• ঢাকা
  • শনিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ প্রত্যাশীদের কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ৬, ২০২১, ০১:৫১ পিএম
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ প্রত্যাশীদের কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা

সংবাদ সম্মেলনে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ প্রত্যাশীরা

ঢাকা: করোনাকালীন প্রণোদনা হিসেবে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা স্থায়ীভাবে ৩২-এ উন্নীত করার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ‘চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩২ চাই’- আন্দোলনের কেন্দ্রীয় টিম। একইসঙ্গে আগামী ১০ জুনের মধ্যে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে কাঙ্খিত কোন ঘোষণা না পেলে ১১ জুন, শুক্রবার শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরে মানবন্ধন করার ঘোষণা দিয়েছে টিমের শীর্ষস্থানীয় নেতারা।

রোববার (৬ জুন) বেলা ১১ টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি’র নসরুল হামিদ অডিটোরিয়ামে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের সাবেক এমবিএ শিক্ষার্থী মো. তানভির হোসেন এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসনের সাবেক মাস্টার্স শিক্ষার্থী মো. সাজিদ সেতু, আনোয়ার সাকিন, অক্ষয় রায়, সুমনা রহমান, লাবিব হাসান, রুবেল আহমেদ, আব্দুল্লাহ আল মামুন, মারজিয়অ সুলতানা, মাহমুদুল লিমন, সাদেকুল ইসলাম, ডালিয়া আহমেদ, মানিন রিপন, শারমিন পরী, নাজমুস সাকিব, আব্দুল্লাহ নোমান, মুক্তিম মিলন, মারুফা লিজাসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ প্রত্যাশীরা

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা জানান, “যুব প্রজন্মের করোনাকালীন ক্ষতিগ্রস্ততা বিবেচনা করে সরকারি চাকরিতে আবেদন তথা প্রবেশাধিকারের বয়সসীমা ৩২ বছরে উন্নীত করা এই মুহূর্তে অতীব প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি। এটা আমাদের সময়ের যৌক্তিক দাবি। এ দাবি বাস্তবায়নে আগামী ১০ জুনের মধ্যে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে কোন ঘোষণা না আসলে আমরা আমাদের চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে ১১ জুন জনসমাবেশ করবো।” 

তারা জানান, “পুরো বিশ্ব আজ অদৃশ্য এক ভাইরাসের বিরুদ্ধে মহাযুদ্ধে পতিত হয়েছে, বাংলাদেশও যার বাহিরে না। দেশে কোভিড-১৯ এর ভয়াল থাবায় যে কয়টা সেক্টরের মানুষ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের মধ্যে চাকরিপ্রত্যাশী যুব প্রজন্ম অন্যতম। গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণার সাথে বন্ধ হয়ে যায় সকল প্রকার সরকারি চাকরির সার্কুলার ও এক্কাভাবিক স্বাভাবিক নিয়োগ প্রক্রিয়া। করোনা পরিস্থিতির জন্য এক বছরের অধিক সময়কাল জুড়ে হাতেগোনা কয়েকটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে (সেটিও আবার নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দেরিতে) এবং ৪১তম বিসিএস প্রিলিমিনারি’র মতো কয়েকটি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফলে দেখা গেছে এই প্রজন্মের অনেকেই তাদের জীবনের প্রায় দেড় বছর হারিয়ে ফেলেছেন। এর স্থায়িত্ব আরও দীর্ঘ হতে পারে। করোনার প্রভাবে দেরিতে কয়েকটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি আসার পরে এমন চিত্র দেখা গেছে অনেকেই ৫/১০ দিন, এক বা দুই মাসের জন্য ৪৩তম বিসিএস প্রিলিমিনারি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের অফিসার পদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনই করতে পারেন নাই। সবদিক বিবেচনা করে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা স্থায়ীভাবে ৩২ করা এখন সময়ের দাবি বলে আমরা মনে করছি।” 

বক্তারা জানান, “দুই মাসের অধিক সময় ধরে আমরা যারা ‘করোনাকালীন প্রণোদনা হিসেবে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ চাই’ দাবি জানিয়ে কর্মসূচী পালন করে আসছি তারা কোন প্রকার আন্দোলন সংগ্রাম তথা এমন কোন কর্মসূচীতে যাইনি যাতে রাষ্ট্র ও সরকারকে বিব্রত হতে হয় বা জনজীবনে সমস্যার সৃষ্টি হয়। কর্মসূচীর অংশ হিসেবে গঠনমূলক প্রক্রিয়ায় আমরা ইতোমধ্যেই ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করেছি। মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্পীকার, শিক্ষামন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী, চিফ হুইপ বরাবর স্মারকলিপি ও খোলা চিঠি প্রদান করেছি।”

মাশরাফির সঙ্গে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎ

বক্তারা আরও জানান, “এই ইস্যুতে এমপি মাশরাফি, ব্যারিস্ট্যার সুমন, সুভাষ সিংহ রায়, সোহেল তাজের মতো ব্যক্তিত্বদের সাথেও দেখা করে আমাদের বিষয়টি অবগত করেছি। গত ৩ মে ঢাকার শাহবাগ চত্বরে প্রায় ২০০ জনের উপস্থিতিতে করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে একটি মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করেছি। এছাড়াও গত ৩ জুন সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে সংসদে বাজেট অধিবেশনের পূর্বে ঢাবি, রাবি, জবি, জাবি, পবিপ্রবি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কলেজের প্রায় দুই শতাধিক ছেলে-মেয়েরা মিলে ‘মৌন সমাবেশ’ করেছি।” 
 
৩২ বিষয়ক দাবি:
করোনায় শিক্ষার্থীদের প্রায় ২ বছর সময় জীবন থেকে অতিবাহিত হতে চলেছে। তাই করোনাকালীন সরকারের সকল প্রণোদনার পাশাপাশি মুজিববর্ষের ও স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির বছরে আমরা বেকার যুবকরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট ‘প্রণোদনা স্বরূপ’ সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ বছর করার দাবি জানাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন আওয়ামীলীগ সরকারের ২০১৮ সালে নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লিখিত ‘প্রতিশ্রুতি’ (বাস্তবতার নিরিখে যুক্তিসংগত ব্যবস্থা গ্রহণ) অনুযায়ী করোনাকালীন প্রণোদনা হিসেবে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-এ উন্নীত করার জোরালো দাবি ও আবেদন জানাচ্ছে এদেশের যুব সমাজ। করোনা জীবনের যে সময় কেড়ে নিচ্ছে এর চেয়ে বড় বাস্তবতা আর কি হতে পারে!

সোনালীনিউজ/এমএইচ

Wordbridge School
Link copied!