ঢাকা : করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়ে যাওয়ায় আগামী ১ জুলাই থেকে সারাদেশে সর্বাত্মক ‘লকডাউন’ ঘোষণা করেছে সরকার।
তবে এর আগে সোমবার (২৮ জুন) সকাল শুরু হয়েছে তিনদিনের সীমিত বিধিনিষেধ (লকডাউন)। আগামী বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত এই লকডাউন চলবে।
রোববার (২৭ জুন) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, লকডাউন চলাকালে দেশে পণ্যবাহী যানবাহন ও রিকশা ব্যতীত সব গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। রাজধানী ঢাকার ভেতরে কোনো ধরনের গণপরিবহন চলবে না। বন্ধ ধাকবে শপিংমল, মার্কেট, বিনোদন কেন্দ্র। হোটেল-রেস্তোরাঁ খোলা থাকলেও বসে খাওয়া যাবে না।
আজ সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকার রাস্তায় গণপরিবহন চলছে না, তবে অনেক ব্যক্তিগত গাড়ি ও রিকশা চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে। পরিবহনের অভাবে ঢাকার সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে অফিসগামী যাত্রীদের ভোগান্তির শিকার হতে দেখা গেছে। অনেকে দীর্ঘক্ষণ ধরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকেছেন কোনো যানবাহনের অপেক্ষায়।
গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকলেও খোলা রয়েছে সরকারি-বেসরকারি অফিস। অফিসগুলোকে তাদের কর্মী আনা-নেয়ার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। বহু প্রতিষ্ঠানই তা করেনি। ফলে অফিসগামীদের সেই ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
সকালে দেখা গেছে, কেউ কেউ রিকশা, রাইড শেয়ারিং মোটরসাইকেল, পণ্যবাহী যান, পিকআপে উঠেও অফিসে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। সাথে অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হয়েছে অফিসগামী মানুষের।
দেশে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণে আগের বিধিনিষেধের সাথে আরো কিছু নতুন শর্ত যোগ করে এই লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এর আগে, জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি ১৪ দিনের সম্পূর্ণ শাটডাউন দেয়ার সুপারিশ করেছিল।
তিন দিনের বিধিনিষেধে যে পাঁচ শর্ত দেওয়া হয়েছে, সেগুলো হচ্ছে—
(১) সারা দেশে পণ্যবাহী যানবাহন ও রিকশা ব্যতীত সব গণপরিবহণ বন্ধ থাকবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক নিয়মিত টহলের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।
(২) সব শপিংমল, মার্কেট, পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ থাকবে।
(৩) খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁ সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খাবার বিক্রয় (শুধু Online/Take way) করতে পারবে।
(৪) সরকারি-বেসরকারি অফিস/প্রতিষ্ঠানসমূহে শুধু প্রয়োজনীয়সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে নিজ নিজ অফিসের ব্যবস্থাপনায় তাদের আনা-নেওয়া করতে হবে।
(৫) জনসাধারণকে মাস্ক পরার জন্য আরও প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সম্প্রতি দেশে করোনাভাইরাসে মৃত্যু ও সংক্রমণ হার উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে গেছে। পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার সারা দেশে ১৪ দিনের পূর্ণ শাটডাউন দেওয়ার সুপারিশ করে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। সুপারিশের আলোকে সারা দেশে নতুন করে বিধিনিষেধ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। যদিও এর আগে থেকে বিধিনিষেধ জারি ছিল, যেটির মেয়াদ রয়েছে আগামী ১৫ জুলাই পর্যন্ত।
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :