• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১
ভোজ্যতেলের বাজার নিয়ন্ত্রণ

আজ থেকে সমন্বিত অভিযান শুরু


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ৬, ২০২২, ০১:৫৫ পিএম
আজ থেকে সমন্বিত অভিযান শুরু

ঢাকা : বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বেড়েই চলেছে। এই সুযোগে রাজধানীর বাজারগুলো থেকে হঠাৎ উধাও হয়ে গেছে সয়াবিন তেল। বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া গেলেও সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক বেশিতে বিক্রি হচ্ছে। তাই বাজার নিয়ন্ত্রণে রোববার (৬ মার্চ) থেকে সাঁড়াশি অভিযানে নামছে সরকারের ১৪টি সংস্থার সমন্বিত টিম।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অভিযান পরিচালনার জন্য এরই মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চারটি বিশেষ টিম গঠন করেছে। আর জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর গঠন করেছে আরও ৬টি বিশেষ টিম।

এছাড়া, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদারকি টিমসহ মন্ত্রণালয়ের আওতায় বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, পুলিশ, র্যাব, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ও আনসার বাহিনী মাঠে নামবে।

এর বাইরে শিল্প মন্ত্রণালয়ের তদারকি টিম, বিএসটিআই, কৃষি মন্ত্রণালয়ের তদারকি টিম, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আওতায় সিটি করপোরেশন, পৌরসভা এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আওতায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ মোট ১৪ সংস্থা মাঠে থাকবে।

সামনে আসছে রমজান মাস, আর এসব কিছু মাথায় রেখেই নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের নির্ধারিত দামের চেয়ে বাড়তি দাম রাখলে ব্যবসয়ীদের বিরুদ্ধে ‘অ্যাকশন’ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। গত বুধবার তিনি ব্যবসায়ীদের এ হুঁশিয়ারি দেন। তবে গত বুধবার বাণিজ্যমন্ত্রী নতুন করে সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর বিষয়ে ব্যবসায়ীদের প্রস্তাব নাকচ করার পরই একশ্রেণির ব্যবসায়ী ভোজ্যতেলের বাজারে এ অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে বলে ধারণা করে হচ্ছে।

এর আগে ভোজ্যতেল বিপণনকারী কোম্পানিগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার অ্যাসোসিয়েশন গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে সয়াবিন তেলের দাম লিটারে আরো ১২ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করে। ওই প্রস্তাবে ১ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের নতুন দাম ১৮০ টাকা নির্ধারণের কথা বলা হয়েছে। আর ৫ লিটার সয়াবিন তেলের দাম ৮৭০ টাকা করার কথা বলা হয়েছে। নতুন প্রস্তাবে খোলা সয়াবিন ও পামঅয়েলের দামও বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।

তবে কোনোটাই মানছেন না ব্যবসায়ীরা বাজারে এখন এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া গেলেও বিক্রেতারা সরকারের বেঁধে দেওয়া দর না মেনে বিক্রি করছেন সর্বোচ্চ ১৮০ থেকে সর্বোচ্চ ২০০ টাকায়। আর এ পরিস্থিতি সামাল দিতে সাঁড়াশি অভিযানে মাঠে নামছে সরকারের ১৪টি সংস্থার তদারকি টিম। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে আজ থেকে টিমের সদস্যরা অভিযান কার্যক্রম শুরু করবেন। সংস্থাগুলো তেলের সরবরাহ, মজুত, পাইকারি ও খুচরা দোকানগুলোতে সংকটের কারণ খতিয়ে দেখবে।

একই সঙ্গে কোম্পানিগুলো থেকে তেলের সরবরাহ কমার কারণ পর্যালোচনা করা হবে। পাশাপাশি আমদানি কত হয়েছে তা জানতে চিঠি দেওয়া হয়েছে। অভিযানকালে অনিয়ম পেলে জরিমানা, প্রতিষ্ঠান সিলগালাসহ অসাধুদের জেলে পাঠানোর হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

ইতোমধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সারা দেশে সয়াবিন তেলের চাহিদা, আমদানি, সরবরাহ ও মজুদের তথ্য সংগ্রহ করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করছে। এটি তৈরি করতে তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বিভিন্ন কোম্পানিগুলো থেকে তথ্য নিয়েছে। এতে কোন জেলায় কি পরিমাণে তেল সরবরাহ করা হয়েছে সে তথ্যও রয়েছে। এসব তথ্য জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে- সয়াবিন তেলের বেআইনি মজুতকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। এ কারণে এবারের অভিযানে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ধারায় মামলার পাশাপাশি জরিমানা ও প্রতিষ্ঠান সিলগালা করা হবে। সয়াবিনের বেআইনি মজুত করার দায়ে নিয়োমিত বাজার তদারকিতে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে সিলগালা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তর।

এদিকে সরবরাহ সংকটের কারণে গত বুধবার দুপুর থেকে সন্ধ্যার মধ্যে প্রতি লিটার সয়াবিনের দাম গড়ে ২০ থেকে ২৫ টাকা বেড়েছে। দুপুরের দিকে প্রতি লিটার ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকায় পাওয়া যায়। ওইদিন সন্ধ্যায় ১৯০ থেকে ২০৫ টাকা বিক্রি হয়েছে। গতকাল শনিবার খুচরা বাজারেও ছিল একই চিত্র। ওইদিন প্রতিলিটার বোতলজাত সয়াবিন কিনতে ক্রেতাকে ১৮০-২০০ টাকা পর্যন্ত গুনতে হয়েছে। পাশাপাশি বাজারে কোনো খোলা সয়াবিন তেল নেই।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!