ঢাকা : আজ থেকে সারা দেশে শিথিল করা হয়েছে স্বাস্থ্যবিধি। ফলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে সরকারি-বেসরকারি অফিস আদালত। খুলছে দোকানপাট ও শপিংমল। আর আসনের শতভাগ যাত্রী নিয়ে চলাচল করবে গণপরিবহন ও লঞ্চ। তবে গণপরিবহন বর্ধিত ভাড়া নিতে পারবে না। এমনকি দাঁড়িয়ে যাত্রী বহন করতে পারবে না।
সোমবার (৯ আগস্ট) বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এ নির্দেশনা দেয়। তবে এবার গণপরিবহনের ক্ষেত্রে অন্য নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয়েছে। আগে লকডাউন শিথিলের সময় অর্ধেক আসন ফাঁকা রাখার কথা বলা হলেও এবার আসন সংখ্যার সমান যাত্রী নিতে বলা হয়েছে। কিন্তু প্রতিদিন একটি অঞ্চলের মোট গণপরিবহনের অর্ধেক সড়কে নামানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন পরিবহন মালিকরা। সড়ক পরিবহনমন্ত্রীও ওই সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
পরিবহন কর্মীরা বলছেন, সরকার এ সিদ্ধান্ত কী করে বাস্তবায়ন করে সেটি দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন তারা।
গাবতলীতে আবদুল বাতেন নামে এক বাসচালক বলেন, আমার কোম্পানির কয়টা গাড়ি চলে সেটা তো আমি নিজেই জানি না। কে অর্ধেক বাস চালাইতাছে-এটা গুনবে কিভাবে? পুলিশ কী রাস্তায় বসে বসে কোম্পানির গাড়ি গুনবে? এখানে এমনও বাস মালিক আছে যাদের শুধু একটাই গাড়ি, তারা কি করবে?
যদিও গত সোমবার রাতে এক নির্দেশনায় বিআরটিএ বলছে, গণপরিবহন চলাচলের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিদিন মোট পরিবহন সংখ্যার অর্ধেক চালু করতে পারবে।
বিআরটিএর পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) শীতাশু শেখর বিশ্বাস স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় বলা হয়েছে, গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত সব নিয়ম মেনে চলতে হবে। তা না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, যাত্রী, চালক, সুপারভাইজার, কন্ডাক্টর, হেল্পার কাম ক্লিনার এবং টিকেট বিক্রয় কেন্দ্রের কর্মীদের মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে। তাদের জন্য প্রয়োজনীয় মাস্ক ও সেনিটাইজারের ব্যবস্থা করতে হবে।
বাস যাত্রার শুরু ও শেষে যানবাহন পরিচ্ছন্ন করতে হবে। জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। এছাড়া যাত্রীদের হাতব্যাগ, মালপত্র জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা করতে হবে মালিকদের।
এদিকে শতভাগ আসনে যাত্রী নিয়েই চলাচল করবে লঞ্চও। পাশাপাশি লঞ্চের বাড়তি ভাড়াও প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) সচিবালয়ে এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভাশেষে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বুধবার থেকে শতভাগ আসনে যাত্রী নিয়ে লঞ্চ চলবে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে লঞ্চের ভাড়া বাড়ানোর যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। নতুন করে লঞ্চের ভাড়া বাড়ছে না বলেও জানান তিনি।
এদিকে সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বুধবার (১১ আগস্ট) কঠোর লকডাউনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। খুলে দেওয়া হয়েছে অফিস-আদালত। তাইতো কর্মস্থলে যোগ দিতে একদিন আগেই গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীতে ফিরেছে মানুষ।
গণপরিবহন চালু না হলেও ভেঙে ভেঙে প্রাইভেটকার-মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন ব্যবহার করে দূর থেকে রাজধানীতে আসেন তারা।
মঙ্গলবার রাজধানীর গাবতলী এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। বিভিন্ন যানবাহন বিশেষ করে যারা ব্যক্তিগত যানবাহন দিয়ে রাজধানীতে ঢুকে, তাদের পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হয়।
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :