• ঢাকা
  • বুধবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৪, ২৭ কার্তিক ১৪৩১

৪৮ ঘণ্টা পর মিলেছে রেলের টিকিট, আজও উপচেপড়া ভিড়


নিজস্ব প্রতিনিধি জুলাই ৪, ২০২২, ১১:২০ এএম
৪৮ ঘণ্টা পর মিলেছে রেলের টিকিট, আজও উপচেপড়া ভিড়

ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা : ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনসহ দেশের বিভিন্ন স্টেশনে বিক্রি হচ্ছে ঈদের অগ্রীম টিকিট। সোমবার (৪ জুলাই) দেওয়া হচ্ছে ৮ জুলাইয়ের টিকিট। অগ্রীম টিকিট বিক্রি শেষ হবে আগামীকাল ৫ জুলাই।

টানা চতুর্থ দিনের মতো ঢাকার কমলাপুর রেল স্টেশনে সকাল ৮ টা থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। তবে গত ৩ দিনের চেয়ে দীর্ঘ লাইনে টিকিটের অপেক্ষায় রয়েছেন যাত্রীরা।

টিকিট নামের এই সোনার হরিণ পেতে অনেকেই দু’দিন ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন। আবার কেউ কেউ ৯ জুলাইয়ের টিকিটের জন্য এরই মধ্যে দাঁড়িয়ে গেছেন লাইনে। অসহ্য গরমের মধ্যে মানুষের উপচেপড়া ভিড়ে স্টেশনের আবহাওয়া আরও গরম হয়ে উঠেছে। গরম থেকে বাঁচতে কেউ কেউ হাতপাখা নিয়ে এসেছেন। তবুও ভ্যাপসা গরমের হাত থেকে রক্ষা মিলছে না। গরমে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এরপরও ঘণ্টার পর ঘণ্টা ট্রেনের টিকিটের জন্য লাইনে অপেক্ষা করছেন তারা।

টিকিট প্রত্যাশী মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ২ তারিখ সকাল ১০টায় এসেছিলাম ৩ তারিখের টিকিট কাটার জন্য। টিকিট লাগবে ৭ জুলাইয়ের। কিন্তু ওইদিনের টিকিট পাইনি। ৩০/৩৫ জন থাকতেই টিকিট শেষ হয়ে যায়। পরে আজকের জন্য আবার লাইন দিই। অবশেষে ৪৬ ঘণ্টা অপেক্ষায় থেকে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেসের একটি টিকিট পেয়েছি। তাও নির্দিষ্ট গন্তব্যের না, রংপুর পর্যন্ত। দেখে যেটা মনে হলো, লাইনের প্রথম ৬০/৭০ জনই আসলে টিকিট পান। এরপর বাকিরা আবার পরবর্তী দিনের অপেক্ষায় থাকেন। 

সাভার থেকে থেকে আসা রমজান মোল্লা নামের এক টিকেট প্রত্যাশী বলেন, গতকাল অফিস শেষ করে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়েছি। এখনও টিকেট পাইনি, দেখা যাক টিকিট পাই কখন।

খুলনার ৮ জুলাইয়ের টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছেন শফিকুল ইসলাম নামের এক যাত্রী। গত রোববার রাত থেকে তিনি লাইনে। এতো আগে লাইনে দাঁড়ানোর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আগে আগে লাইনে দাঁড়িয়েছি যাতে টিকিট পাই। এতো কষ্টের পর টিকিট পেলেই খুশি। এসময় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের এখানে কোনো কিছু সঠিক নিয়মে চলে না। অনলাইনে তো কোনোভাবেই টিকিট পাওয়া যায় না। সব টিকিট বিক্রি শেষ হয়ে গেলে তারপর অ্যাপে ঢোকা যায়। সংশ্লিষ্টরা জেনেও কোনো পদক্ষেপ নেয় না। যে কারণে আমাদের এমন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

আরেক টিকিট প্রত্যাশী মোহাম্মদ মোকলেছুর রহমান বলেন, আমি ২ তারিখ দুপুর ২টায় এসেছিলাম ৭ তারিখের টিকিটের জন্য। কিন্তু টিকিট পাইনি। পরে আবার সিরিয়াল দিয়ে আজকে টিকিট পেলাম সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেসের সিরাজগঞ্জ স্টেশনের। অনলাইনেও অনেক চেষ্টা করেছি, কিন্তু টিকিট পাইনি। একটা ট্রেনের ১০/১২টা বগি থাকে। কিন্তু এতো টিকিট যায় কোথায়? 

তিনি বলেন, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তাদের টিকিট আলাদা রাখুক। আমাদের টিকিটগুলো আমাদের দিক। তারা আমাদের টিকিটের মধ্যেও ভাগ ধরে। 

ঈদুল আজহা উপলক্ষে গত শুক্রবার (১ জুলাই) থেকে ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। ১ জুলাই দেওয়া হয় ৫ জুলাইয়ের ট্রেনের টিকিট, ২ জুলাই দেওয়া হয় ৬ জুলাইয়ের, ৩ জুলাই দেওয়া হয় ৭ জুলাইয়ের টিকিট। আজ দেওয়া হচ্ছে ৮ জুলাইয়ের টিকিট এবং আগামীকাল (৫ জুলাই) দেওয়া হবে ৯ জুলাইয়ের ট্রেনের টিকিট।

এছাড়া ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে ৭ জুলাই থেকে। সেদিন ১১ জুলাইয়ের টিকিট বিক্রি হবে। ৮ জুলাই ১২ জুলাইয়ের টিকিট, ৯ জুলাই ১৩ জুলাইয়ের টিকিট, ১১ জুলাই ১৪ এবং ১৫ জুলাইয়ের টিকিট বিক্রি হবে। মধ্যে ১০ জুলাই ঈদ হওয়ায় ১১ জুলাই সীমিত কয়েকটি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করবে। তবে ১২ জুলাই থেকে সব ট্রেন চলাচল করবে।

ঢাকায় ৬টি স্টেশন ও গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলস্টেশন থেকে ঈদের ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। ঢাকার কমলাপুর স্টেশনে সমগ্র উত্তরাঞ্চলগামী আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট এবং কমলাপুর শহরতলী প্ল্যাটফর্ম থেকে রাজশাহী ও খুলনাগামী ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। ঢাকা বিমানবন্দর থেকে চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। তেজগাঁও স্টেশনে পাওয়া যাচ্ছে ময়মনসিংহ, জামালপুর, দেওয়ানগঞ্জগামী ট্রেনের টিকিট।

এছাড়া ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে পাওয়া যাচ্ছে মোহনগঞ্জগামী মোহনগঞ্জ ও হাওর এক্সপ্রেসের টিকিট। রাজধানীর ফুলবাড়িয়া স্টেশনে পাওয়া যাচ্ছে সিলেট ও কিশোরগঞ্জগামী ট্রেনের টিকিট। গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে পঞ্চগড়ের ঈদ স্পেশাল ট্রেন ছাড়বে।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!