• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর, ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১

মাছ মাংস খেয়ে চারজনের পরিবারের মাসে ব্যয় ২২৬৬৪ টাকা


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ২৭, ২০২৩, ০৩:৫৮ পিএম
মাছ মাংস খেয়ে চারজনের পরিবারের মাসে ব্যয় ২২৬৬৪ টাকা

ঢাকা : দেশের খাদ্য মূল্যস্ফীতি মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। সে তথ্যই উঠে এসেছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) তথ্যে।

প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ফেব্রুয়ারি মাসে মাছ-মাংস বাদ দিয়ে খাদ্য দ্রব্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ১১ শতাংশ, মাছ-মাংস যোগ দিলে মূল্যস্ফীতি ২৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ। অথচ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যে ফেব্রুয়ারিতে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ।

সিপিডি বলছে, রাজধানী ঢাকায় চার সদস্যের একটি পরিবারের খাবারের পেছনে প্রতি মাসে খরচ হচ্ছে ২২ হাজার ৬৬৪ টাকা। আর খাদ্যতালিকা থেকে মাছ-মাংস বাদ দিয়ে ছোট করলে ব্যয় দাঁড়ায় ৭ হাজার ১৩১ টাকা। কিন্তু নিম্ন এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের যে আয় তা দিয়ে খাদ্যপণ্য কিনে টিকে থাকা কঠিন। অথচ গত অক্টোবরে সিপিডির প্রকাশ করা একই তথ্যে বলা হয়েছিল মাছ মাংস যোগ দিলে একটি পরিবারের মাসে ব্যয় হবে ২২ হাজার ৪২১ টাকা, মাছ মাংস বাদ দিলে ব্যয় হবে ৯ হাজার ৫৯ টাকা।

খাদ্যে মূল্যস্ফীতির ২৫ শতাংশের বেশি যে হিসেব সিপিডি দিয়েছে, সেটি গত ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত। অথচ ২০১৯-২০ অর্থবছরেও মাছ-মাংস ছাড়া খাবারে মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৪০ শতাংশ, মাছ মাংসসহ মূল্যস্ফীতি ছিল ৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ।

সিপিডি জানায়, এর আগে অক্টোবরে তারা ২০টি পণ্যের হিসেব করে তারা মূল্যস্ফীতির তথ্য দিয়েছিল। কিন্তু নতুন তালিকায় তারা তরল দুধ, আলু ও কলা বাদ দেওয়ায় তাদের হিসেবে কম্প্রোমাইজ ডায়েটে হিসেব কমেছে।

সিপিডি তাদের নিয়মিত খাদ্য-তালিকার বাস্কেটে পাইজাম চাল, খোলা আটা, খোলা সয়াবিন, মোটা মসুরের ডাল, দেশি পেঁয়াজ, আদা, শুকনা মরিচ, হলুদের গুঁড়া, রসুন, রুই মাছ, গরুর মাংস, খাসির মাংস, ব্রয়লার মুরগি, মার্কস দুধ, চিনি, ডিম ও লবণকে তালিকাভুক্ত করে এ হিসেব করেছে। এ ছাড়া কম্প্রোমাইজ খাদ্যতালিকা থেকে মাছ-মাংস বাদ দিয়ে হিসেব করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

সোমবার (২৭ মার্চ) ‘জাতীয় বাজেট ২০২৩-২৪ সিপিডি’র সুপারিশমালা’ শীর্ষক বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সংলাপে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন এসব তথ্য তুলে ধরেন।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, গত বছর রাজধানীতে চার সদস্যের একটি পরিবারের খাবারের পেছনে প্রতি মাসে খরচ ছিল ১৮ হাজার ১১৫ টাকা। আর খাদ্যতালিকা থেকে মাছ-মাংস বাদ দিয়ে ছোট করলে ব্যয় দাঁড়িয়েছিল ৫ হাজার ৬৮৮ টাকা।

সিপিডি জানায়, আন্তর্জাতিক বাজারে যে হারে পণ্যের দাম বাড়ছে, তার চেয়েও বেশি হারে বাড়ছে দেশের স্থানীয় বাজারে পণ্যের দাম। বিশেষ করে চাল, আটা, চিনি, ভোজ্য তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে কমলেও স্থানীয় বাজারে সেই প্রভাব নেই। অভ্যন্তরীণভাবে উৎপাদিত পণ্যের দামও কারণ ছাড়া ঊর্ধ্বমুখী। এ ক্ষেত্রে বাজার ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি রয়েছে। লাগামহীন মূল্যস্ফীতির কারণে অনেকেই খাদ্য ব্যয় কমিয়ে আনতে খাবারের তালিকা থেকে বাদ দিচ্ছেন মাছ-মাংসসহ বিভিন্ন আমিষ।

সংস্থাটি বলছে, বর্তমানে রাজধানীতে বসবাসরত চার সদস্যের একটি পরিবারের মাসে খাদ্য ব্যয় ২২ হাজার ৬৬৪ টাকা। এটাকে রেগুলার ডায়েট বলছে সিপিডি। এখানে ২৫টি খাদ্যপণ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মাছ-মাংস বাদ দিলেও খাদ্যের পেছনে ব্যয় হবে ৭ হাজার ১৩১ টাকা। এটা ‘কম্প্রোমাইজ ডায়েট’ বা আপসের খাদ্যতালিকা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!