Menu
ঢাকা : শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত স্বাধীনতার জন্য বাঙালি সংগ্রামে গর্জে ওঠে। যতই দিন গড়াচ্ছিল, রাজনৈতিক সংকট ততই গভীরতর হচ্ছিল। ইতিহাসের দিকে ফিরে তাকালে একাত্তরের ২৪ মার্চের ঘটনাবলি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান আগেই ২৫ মার্চে ঢাকায় অনুষ্ঠেয় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করে রাজনৈতিক সংকট আরো ঘনীভূত করে তোলেন। এমনকি পাকিস্তানের উভয় অংশের নেতৃবৃন্দের মধ্যে আলোচনা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যের পরিবেশ সৃষ্টির সুযোগ নস্যাৎ হয়ে যায়।
অসহযোগ আন্দোলনের ২৩তম দিবস ছিল ২৪ মার্চ। ‘জয় বাংলা’ শ্লোগানে মুখরিত বাংলার মানুষ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ মেনে ঢাকার রাজপথ প্রকম্পিত করে তুলছে। এবার যেন সত্যিই সেই মুহূর্ত, স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা-বন্দুক, কামান, মেশিনগান কোনো কিছুই জনগণের স্বাধীনতা রোধ করতে পারবে না।
প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ২৩ মার্চ পাকিস্তান দিবস উপলক্ষে প্রদত্ত এক বাণীতে বলেছিলেন, ‘পাকিস্তান এখন এক ক্রান্তিলগ্নে উপনীত। গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের পথে অনেক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে গেছে’। এ সবই ছিল তার এবং তার পশ্চিম পাকিস্তানি দোসরদের সৃষ্টি। এতদিন আলোচনার নামে প্রহসনের খেলায় মত্ত থেকে ভেতরে ভেতরে বাংলার নিরীহ, শান্তিকামী মানুষ নিধনের নীল নকশা বাস্তবায়নের সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করে এনেছেন।
পূর্ব বাংলার আপামর মানুষ বুঝতে পেরেছিল প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার আলোচনার নামে সময়ক্ষেপণ কোনো এক অশুভ কাজের পরিকল্পনা। প্রত্যেক জেলা, মহকুমা, থানা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে গঠিত সংগ্রাম-প্রতিরোধ কমিটি সোচ্চার ও জোরালো হয়। সারা প্রদেশের প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙে পড়ে। অফিস-আদালত, ব্যাংক-বীমা, খাজনা-ট্যাক্স সবকিছু বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে চলতে থাকে।
প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া আগেই বুঝেছিলেন এখানে তার কোনো কর্তৃত্বই আর অবশেষ নেই। তাই তিনি পূর্বেই রণে ভঙ্গ দিয়ে বাঙালি নিধনে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে সৈন্য আনার কাজ সমাপ্তির পথে এগিয়ে নিয়েছেন। অপরদিকে মুক্তির সংগ্রাম এগিয়ে নিতে সেদিন পূর্ব বাংলার আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি নির্দেশের অপেক্ষায় প্রহর গুনছিল।
সোনালীনিউজ/এমটিআই
© 2025 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | সোনালীনিউজ.কম
Powered By: Sonali IT