• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১
সংশোধন হচ্ছে বিধিমালা

সুখবর পাচ্ছেন নিম্ন গ্রেডের সরকারি কর্মচারীরা


নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ৪, ২০২২, ০১:৩২ পিএম
সুখবর পাচ্ছেন নিম্ন গ্রেডের সরকারি কর্মচারীরা

ঢাকা : প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ১৯৭৯ সালের আচরণ বিধিমালা সংশোধন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই ‘সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা-২০২২’ শিরোনামের খসড়া প্রায় চূড়ান্ত করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সরকারি চাকরি আইনের অধীনে এ বিধিমালাটি করা হচ্ছে।

বিদ্যমান বিধিমালায় কোম্পানি স্থাপন ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সরকারি কর্মচারীদের বারণ আছে। প্রস্তাবিত সংশোধনীতে এটা বহাল থাকলেও সরকারের অনুমতিক্রমে নিবন্ধনকৃত সমবায় সমিতি স্থাপন ও ব্যবস্থাপনায় অংশ নিতে পারবেন কর্মচারীরা।

আরও পড়ুন : রমজানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা হচ্ছে: শিক্ষামন্ত্রী

এছাড়া বেতন কাঠামোর ১৭-২০ গ্রেডভুক্ত কর্মচারীরা সরকারি কাজের ব্যাঘাত না ঘটিয়ে ব্যবসা করতে পারবেন। তবে অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যবসা করতে গেলে অনুমোদন নিতে হবে।

একই সঙ্গে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী তার এখতিয়ারাধীন এলাকায় নিজ পরিবারের সদস্যকে সরকারের অনুমোদন না নিয়ে ব্যবসায় জড়াতে পারবেন না।

এ বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালাটি যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই বিধিমালার খসড়া সচিব কমিটিতে পাঠানো হবে।

আশা করি, সংশোধিত বিধিমালাটি সব পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে শৃঙ্খলা বিধানে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখবে।’

আরও পড়ুন : অনুমতি ছাড়াই ব্যবসা করতে পারবেন নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীরা

প্রস্তাবিত বিধিমালার খসড়া অনুযায়ী, সম্পত্তির হিসাব না দেওয়ার জন্য কোনো অজুহাতই দাঁড় করাতে পারবেন না সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। প্রতিবছর আয়কর বিবরণী জমা দিলেও সরকারের নির্ধারিত দপ্তরে সম্পদের হিসাব দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে।

এছাড়া প্রস্তাবিত বিধিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো বিষয়ে প্রচারে অংশ নিতে সরকারি চাকরিজীবীদের যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিতে হবে।

তবে সরকারের উন্নয়নকাজ সম্পর্কিত বিষয়ে দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা কথা বললে তা ইতিবাচক হিসাবে দেখা হবে। আর সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বামী বা স্ত্রীদের কেউ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলে তা জানাতে হবে।

এছাড়া বিদ্যমান আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী, কোনো তদন্ত কমিটিতে সাক্ষ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিতে হয়।এটি বহাল রেখে প্রস্তাবিত সংশোধনে বলা হয়েছে, সাক্ষ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের কোনো নীতি বা সিদ্ধান্তের সমালোচনা করা যাবে না।

আরও পড়ুন : প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন পুরনো পেনশনভোগীরা

কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারবেন না উল্লেখ করে খসড়ায় বলা হয়, কেউ যদি কোনো নির্বাচনে নির্দিষ্ট প্রার্থীর পক্ষে ভোট চান তাহলে তিনি রাজনীতিতে জড়িয়েছেন-এমন অভিযোগে ব্যবস্থা নিতে পারবে সরকার।

নারী সহকর্মীদের প্রতি অসঙ্গত আচরণ ও শব্দ ব্যবহার করা যাবে না। ‘অসঙ্গত আচরণ’ বিষয়ে প্রশ্ন উঠলে যথাযথ কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

প্রস্তাবিত বিধিমালার খসড়ায় সরকারি দলিলাদি বা তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কঠোর ধারাই বহাল রাখা হচ্ছে। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া সরকারি-বেসরকারি বা সাংবাদিকদের কারও কাছেই তথ্য দেওয়া যাবে না।

উল্লেখ্য, ‘সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা-১৯৭৯’ প্রণয়নের পর ১৯৮৫ সালে প্রণীত ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার অধীনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হতো।

২০১৮ সালে সরকারি চাকরি আইন প্রণয়ণের পর ৮৫ সালের বিধিমালা বাতিল হয়ে যায়। এরপর আইনের অধীনে ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা-২০১৮’ প্রণয়ন করে সরকার।

এ বিধিমালার অধীনেই প্রস্তাবিত আচরণ বিধিমালা লঙ্ঘনকারীর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।

আচরণ বিধিমালাটি সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয় ২০১৩ সালে। ৪ বছর পর ২০১৮ সালে সেই উদ্যোগটি প্রায় চূড়ান্ত ছিল। তখন সরকারি চাকরি আইন প্রণয়ন হওয়ায় এ আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিধিমালাটি নতুন সংশোধনের সিদ্ধান্ত হয়। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নেও চলে গেছে আরও ৪ বছর। এবার বিধিমালাটি আলোর মুখ দেখবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!