ঢাকা : দেশের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে এক হাজার ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই ধাপে ৩৩টি ইউপিতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এবং বাকিগুলোতে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হয়েছে।
ভোটগ্রহণ রোববার (২৮ নভেম্বর) সকাল ৮টায় শুরু হয়ে বিরতিহীনভাবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে। দিনভর জাল ভোট, ভোট বর্জন, ব্যালট পেপার ছিনতাই ও হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে দেশের বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে। ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের খবর:
পাবনা: নির্বাচনে নৌকা মার্কার প্রার্থী আসিফ শামস রঞ্জন ২১ হাজার ৮৮৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নারিকেল গাছ মার্কার প্রার্থী আব্দুল বাতেন পেয়েছে ৩ হাজার ৬৬০ ভোট।
এছাড়া রেলইঞ্জিন মার্কার প্রার্থী এস এম ফজলুর রহমান মাসুদ পেয়েছে ৩ হাজার ৪৭৯ ভোট, জগ মার্কার এস এম আব্দুল্লাহ পেয়েছে ৮১৭ ও মোবাইল মার্কার প্রার্থী সাদিয়া আলম পেয়েছে ২২৫ ভোট।
বেড়া পৌরসভার মোট ভোটার সংখ্যা ৪২ হাজার ৮১৮ জন। এর আগে সকাল ৮টা থেকে ১০টি ওয়ার্ডে ১৮টি কেন্দ্রে পৌরসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিরতিহীন ভাবে ভোটগ্রহণ চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
কুমিল্লা: কুমিল্লার ৩ উপজেলায় ৩০ টি ইউনিয়নের মধ্যে ১৬ ইউনিয়নে নৌকা ও ১৪ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী জয়লাভ করেছে।
কুমিল্লার বরুড়া উপজেলা ৯ টি ইউনিয়নে ৬ টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নৌকা প্রতিক নিয়ে জয়লাভ করেছে। ২ টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয় হয়েছে। ১ টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী এগিয়ে রয়েছে বলে বেসরকারী সুত্রে জানা যায়।
নৌকা প্রতীক নিয়ে জয়লাভ যারা করেছেন তারা হলেন, ভবানীপুর ইউনিয়নে মোঃ খলিলুর রহমান, খোশবাস উত্তর ইউনিয়নে মোঃ নাজমুল হাসান সর্দার, চিতড্ডা ইউনিয়নে মোঃ জাকারিয়া, আড্ডা ইউনিয়নে মোঃ জাকির হোসেন বাদল, পয়ালগাছা ইউনিয়নে সৈয়দ মাহিন উদ্দিন ও লক্ষীপুর ইউনিয়নে মোঃ আবুল হাসেম। স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়লাভ করেছেন মোঃ মাজহারুল ইসলাম মিঠু, রাকিবুল হাসান লিমন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী এগিয়ে আছেন ঝলম ইউনিয়নে মোঃ নুরুল ইসলাম। ডেউয়াতলী কেন্দ্র স্থগিত হওয়ায় পুনরায় ভোট হবে বলে জানা যায়। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ আবদুল বাতেনের চেয়ে নুরুল ইসলাম ৮ শ ভোট বেশী পেয়ে এগিয়ে আছে। এই কেন্দ্রে ২২০০ ভোট।
ঝিনাইদহ: কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন, উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ১ লাখ ৮৭ হাজার ৮২৫ জন ভোটার। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৯৫ হাজার ৩৭৪ জন এবং নারী ভোটার ৯২ হাজার ৪৫১ জন। ইউপি চেয়ারম্যান পদে ২৯ জন, পুরুষ সদস্য পদে ৩১৫ জন ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৯৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
৯নং জামাল ইউনিয়নে মোদাচ্ছের হোসেন ( নৌকা), ৩নং আলাউদ্দীন আল আজাদ (স্বতন্ত্র), ৪ নং নিয়ামতপুর ইউনিয়নে রাজু আহমেদ রনি (নৌকা),৫ নং সিমলা রোকনপুর ইউনিয়নে নাছির উদ্দীন (নৌকা), ৬ নং ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নে নজরুল ইসলাম রিতু (স্বতন্ত্র), ৮ নং মালিয়াট ইউনিয়নে আজিজুল খাঁ ( স্বতন্ত্র), ১০ নং কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়নে আয়ুব হোসেন ( নৌকা) বেসরকারিভাবে নির্বাচিত।
রংপুর: রংপুরের পীরগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো মেয়র হয়েছেন আবু সালেহ মো. তাজিমুল ইসলাম শামীম। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী ড. ওয়াজেদ মিয়ার বড় ভাইয়ের ছেলে।
রোববার এ পৌরসভায় নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ৭ হাজার ৭০৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন শামীম। রাত ৮টার দিকে রংপুরের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন এ ফল ঘোষণা করেন।
নির্বাচনে শামীমের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী সুলতান মিয়া পেয়েছেন ২ হাজার ৬৬০ ভোট। আর লাঙ্গল প্রতীকে জাহেদুল ইসলাম পেয়েছেন ১ হাজার ১৪২ ভোট।
নীলফামারী: নীলফামারী পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী দেওয়ান কামাল আহম্মেদ ষষ্ঠবারের মতো জয় পেয়েছেন।
বেসরকারিভাবে ঘোষিত ফলাফলে ১৩ হাজার ৪৪৫ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন নৌকা প্রতীকের এ প্রার্থী। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নারিকেল গাছ প্রতীকের প্রার্থী নুরুজ্জামান বুলেট পেয়েছেন ১০ হাজার ১১৩ ভোট।
মৌলভীবাজার: শ্রীমঙ্গল পৌরসভায় নৌকার প্রার্থীকে হারিয়ে ফের মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন মহসিন মিয়া মধু। রোববার (২৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নির্বাচনে বিএনপি নেতা মহসিন মিয়া মধু পেয়েছেন পাঁচ হাজার ৯৮৯ ভোট।তার প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সৈয়দ মনসুরুল হক পেয়েছেন পাঁচ হাজার ৫৩২ ভোট।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৩ উপজেলার ৩৩ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের বেসরকারীভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
বাঞ্ছারামপুর থানা, আওয়ামী লীগ-১১ টি। নবীনগরে আওয়ামী লীগ- ৫, আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী- ০৭ টি, বিএনপি- ০১ টি। সরাইল থানা আওয়ামী লীগ- ২ টি, আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী- ২টি, বিএনপি-৩ টি, জাতীয় পার্টি- ১টি, জাতীয় পার্টির স্বতন্ত্র-১টি।
জয়ী প্রার্থীরা হচ্ছেন নবীনগরের বীরগাও ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের আনোয়ার,নবীনগর পূর্ব ইউনিয়নে স্বতন্ত্র মো: হেলাল উদ্দিন,পশ্চিম ইউনিয়নে স্বতন্ত্র মো: নূর আলম,রসুল্লাবাদ পূর্ব ইউনিয়নে স্বতন্ত্র খন্দকার মনির হোসেন,শ্রীরামপুর পূর্ব ইউনিয়নে স্বতন্ত্র জাকি উদ্দিন,জিনদপুরে স্বতন্ত্র মো: রবিউল,লাউরফতেপুরে স্বতন্ত্র মো:জাহাঙ্গীর আলম,সাতমোড়া ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের জসিম উদ্দিন আহমেদ,ইব্রাহিমপুরে আওয়ামীলীগের মো: আবু মুছা,সলিমগঞ্জ ইউনিয়নে স্বতন্ত্র মো: আশিকুর রহমান,রতনপুর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র গোলাম মোস্তফা মারুফ,শ্যামগ্রামে আওয়ামীলীগের শামসুজ্জামান খান,বাঞ্ছারামপুর উপজেলার বাঞ্ছারামপুর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের আবদুর রহিম,তেজখালীতে আওয়ামীলীগের একেএম শহিদুল হক বাবুল,ফরদাবাদ ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের মো:রাশিদুল ইসলাম,সরাইল উপজেলার শাহজাদাপুর ও শাহবাজপুর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ প্রার্থী ছাড়া বাকী ৬ ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হন। শাহবাজপুরে খায়রুল হুদা চৌধুরী বাদল,শাহজাদাপুরে মোসাম্মৎ আক্তার,অরুয়াইলে জাতীয় পার্টির মোশাররফ হোসেন ভূইয়া,চুন্টাতে স্বতন্ত্র হুমায়ুন কবির,পাকশিমুলে কাউসার হোসেন,সরাইল সদরে আবদুল জব্বার,পানিশ্বর উত্তর ইউনিয়নে মো:মোস্তাফিজুর রহমান,নোয়াগাও ইউনিয়নে মনসুর আহমেদ,কালিকচ্ছ ইউনিয়নে মো: ছায়েদ হোসেন নির্বাচিত হন।
নোয়াখালী: নোয়াখালীর সেনবাগ পৌরসভার মেয়র ও চার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের ভরাডুবি হয়েছে।
ভোট গণনা শেষে রোববার (২৮ নভেম্বর) রাতে বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করেন সেনবাগ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. আরিফুল ইসলাম।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আরও বলেন, ছাতারপাইয়া ইউনিয়নে বিএনপি দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আবদুর রহমান (আনারস), কাদরা ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) মো. গিয়াস উদ্দিন ভূঁইয়া (আনারস), কাবিলপুর ইউনিয়নে বিএনপি দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আনোয়ার হোসেন বাহার (টেলিফোন), বীজবাগ ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) সেলিম উদ্দিন কাজল (আনারস) বিজয়ী হয়েছেন।
এর আগে ৩ নম্বর ডুমুরুয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী শওকত হোসেন কানন নৌকা প্রতীক নিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেছেন।
বরগুনা: তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে বরগুনার পাথরঘাটায় চারটি ইউনিয়নে বিপুল ভোটে নৌকা বিজয়ী হয়েছে।
নৌকা প্রতীকের বিজয়ী চেয়ারম্যানরা হলেন-পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নে আলমগীর হোসেন, রায়হানপুর ইউনিয়নে মাইনুল ইসলাম, নাচনাপাড়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ফরিদ মিয়া এবং চরদুয়ানী ইউনিয়নে (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়)আব্দুর রহমান জুয়েল।
সন্ধ্যায় রির্টানিং কর্মকর্তা আইয়ুব আলী হাওলাদার এ ফলাফল ঘোষণা করেন।
পাথরঘাটায় চারটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নয়জন, সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৪৪ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ১৩৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
নড়াইল: নড়াইলের কালিয়ায় ১০ ইউনিয়নে স্বতন্ত্র ও দুটিতে নৌকার প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। রোববার (২৮ নভেম্বর) রাতে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ওয়ালি উল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উপজেলার ১২ ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। উপজেলার কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, নৌকা প্রতীক নিয়ে উপজেলার হামিদপুর ইউনিয়নে পলি বেগমও মাউলী ইউনিয়নে রোজী হক বিজয়ী হয়েছেন।
অপরদিকে স্বতন্ত্রপ্রার্থী উপজেলার কলাবাড়ীয়া ইউনিয়নে মাহমুদুল হাসান কায়েস, বাবরা-হাচলা ইউনিয়নে মো. মোজাম্মেল হোসেন, চাচুড়ি ইউনিয়নে মেলজার হোসেন ভূঁইয়া, পুরুলিয়া ইউনিয়নে আমিনুল ইসলাম, সালামাবাদ ইউনিয়নে মাহবুবুর মোল্যা, ইলিয়াচাবাদ ইউনিয়নে মল্লিক মানিরুল ইসলাম, বাঐশোনা ইউনিয়নে মো. চুন্নু শেখ, পহরডাঙ্গা ইউনিয়নে মল্লিক মাহামুদুল ইসলাম, জয়নগর ইউনিয়নে কাজী আইয়ুব হোসেন ও খাশিয়াল ইউনিয়নে বিএম বরকত উল্লাহ নির্বাচিত হয়েছেন।
রাজশাহী: তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত রাজশাহীর ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে ১০টিতেই চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন। বাকি তিনটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন।
রোববার (২৮ নভেম্বর) জেলার পবা উপজেলার ৭টি এবং মোহনপুর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে নির্বাচন হয়েছে। সকাল ৮টায় এই দুই উপজেলার ১২৬টি কেন্দ্রে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই বিকেল ৪টায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়। ভোট গণনা শেষে রাতে বেসরকারিভাবে ফলাফল ঘোষণা করে নির্বাচন অফিস।
পবা উপজেলার ৭ ইউনিয়নের ৪টিতে জয়লাভ করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। এরা হলেন- হুজুরীপাড়ায় গোলাম মোস্তফা, দামকুড়ায় রফিকুল ইসলাম ও বড়গাছীতে শাহাদত হোসাইন সাগর। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হরিপুরে জয়লাভ করেছেন বজলে রেজবি আল হাসান মুঞ্জিল।
এছাড়া দর্শনপাড়ায় শাহাদত হোসেন সাব্বির (আনারস), পারিলায় সাঈদ আলী মোরশেদ (ঘোড়া) এবং হড়গ্রাম ইউনিয়নে আবুল কালাম আজাদ (অটোরিকশা) বিজয়ী হয়েছেন। এদের মধ্যে সাব্বির ও মোরশেদ আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী হয়ে নির্বাচনে অংশ নেন। আর আবুল কালাম আজাদ জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নেন।
এদিকে মোহনপুর উপজেলার ৬ ইউনিয়নের সবকটিতেই জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। এরা হলেন- মৌগাছি ইউনিয়নে আল আমিন বিশ্বাস, ধুরইলে দেলোয়ার হোসেন, রায়ঘাটিতে বাবুল হোসেন, ঘাষিগ্রামে আজহারুল ইসলাম, বাকশিমইলে আব্দুল মান্নান ও জাহানাবাদ ইউনিয়নে হযরত আলী বেসরকারীভাবে নির্বাচিত হন।
হিলি: দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় ৭টি ইউনিয়নে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ব্যালট পেপরের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হয়। চারটিতে স্বতন্ত্র এবং তিনটিতে আওয়ামীলীগ প্রার্থী বিজয় লাভ করেন।
চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিতরা হলেন, ১নং মুকুন্দপুর ইউপিতে আবুল কালাম আজাদ (স্বতন্ত্র), ২নং কাটলা ইউপিতে ইউনুছ আলী (আওয়ামী লীগ), ৩নং খাঁনপুর ইউপিতে চিত্ত রঞ্জন পাহান (আওয়া মীলীগ), ৪নং দিওড় ইউপিতে আব্দুল মালেক (স্বতন্ত্র), ৫নং বিনাইল ইউপিতে হুমায়ন কবীর বাদশা (স্বতন্ত্র), ৬নং জোতবানী ইউপিতে আব্দুর রাজ্জাক (স্বতন্ত্র) এবং ৭নং পলিপ্রয়াগপুর ইউপিতে রহমত আলী (আওয়ামী লীগ)।
উল্লেখ্য, বিরামপুর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ২২ জন, সাধারণ সদস্য (পুরুষ) ২১৫ জন এবং সংরক্ষিত নারী আসনে ৭২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। মোট ভোটার ছিলো ১ লাখ ৪ হাজার ৫২২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছে ৫২ হাজার ৫০৯ জন এবং নারী ভোটার রয়েছেন ৫২ হাজার ১৭ জন।
দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে নৌকার ভরাডুবি। ৯টি ইউনিয়ের মধ্যে ১টিতে নৌকা ৮টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয় লাভ করেছেন।
ইউনিয়নের বিজয়ীরা হলেন, ১নং জয়পুর ইউনিয়নে ওবায়দুর রহমান (সতন্ত্র), ২নং বিনোদনগড় ইউনিয়নে নজরুল ইসলাম (স্বতন্ত্র, ৩নং গোলাপগঞ্জ ইউনিয়নে রাশেদুল কবির (স্বতন্ত্র), ৪নং শালখুরিয়া ইউনিয়নে তারা মিয়া (সতন্ত্র), ৫নং পুটিমারা ইউনিয়নে আনিছুর রহমান (স্বতন্ত্র), ৬নং ভাদুরিয়া ইউনিয়নে বাবুল আহসানুল কবির (আওয়ামীলীগ), ৭নং দাউদপুর ইউনিয়নে আহসান হাবিব (স্বতন্ত্র), ৮নং মাহমুদপুর ইউনিয়নে হাছান মোঃ ছালাহ উদ্দিন (সতন্ত্র) এবং ৯নং কুশদহ ইউনিয়নে আনোয়ারুল আজিম (স্বতন্ত্র)।
উল্লেখ্য, তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ব্যালটের মাধ্যমে টানা ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়। চেয়ারম্যান পদে ৪১ জন, সদস্য পদে ৩১৩ জন এবং মহিলা সংরক্ষিত পদে ১১৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। মোট ভোটার ছিলেন ১ লাখ ৮০ হাজার ৮৩৩ জন।
জয়পুরহাট: জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই ৫ ইউনিয়নে ৪ জন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। এর আগে আরেক ইউনিয়ের আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। সব মিলিয়ে পাঁচ ইউনিয়নের সবকটিতে আওয়ামী লীগের জয় হয়েছে এবং তারা সকলেই বর্তমান চেয়ারম্যান।
রোববার (২৮ নভেম্বর) রাতে কালাই উপজেলার সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নির্বাচনে বিজয়ীরা হলেন- কালাই উপজেলার মাত্রাই ইউনিয়নে শওকত হাবিব তালুকদার (নৌকা), আহম্মেদাবাদে আলী আকবর মন্ডল (নৌকা), উদয়পুরে মো, ওয়াজেদ আলী (নৌকা) ও জিন্দারপুর ইউনিয়নে জিয়াউর রহমান (নৌকা)। পুনট ইউনিয়নে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামী লীগ মনোনীত আব্দুল কুদ্দুস ফকিরকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে জাগীর ও গড়পাড়া ইউনিয়ন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. জাকির হোসেন ও আফসার উদ্দিন সরকার। অন্য ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে দুটিতে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের দুই বিদ্রোহী প্রার্থী এবং ৬টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
রোববার (২৮ নভেম্বর) রাতে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সাহিদ হোসেন বেসরকারিভাবে এ ফলাফল ঘোষণা করেন।
চেয়ারম্যান পদে বিজয়ীরা হলেন- দিঘী ইউনিয়নে আখতার উদ্দিন আহমেদ রাজা (মোটরসাইকেল), নবগ্রামে গাজী হাসান আল মেহেদী সুহাস (নৌকা), পুটাইলে মহিদুর রহমান মহিদ (নৌকা), ভাড়ারিয়ায় আব্দুল জলিল (নৌকা), হাটিপাড়ায় গোলাম মনির হোসেন (নৌকা), কৃষ্ণপুর ইউনিয়নে বিপ্লব হোসেন সেলিম (নৌকা), আটিগ্রামে নূর-এ-আলম সরকার (নৌকা) ও বেতিলা-মিতরা ইউনিয়নে আসমত আলী (আনারস)।
সুনামগঞ্জ: তৃতীয় ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জ সদর ও দক্ষিণ উপজেলায় আওয়ামী বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নির্বাচনী ঘুর্ণিঝড়ে নৌকার ভরাডুবি হয়েছে। দুই উপজেলার ১৭ ইউনিয়নে আ.লীগ কেবল দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপেজলার দুই ইউনিয়নে জয় হয়েছেন। ৫ টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী, ২ জাতীয় পার্টি ১ টিতে ও ৯ টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন ।