন কোন জন জায়গা পাবেন দলে, সে ধাঁধার সমাধানও করতে হবে নির্বাচকদের।
এআর
আপনার মতামত লিখুন :