ঢাকা : অন্য দেশ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান যখন বাংলাদেশের বিনিয়োগ প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছে না, তখন ‘টাকার ঝুড়ি’ নিয়ে এগিয়ে এসেছে চীন। তাদের প্রস্তাবও সাশ্রয়ী। এ ক্ষেত্রে কী করা উচিত- এমন প্রশ্ন তুলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
হিন্দুস্তান টাইমস এক প্রতিবেদনে জানায়, মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে বক্তব্যে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একই সঙ্গে প্রশ্ন তুলেছেন, চীন বাংলাদেশকে যেভাবে আর্থিক সহায়তা দেয়, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন কোয়াড জোটগুলো তেমনটা দিতে পারবে কি না।
তিন দিনব্যাপী মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন শুরু হয়েছে শুক্রবার। শনিবার রাতে প্যানেল আলোচনার বিষয় ছিল ‘ইন্দো-প্যাসিফিকে আঞ্চলিক ব্যবস্থা ও নিরাপত্তায় বড় পরিবর্তন।
সম্মেলনে মোমেন বলেন, ‘অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ ভালো করছে। দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষাও বেড়ে গেছে। তারা আরও উন্নত জীবন, সুযোগ-সুবিধা ও অবকাঠামো চায়। কিন্তু বাংলাদেশের যথেষ্ট টাকা ও প্রযুক্তি নেই।’
অবকাঠামো উন্নয়নে সহযোগিতা ও ঋণের জন্য জাপান ও ভারতকে ধন্যবাদ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বিকল্প হিসেবে টাকার ঝুড়ি নিয়ে এগিয়ে এসেছে চীন। তারা সাশ্রয়ী প্রস্তাব নিয়ে এগিয়ে এসেছে। এখন বিষয় হলো-আমরা কী করব?
‘উন্নয়ন সহযোগীদের থেকে আরও তহবিল দরকার। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে বহু শর্তের বেড়াজালে এসব ঋণ আসে। পরে তা সামাল দেয়া খুবই কঠিন।’
প্যানেলের প্রতি প্রশ্ন রেখে মোমেন বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বড় ঋণদাতা বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। তবে উন্নয়ন প্রক্রিয়া দ্রুত হওয়ায় এখন আমরা অন্যদের থেকেও অর্থায়ন পাওয়ার চেষ্টা করছি। এখান থেকে কি চাইলেই সহজে বের হয়ে আসা সম্ভব?’
মোমেনের প্রশ্নের জবাবে চীনের নাম না নিয়ে সতর্ক করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামনিয়াম জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, ‘অনেক দেশ এমনকি আমাদের অঞ্চলেও কয়েকটি দেশের ওপর এখন ঋণের বোঝা চাপিয়ে দিতে দেখছি। যে বিমানবন্দরে একটি বিমানও অবতরণ করবে না বা যে বন্দরে একটি জাহাজও আসবে না, টেকসই নয়- এমন সব প্রকল্প নেয়া হচ্ছে।’
জয়শঙ্কর সতর্ক করে বলেন, ‘এই ঋণ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্যও উদ্বেগের। যে দেশগুলো ঋণ নিচ্ছে তাদের নিজ স্বার্থেই সচেতন থাকতে হবে। কারণ টেকসই নয় এমন প্রকল্পের প্রভাব সুদূরপ্রসারী। এর হাত ধরে সৃষ্টি হয় দেনার সম্পদ। পরে আবার তা অন্য কিছুতে পরিণত হয়।’
‘আমি মনে করি, অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক সিদ্ধান্ত জেনে-বুঝে নেয়া আমাদের সবার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।’
আলোচনায় আরও অংশ নেন যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের ইউরোপ ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা সহযোগিতাবিষয়ক সাব-কমিটির জ্যেষ্ঠ সিনেটর জিনি শাহিন, অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মরিস পেইন ও জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হায়াশি ইয়োশিমাসা।
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :