ঢাকা : ‘ফ্রেন্ডশিপ ম্যারেজ’ মানে একটি ছেলে ও মেয়ের মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে বিয়ে বিয়ে খেলা। মূলত এটি কোন বিয়ে নয়। তাদের মধ্যে চুক্তি হবে এমন যে আমরা বাইরের জগতে স্বামী-স্ত্রীর মতই থাকবো। কিন্তু বাস্তবে স্বামী-স্ত্রীর মত জীবনযাপন করবো না। এটিকে জাপানে বলা হয় ‘ফ্রেন্ডশিপ ম্যারেজ’। আর এটির জনপ্রিয়তা এখন তুঙ্গে।
এদিকে জাপান সরকার সন্তান জন্ম হার কমে যাওয়ার কারণে নানা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। কিন্তু কোনো কিছুইতে সন্তান গ্রহণে তরুণ-তরুণীদের আগ্রহ বাড়াতে পারছে না। বরং দিন দিন এ হার কমে যাচ্ছে।
জানা যায়, জাপানে বিয়েতে নতুন প্রজন্মের আগ্রহ নেই বললেই চলে। তাই দেশটিকে এখন নতুন এক বিয়ে পদ্ধতি চালু হয়েছে যার ইংরেজি নাম দেওয়া হয়েছে ‘ফ্রেন্ডশিপ ম্যারেজ’। বাংলায় অর্থ দাঁড়ায় ‘বন্ধুত্বের বিয়ে’।
বিগত বছরগুলোতে এই বিয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে জাপানে। এই বিয়ে হল এমন একটি সম্পর্ক যেখানে দু’জন মানুষ প্রেম-ভালোবাসা কিংবা যৌন আকর্ষণ ছাড়াই একে অপরের আধ্যাত্মিক সঙ্গী হয়। জাপানের ১২ কোটি ৪০ লাখ মানুষের মধ্যে কয়েক হাজার মানুষ এই ধরনের সম্পর্ককে বেছে নিয়েছেন। প্রচলিত বিয়ে পদ্ধতির প্রতি বীতশ্রদ্ধ মানুষ, সমকামী ও উভকামী সব ধরনের মানুষই বন্ধুত্বের বিয়ে করতে পারেন।
ফ্রেন্ডশিপ বিয়ে নিয়ে বিশেষভাবে কাজ করা একটি প্রতিষ্ঠানের নাম ‘কালারস’। এই প্রতিষ্ঠানটির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৫ সালের মার্চ থেকে জাপানের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রায় ৫০০ মানুষ এই বিয়ে করেছেন। তারা পরিবারও গঠন করেছেন। এমনকি কোনও কোনও দম্পতি সন্তানও বড় করছেন। ফ্রেন্ডশিপ ম্যারেজ হল এমন একটি সম্পর্ক যেখানে দুজন মানুষ আইনিভাবে দাম্পত্য জীবনে আবদ্ধ হন। তবে তাদের মধ্যে কোনও ভালোবাসার আবেগ থাকে না এবং তাদের মধ্যে কোনও যৌন সম্পর্কও গড়ে ওঠে না। তারা একসঙ্গে বসবাস করতে পারেন, কিংবা আলাদাভাবেও।
স্পার্ম ডোনেশনের মাধ্যমে কৃত্রিম উপায়ে তারা সন্তান নেওয়ারও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। ফ্রেন্ডশিপ বিয়ের মাধ্যমে প্রায় ৩ বছর ধরে দাম্পত্য জীবন কাটানো এক ব্যক্তি এই বিয়ে সম্পর্কে বলেন, এই বিয়ের মাধ্যমে আসলে একই রকম চাহিদা থাকা একজন রুমমেটের অনুসন্ধান করা হয়।
এমন সম্পর্কে থাকা এক নারী বলেন, ‘আমি আসলে কারও স্ত্রী হওয়ার উপযুক্ত নই। কিন্তু আমি একজন ভালো বন্ধু হতে পারি। আমি শুধু চেয়েছিলাম আমার মতোই অনুভূতি থাকা কোনও মানুষকে। কিছু বিষয় আমরা দু’জনই উপভোগ করব। গল্প আর হাসিতে যার সঙ্গে ভালো সময় কাটবে।’
এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :