ঢাকা: বর্ণাঢ্য র্যালি, কেক কাটা, আলোচনা সভা ও আনন্দ আড্ডার মধ্য দিয়ে ঢাকা কলেজ সাংবাদিক সমিতির (ঢাকসাস) ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে।
রোববার (১৮ ডিসেম্বর) দিনব্যাপী নানা কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করেন সংগঠনটির সদস্যরা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ ও ঢাকসাসের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফ। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা কলেজের উপাধ্যক্ষ ও ঢাকসাসের উপদেষ্টা অধ্যাপক এ.টি.এম. মইনুল হোসেন ও ঢাকা কলেজ শিক্ষক পরিষদ সম্পাদক ড. আব্দুল কুদ্দুস সিকদার।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকসাসের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও চ্যানেল আইয়ের বিশেষ প্রতিবেদক মোস্তফা মল্লিক, বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও ডেইলি স্টারের বিশেষ প্রতিবেদক ইমরান মাহফুজ, শিক্ষক পরিষদের কোষাধ্যক্ষ ওবায়দুল করিম, আক্তারুজ্জামান ইলিয়াস ছাত্রাবাসের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক আলতাফ হোসেনসহ সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সকালে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়।কলেজের মূল প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে বের হয়ে প্রধান গেট প্রদক্ষিণ করে আবারও ক্যাম্পাসে এসে শেষ হয় র্যালিটি। এরপর কলেজের শহীদ আ. ন. ম. নজীব উদ্দিন খান খুররম অডিটোরিয়ামে ঢাকা কলেজ সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল হাকিমের সঞ্চালনায় ও সভাপতি এ জেড ভূঁইয়া আনাসের সভাপতিত্বে শুরু হয় আলোচনা সভা। এরপর নতুন বছরের ক্যালেন্ডার উন্মোচন করেন ও কেক কেটে ঢাকসাস সভাপতি এ জেড ভূঁইয়া আনাস ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল হাকিমের মুখে তুলে দেন প্রধান অতিথি অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, সাংবাদিকরা জাতির বিবেক হিসেবে কাজ করে। ঢাকা কলেজের সাংবাদিকরাও কলেজের বিভিন্ন সমস্যা সম্ভাবনাগুলো নিয়ে কাজ করছে। কলেজের বড় সমস্যাগুলো গণমাধ্যমে তুলে ধরার পাশাপাশ ছোট সমস্যাগুলো ক্যাম্পাস প্রশাসনকে জানালে তা সমাধান সহজ হবে। আর নৈতিকতার সাথে সংবাদ উপস্থাপনের মাধ্যমে কলেজের উন্নয়নে নিজেদের এগিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ.টি.এম. মইনুল হোসেন বলেন, সাংবাদিকরা সবসময় চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করে। ভবিষ্যতেও চ্যালেঞ্জ নিয়েই কাজ করতে হবে। এটা হবে সাংবাদিকদের সার্থকতা। এছাড়া নিজেদের এগিয়ে নিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সিনিয়রদের সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধিরও পরামর্শ দেন তিনি।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. আব্দুল কুদ্দুস সিকদার বলেন, সাংবাদিকরা দেশ ও জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন সময় দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের সাথে তাদের মতের পার্থক্য তৈরি হয়। তবে যেই প্রতিবন্ধকতাই থাকুক না কেন সাংবাদিকদের ক্যাম্পাসসহ জাতীয় জীবনের সমস্যাগুলো নির্ভয়ে উপস্থাপন করতে হবে। তাহলেই দুর্নীতি ও অনৈতিকতা মুক্ত একটি আদর্শ সমাজ প্রতিষ্ঠিত হবে।
অনুষ্ঠানে ঢাকসাস’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোস্তফা মল্লিক বলেন, আমার শিক্ষা জীবনে ঢাকা কলেজে সাংবাদিকদের জন্য একটি প্লার্টফর্ম তৈরি করেছিলাম। তা আজ ২৩ বছরে পদার্পণ করেছে। এটা আমার জন্য আনন্দের। সাংবাদিক সমিতির এই ধারা অব্যহত রাখতে অনুজদের প্রতি আহবান জানান তিনি।
এছাড়া ঢাকা কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ও ডেইলি স্টারের বিশেষ প্রতিবেদক ইমরান মাহফুজ বলেন, ঢাকা কলেজ থেকে অনেক নক্ষত্রের জন্ম হয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ৭ কলেজ নিয়ে যেই জটিলতা সৃষ্টি হয়ে তা অত্যন্ত বেদনার। আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী, আবদুল্লাহ আবু সাঈদ, ড. আকবর আলী খান, আবুল মনসুর আহমেদসহ যারা এই কলেজ থেকে বিভিন্ন যায়গায় অবস্থান তৈরি করেছেন তাদের স্বরণ রাখার পরামর্শ দেন তিনি।
উল্লেখ্য, উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা কলেজে ১৯৯৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর মোস্তফা মল্লিক ও জিয়াউল হাসানের নেতৃত্বে ঢাকা কলেজ সাংবাদিক সমিতির যাত্রা শুরু হয়। এরপর কয়েকবছর সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থবিরতার পর ২০১১ সালে জাকারিয়া ইবনে ইউসুফকে আহবায়ক ও আল ইমরান হোসাইনকে সদস্য সচিব করে আরো কয়েকজন সংবাদ কর্মীর প্রচেষ্টায় সমিতির গতিশীলতা ফিরে আসে।
সোনালীনিউজ/আইএ
আপনার মতামত লিখুন :