ঢাকা: নমব পে-কমিশন গঠনসহ ৭ দফা দাবিতে ফের কর্মসূচি ঘোষণা করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী দাবি আদায় ঐক্য পরিষদ। দাবি আদায়ে কর্মসূচি ঠিক করতে আগামী ১৮ মার্চ এক আলোচনা সভা করতে যাচ্ছে সংগঠনটি। এদিন সকাল ১০টায় পশ্চিম কাফরুলের সমিতির অস্থায়ী কার্যালয়ের সভায় জোটভূক্ত সকল সমন্বয়কসহ অন্যান্য নের্তৃবৃন্দকে যথাসময়ে উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানিয়েছে দাবি আদায় ঐক্য পরিষদ।
সভা শেষে ১৯ মার্চ (শনিবার) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী দাবি আদায় ঐক্য পরিষদের মুখ্য সমন্বয়ক মো: ওয়ারেছ আলী।
সংঘঠনটির শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনার কারণে স্থগিত হওয়ায় বিভাগীয় সমাবেশ কর্মসূচি ফের ঘোষণা করা হতে পারে ওই সংবাদ সম্মেলনে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী দাবি আদায় ঐক্য পরিষদের মুখ্য সমন্বয়ক মো: ওয়ারেছ আলী বলেন, করোনার কারণে আমাদের পূর্ব ঘোষিত বিভাগীয় সমাবেশ স্থগিত করা হয়েছিলো।এখন করোনা পরিস্থিতর উন্নতি হওয়ায় আগামী ১৮ মার্চ সভার আহ্বান করা হয়েছে। সেখানে পরবর্তী কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এবং ১৯ মার্চ প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তা জানানো হবে।
কী ধরণের কর্মসূচি আসতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পূর্বে স্থগিত হওয়া বিভাগীয় সমাবেশ ছাড়াও কর্মচারীদের অনেকে কালো ব্যাচ ধারণ কর্মসূচির কথা বলছেন।আরও অনেকেই অনেক কিছু বলছেন।তবে সভায় আলোচনার মাধ্যমেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ৭ দফা দাবি আদায়ে বছরের শুরুতে ৮ বিভাগীয় শহরে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছিলো সরকারি কর্মচারী দাবি আদায় ঐক্য পরিষদ। তবে দেশে ওমিক্রনের (কোভিড-১৯) প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় সভা-সমাবেশের ওপর সরকারি নিষেধাজ্ঞার কারণে তা স্থগিত করা হয়।
‘বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী দাবি আদায়ে ঐক্য পরিষদ’-এর ৭ দফা দাবি সমূহ:
১) জাতীয় স্থায়ী বেতন কমিশন গঠনপূর্বক বঙ্গবন্ধু ঘোষিত ১৯৭৩ সনের ১০ ধাপে ৯ম পে-স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে। সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ বেতনের পার্থক্য ১:৫ হতে হবে। পূর্বের ন্যায় শতভাগ পেনশন প্রথা পুনঃবহাল করতে হবে।
২) এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি চালুসহ সচিবালয়ের ন্যায় সচিবালয়ের বাহিরের সরকারী কর্মচারীদের পদ ও বেতন বৈষম্য দূর করতে হবে। ব্লক পোস্টধারীদের পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।
৩) আউটসোর্সিং পদ্ধতি বাতিলপূর্বক উক্ত পদ্ধতিতে নিয়োগকৃত কর্মচারীদের রাজস্ব খাতে হস্থান্তর করতে হবে। বিভিন্ন দপ্তর/প্রতিষ্ঠানে উন্নয়ন খাতে কর্মরত কর্মচারীদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করতে হবে। ডাক বিভাগের প্রার্থী প্রথা চালুসহ মাস্টার রোল ও অন্যান্য দপ্তররে কর্মরত মাস্টার রোল, কন্টিজেন্স ও ওয়ার্কচার্জ কর্মচারীদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করতে হবে।
৪) সরকারি কর্মচারিদের পূর্বের ন্যায় ৩টি টাইমস্কেল, সিলেকশন গ্রেড ও বেতন সমতাকরণ পুনঃবহাল করতে হবে। জীবন যাত্রার মান সমুন্নত রাখার স্বার্থে ও টাকার অবমূল্যায়নের কারণে এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিষয় বিবেচনা করে পেনশনের হার ৯০% থেকে ১০০% ও গ্রাইচ্যুইটির হার ১ টাকায় ২৩০ টাকার স্থলে ৪০০ টাকায় উন্নীত করণ করতে হবে।
৫) ৯ম পে-স্কেল প্রদানের পূর্ব পর্যন্ত দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্ধ্বগতির বিষয় বিবেচনা করে ৫০% মহার্ঘ ভাতা অবিলম্বে দিতে হবে।
৬) প্রশাসন ক্যাডারে কর্মরত কর্মচারীদের ন্যায় ১১তম থেকে ২০তম গ্রেডের সরকারি কর্মচারিদের বিনা সুদে ৩০ লাখ থেকে ৫০ লাখ টাকা গৃহনির্মাণ ঋণ দিতে হবে ও উন্নয়ন খাতের কর্মচারীদের যোগদানের দিন থেকে সিনিয়রিটি পাওয়ার জন্য করা রিট মামলার মহামান্য হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত আদেশ অনতিবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
৭) চাকুরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ বছর এবং অবসর গ্রহণের বয়সসীমা ৬২ বছর করতে হবে। প্রাথমিক শিক্ষার শিক্ষকদের ন্যায় অন্যান্য সকল দপ্তরে পোষ্য কোটা চালু করতে হবে।
সোনালীনিউজ/আইএ
আপনার মতামত লিখুন :