• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বঙ্গবাজারে শুধু হাহাকার, স্বপ্ন পুড়েছে সবার


লাইজুল ইসলাম এপ্রিল ৫, ২০২৩, ০৯:০৯ পিএম
বঙ্গবাজারে শুধু হাহাকার, স্বপ্ন পুড়েছে সবার

ঢাকা: এক দিনের ব্যবধানে শতশত মানুষকে নিঃস্ব করে দিয়েছে আগুন। পুড়ে ছাই হয়ে গেছে মানুষের স্বপ্ন। ঈদকে সামনে রেখে কি করবেন তা ভেবে পাচ্ছেন না ক্ষতিগ্রস্তরা। আগুনের লেলিহান শিখা সব ছাই করে দিয়েছে ব্যবসায়ীদের। 

বুধবার (৫ এপ্রিল) বঙ্গবাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায় শতশত ব্যবসায়ীর ভিড়। ভিড় এড়িয়ে আগুনে পুড়ে যাওয়া অংশে গেলে দেখা যায় ব্যবসায়ীরা হতাশা ও কষ্টে চুপচাপ বসে আছেন।

এসময় জিন্স প্যান্টের ব্যবসায়ী সাহেদ আলী কান্না জড়িত কণ্ঠে সোনালীনিউজকে বলেন, আমার এখানে দীর্ঘ দিনের ব্যবসা। করোনায় আমাদের ব্যবসায় ছিলো না। এই বছর আমরা ভেবেছিলাম কিছুটা ভালো ব্যবসা করবো। কিন্তু সেটা আর পারলাম কই। আমার সব কিছু শেষ। এবার মোটা অংকের টাকা ধার করে মাল উঠিয়েছিলাম। কিছু পণ্য বিক্রি হলেও বাকি পণ্য পুড়ে ছাই। 

কান্না জড়িত কণ্ঠে আরেক ব্যবসায়ী আহমেদ বলেন, এখানে আগুন কিভাবে লাগলো তা কেউ জানে না। ভোরের দিকে কারেন্ট থাকে বন্ধ। কারণ সব দোকান ঐ সময়টায় বন্ধ থাকে। তাহলে আগুনটা লাগলো কিভাবে। আগুন আমাদের সব কিছু কেড়ে নিয়েছে। আমাদের আগে জানতে হবে কিভাবে আগুন লেগেছে। 

তিনি বলেন, দোকানে লাখ টাকার ওপরে ছিলো। আট লাখ টাকার পণ্য ছিলো। সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। কিচ্ছু পাইনি। একটা কাপড়ও অক্ষত পাওয়া যায়নি। আমার বাসার ভাড়া নিয়ে এখন বিপদে পরেছি। কোথা থেকে কর্মচারীদের বেতন দিবো তাও চিন্তা করছি। সামনে ঈদ আমার সঙ্গে কর্মীরাও বিপদে পরেছে। এই লোকগুলো কিভাবে ঈদ করবে তাই ভেবে পাচ্ছি না। 

সালেহা বেগম বলেন, ঈদের আগে এমন ঘটনা ঘটলো কোথাও গিয়ে দাড়ানোর জায়াগ নেই আমার। ঈদে বাচ্চাদের কিছু কিনে দেয়ার মতো ক্ষমতাও আমাদের নাই। সব পুড়ে গেছে। বাসা ভাড়া দেয়ার অবস্থাও নাই। 

এসময় এনেক্সকো টাওয়ারের সামনে একটি ক্যাশ বাক্সে পোড়া টাকা নিয়ে হাটছিলেন মো. সাদ্দাম হোসেন। তিনি শোকে স্তব্দ হয়ে ছিলেন।  সোনালীনিউজকে বলেন, বাড়ি থেকে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে ধার করে টাকা এনে ব্যবসা শুরু করেছি। মাসে মাসে টাকা শোধ করছিলাম। সোমবার ৫০ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। সেই টাকা দোকানের ক্যাশ বাক্সে রেখে গিয়েছি। যেটা এখনো পুড়ে ছাই হয়ে আছে। 

তিনি বলেন, আমি বহুদিন অন্যের দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করেছি। মালিক ও মার্কেটের বড় ভাইদের ধরে একটি দোকান ভাড়া নেই। বাড়ির জমি বিক্রি করেছি। এখন কিভাবে এত টাকা লোন শোধ করবো তা বুঝে পারছি না। সরকার যদি আমাদের সাহায্য না করে তাহেল এখান থেকে ঘুড়ে দাড়ানো সম্ভব না। 

একটি দোকানের কর্মচারি সোহেল বলেন, আমার বেতন হবে না ঈদের আগে। মালিকের এই অবস্থায় বেতনও চাইতে পারবো না। কিন্তু বেতন দিয়েই আমাদের সংসার চলতো। ঈদ কিভাবে করবো তাও জানি না। আল্লাহ এখন একমাত্র ভরসা আমাদের। 

ক্ষতিগ্রস্তদের দেখতে এসে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আমাদের দলীয় প্রধান বলেছেন এখানে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করতে। আমাদের যতটুকু সম্ভব আমরা সাহায্য করবো। আমরা আজকে দেখে গেলাম। খুব শিগগিরি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবো। 

দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, বঙ্গবাজারে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য দেয়া হবে। তাদের অনুদান দেয়া হবে। তাদের সহযোগিতা করবে সরকার। সবাই ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানান তিনি।

সোনালীনিউজ/এলআই/আইএ

Wordbridge School
Link copied!