ঢাকা: ঢাকা মেডিকেল কলেজে (ঢামেক) চীনের সিনোফার্মের টিকা প্রয়োগের উদ্বোধন করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। মঙ্গলবার (২৫ মে) দুপুর সোয়া ১২টায় ঢামেক ছাত্রী অনন্যা ছালাম সমতাকে টিকা প্রয়োগ করে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। এর পর শাহীন আহমেদ ও নিয়ামুল হক নামের দুজনকে টিকা দেওয়া হয়।
এর মাধ্যমে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে চীন সরকারের উপহার হিসেবে আসা সিনোফার্মের পাঁচ লাখ ডোজ টিকা প্রয়োগের কার্যক্রম শুরু হলো। মেডিকেল শিক্ষার্থী, নার্সিং শিক্ষার্থী এবং মেডিকেল টেকনোলজিস্ট শিক্ষার্থীদের এই টিকা দেওয়া হচ্ছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, চীন সরকারের দেওয়া করোনার পাঁচ লাখ টিকা পেয়েছি, যা আড়াই লাখ মানুষকে দেওয়া হবে। জুন থেকে আমরা আরও বেশি মানুষকে দিতে পারব।
‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের দেশে টিকা তৈরি করা যায় কি না। সেজন্য আমার রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে যোগাযোগ করছি, তারা যেন আমাদের দেশে প্রযুক্তি এনে টিকা উৎপাদন করতে পারে।’
তিনি বলেন, আমরা দেশে বারবার ‘লকডাউন’ দিতে চাই না। লকডাউন দেওয়ায় আমরা পিছিয়ে পড়ছি। আপনারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন।
মন্ত্রী জানান, আজ ঢামেকে ২৫৭ জনকে টিকা দেওয়া হবে। এছাড়া শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ, মুগদা মেডিকেল কলেজ ও সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে আজ এই টিকা দেওয়া হচ্ছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিতি ছিলেন- ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক ও ঢামেকের অধ্যক্ষ ডা. টিটু মিয়াসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র জানা যায়, উদ্বোধনের দিন ১ হাজার শিক্ষার্থীকে এই টিকা দেয়ার পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণে এক সপ্তাহ এই কার্যক্রম স্থগিত রাখা হবে। পরে আবার এই টিকা শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণহারে দেয়া হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচাক আবুল বাশার খুরশীদ আলম বলেন, সরকারি-বেসরকারি মেডিক্যাল ও ডেন্টালের শিক্ষার্থী, নার্সিং শিক্ষার্থী এবং মেডিক্যাল টেকনোলজি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এই টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন। বাংলাদেশে থাকা চীনের কিছু নাগরিককেও এই টিকা দেয়া হবে। সব মিলিয়ে টিকা দেয়া হবে ২ লাখের কম মানুষকে। বাকি টিকা কাদের দেয়া হবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
গত ২৯ এপ্রিল জরুরি ব্যবহারে সিনোফার্মের টিকা প্রয়োগের অনুমোদন দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। ১২ মে বাংলাদেশে এই টিকার ৫ লাখ ডোজ উপহার হিসেবে পাঠায় চীন সরকার। আরও ৬ লাখ ডোজ টিকা উপহার হিসেবে পাঠানোর কথা দিয়েছে বেইজিং।
চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান সিনোফার্মের অধীন বেইজিং ইনস্টিটিউট অব বায়োলজিক্যাল প্রোডাক্টস উদ্ভাবিত বিবিআইবিপি-করভি নামের দুই ডোজের টিকা জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও। বেইজিং ইনস্টিটিউট অব বায়োলজিক্যাল প্রোডাক্টস জানিয়েছে, তাদের টিকা করোনা প্রতিরোধে ৭৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ কার্যকর।
চীন, পাকিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বেশ কয়েকটি দেশে এই টিকা প্রয়োগের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষামূলক ব্যবহারের ফলাফলের ভিত্তিতে সংযুক্ত আরব আমিরাত জানিয়েছে, এই টিকা ৮৬ শতাংশ কার্যকর।
সোনালীনিউজ/এমএইচ
আপনার মতামত লিখুন :