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়ন লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থী রশীদ আহমদ ও রঙ্গারচর ইউনিয়নে মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে দ্বিতীয়বারের ন্যায় আব্দুল হাই, আওয়ামীলীগ বিদ্রোহী হিসেবে সুরমা ইউনিয়নে আমীর হোসেন রেজা, লক্ষণশ্রী ইউনিয়নে আনারস প্রর্তীক নিয়ে টানা তিনবারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচন হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল ওয়াদুদ, কুরবাননগর ইউনিয়নে মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে টানা তিন বারের ন্যায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল বরকত, গৌরারং ইউনিয়নে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে শওকত ইসলাম, মোহনপুর ইউনিয়নে মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী মঈন উল হক, মোল্লাপাড়া ইউনিয়নে মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে টানা তিনবারের ন্যায় চেয়ারম্যান বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী নুরুল হক।
পিরোজপুর: পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার সয়না রঘুনাথপুর ইউনিয়নে চশমা প্রতীক নিয়ে ২ হাজার ৬০১ ভোট পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো: আবু সাঈদ বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বাই সাইকেল প্রতিকের এলিজা সাঈদ পেয়েছেন ২ হাজার ১০৫ ভোট।
অন্যদিকে চিরাপাড়া- পারসাতুরিয়া ইউনিয়নে চশমা প্রতিক নিয়ে ২ হাজার ২৭৬ ভোট পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো: লাইকুজ্জামান মিন্টু বেসরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বাই সাইকেল প্রতিকের মো: বজলুর রহমান খান পেয়েছেন ১ হাজার ৯২৮ ভোট।
রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটি জেলার ৩টি উপজেলার ৮ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ৪ টিতে বিনাপ্রতিদ্বন্ধতা এবং আজ নির্বাচনে ৩টি আওয়ামী লীগ ও ১টি স্বতন্ত্র প্রার্থীর জয় লাভ।
শেরপুর: শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার ১২ ইউনিয়ন পরিষদের ফলাফলে নৌকা ৫টি, স্বতন্ত্র ৭টি ইউনিয়নে বিজয়ী হয়েছেন।
নওগাঁ: নওগাঁর মান্দা এবং বদলগাছি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মান্দা উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে ১নং ভারশো ইউনিয়ন মোস্তাফিজুর রহমান নৌকা প্রতিকে, ২নং ভালাইন ইউনিয়ন গোলাম মোস্তফা আঃ বিদ্রোহী, ৩ নং পরানপুর ইউনিয়ন মোঃ উজ্জ্বল নৌকা, ৪ং মান্দা ইউনিয়ন তোফাজ্জল হোসেন স্বতন্ত্র জামাত, ৫নং গনেশপুর ইউনিয়ন বাবুল চৌধুরী স্বতন্ত্র বিএনপি, ৬নং মৈনুম ইউনিয়ন আনিছুর রহমান আঃ বিদ্রোহী, ৭নং প্রসাদপুর ইউনিয়ন আঃ মতিন স্বতন্ত্র বিএনপি, ৮নং কুসুম্বা ইউনিয়ন নওফেল স্বতন্ত্র বিএনপি, ৯নং তেতুলিয়া ইউনিয়ন এস এম মোখলেছুর রহমান স্বতন্ত্র জামাত, নুরুল্যাবাদ ইউনিয়ন মোঃ ইয়াচিন স্বতন্ত্র জামাত, ১১নং কালিকাপুর ইউনিয়ন আশরাফুল ইসলাম বাবু স্বতন্ত্র বিএনপি, ১২নং কাশোপাড়া ইউনিয়ন আব্দুস সালাম আঃ বিদ্রোহী, ১৩নং কসব ইউনিয়ন ফজলুর রহমান নৌকা এবং গোলাম আজম আঃ বিদ্রোহী প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছেন।
চুয়াডাঙ্গা : চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। এতে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী (নৌকা) ৫ জন ও ৮ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়লাভ করেছেন।
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :