ঢাকা : নির্বাচন কমিশন গঠনে ১০ জনের নাম চূড়ান্ত হবে আজ। তবে নাম প্রকাশ করবে না বলে জানিয়েছেন কমিটির সভাপতি বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
তিনি আরও জানান, ৩২২ জনের নাম প্রাথমিকভাবে জমা পড়েছিলো। কমিটির পঞ্চম সভায় ২০ জনের নাম চূড়ান্ত করা হয়। সার্চ কমিটি সংবিধান এবং আইন মেনে চলার শপথ নিয়েছে বলে জানান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। তাই কারো নাম প্রকাশ করা হবে না এখন বলে জানান তিনি।
সুপারিশ করা নামের বাইরে সার্চ কমিটির নাম দেয়ার এখতিয়ার আছে, তবে কমিটি তা করতে চায় না বলেও জানান তিনি। গত ১৪ই ফেব্রুয়ারি সার্চ কমিটির দাপ্তরিক সহযোগী মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রস্তাবিত ৩২২ জনের নাম প্রকাশ করা হয়।
বৈঠকে ১০ জনের তালিকা চূড়ান্ত করা হবে। প্রস্তাবিত এই তালিকা আগামীকাল বুধবার রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেওয়া হতে পারে। এর আগে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার অনুমতি চাইবে কমিটি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার (ইসি) পদে ব্যক্তিগত পর্যায়ে ও নিবন্ধিত ৩৯টি রাজনৈতিক দলের কাছে নাম চেয়েছিল অনুসন্ধান কমিটি। এতে ৩২০ জনের নাম জমা পড়ে। সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠকে কমিটির কাছে আরো অন্তত ১০ জনের নাম জমা পড়ে। এর মধ্য থেকে অনুসন্ধান কমিটি প্রথমে ৫০ জনের তালিকা করে। পরে কাটছাঁট করে তালিকা ২০ জনে নামিয়ে আনে। গত রবিবারের বৈঠকে সেখান থেকে ১২ থেকে ১৩ জনের নাম রাখা হয়। আজ সেই তালিকা থেকে ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করা হবে। এই ১০ জনের মধ্যে একজনকে সিইসি ও অন্য চারজনকে ইসি পদে নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপতি।
জানা গেছে, তালিকায় থাকা ১২ থেকে ১৩ জনের মধ্যে সাবেক সিনিয়র সচিব, সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা, বিচার বিভাগের সাবেক কর্মকর্তা ও কয়েকজন নারীসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা রয়েছেন।
ব্যাপক আলোচনার মধ্যে ইসি গঠনে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন’ গত ২৭ জানুয়ারি সংসদে পাস হয়। এরপর গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে প্রধান করে অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেন।
অনুসন্ধান কমিটি গঠনের পর গত ১৫ দিনে গত রবিবার পর্যন্ত ১০টি সভা হয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি সভা করেছেন কমিটির সদস্যরা নিজের মধ্যে, অন্য চারটি বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে। আজই কমিটির শেষ সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
গত রবিবার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কমিটির প্রধান বলেন, ‘১০ জনের নাম আমরা প্রকাশ করব না। এটি রাষ্ট্রপতির ডোমেইন (অধিক্ষেত্র)। মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে দিলে তিনি যদি বলেন আপনারা প্রকাশ করুন, তাহলে আমরা প্রকাশ করব। এটি তাঁর সম্পত্তি, তাঁর কাছেই দিতে হবে। আমাদের প্রকাশ করার কোনো অধিকার আইনে নেই। ’
এর আগে ২০১২ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি বঙ্গভবনে সার্চ কমিটির পক্ষে তৎকালীন মন্ত্রিপরিষদসচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রস্তাবিত চূড়ান্ত ১০ জনের নামের তালিকা প্রাকাশ করেন। এতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে সাবেক মন্ত্রিপরিষদসচিব আলী ইমাম মজুমদার ও সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব কাজী রকিবউদ্দীনের নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল। পাশাপাশি চারজন কমিশনার হিসেবে একজন নারীসহ আটটি নাম সুপারিশ করা হয়। ওই সুপারিশ থেকে কাজী রকিবকে সিইসি এবং অন্য চারজনকে কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
১০ জনের নাম প্রকাশের আগে অনুসন্ধান কমিটি তত্কালীন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ জিল্লুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তালিকাটি হস্তান্তর করে। ২০১৭ সালেও বিশিষ্ট নাগরিকরা অনুসন্ধান কমিটির কাছে চূড়ান্ত তালিকার ১০ জনের নাম প্রকাশের প্রস্তাব করেছিলেন। কিন্তু বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনে নেতৃত্বাধীন কমিটি সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেনি।
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :