ঢাকা : গণহত্যা ও নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেওয়া লাখ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিককে নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে নানা টালবাহানার পর অবশেষে একটি প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে মিয়ানমার। প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশের দেওয়া রোহিঙ্গাদের তালিকা যাচাই-বাছাই করবে।
বুধবার (১৫ মার্চ) সকালে মিয়ানমারের ২২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল কক্সবাজারের টেকনাফে আসে।
সকাল ৯টার পর টেকনাফ দমদমিয়া ট্রানজিট ক্যাম্পে এসে পৌঁছায় প্রতিনিধি দল। তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দলের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এতে নেতৃত্ব দেবেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমান।
বাংলাদেশের পাঠানো তালিকা থেকে মিয়ানমার যে সমস্ত রোহিঙ্গাকে তাদের নাগরিক হিসেবে যাচাই-বাছাই করে ফিরতি তালিকা দিয়েছিল তা নিয়ে ওই বৈঠকে আলোচনা হবে।
বাংলাদেশ মিয়ানমারকে আট লাখ ৩০ হাজারের মতো রোহিঙ্গার তালিকা দিয়েছিল। সেখান থেকে মাত্র ৬০ হাজারের মতো রোহিঙ্গাকে বেছে নিয়েছে মিয়ানমার। ওই তালিকা ধরে এর আগেও দুই বার রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরুর কথা থাকলেও রোহিঙ্গাদের আপত্তিতে তা সম্ভব হয়নি।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে পরবর্তী কয়েক মাস গণহত্যা ও নির্যাতনের মুখে লাখ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিক বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিতে থাকে। এর আগেও বিভিন্ন সময় বাংলাদেশে আসে হাজার হাজার রোহিঙ্গা। সবমিলিয়ে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারে ক্যাম্পগুলোতে অবস্থান করছে।
সর্বাত্মক চেষ্টা করেও গত পাঁচ বছরে সরকার একজন রোহিঙ্গাকেও নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরাতে পারেনি। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে বারবার আশ্বাস দিলেও মিয়ানমার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে নানা টালবাহানা করছে। ইতোমধ্যে দেশটিতে সামরিক শাসন ফিরে আসায় প্রত্যাবাসনের আলোচনাও অনেকটা এতদিন থমকে ছিল।
লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে বাংলাদেশ। কক্সবাজারের জনজীবনে কিছুটা চাপ কমাতে এক লাখ রোহিঙ্গা নাগরিককে নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হাতিয়ায় পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে কয়েক দফায় রোহিঙ্গাদের সেখানে স্থানান্তর করা হয়েছে।
সোনালীনিউজ/এম
আপনার মতামত লিখুন :