• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

পানি ব্যবহারে সচেতন হওয়ার তাগিদ ওয়াসার


লাইজুল ইসলাম এপ্রিল ১৮, ২০২৩, ০৯:২৮ পিএম
পানি ব্যবহারে সচেতন হওয়ার তাগিদ ওয়াসার

ঢাকা: রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকায় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। তবে এই সংকট পকেট সংকট বলে দাবি করেছে ঢাকা ওয়াসা। সংস্থাটি বলছে, দুই কোটির শহরে পানির চাহিদা সর্বোচ্চ ২৫০ কোটি লিটার। তাও সর্বোচ্চ গরমে এই অবস্থা হয়। কিন্তু এবার গরম গত ৫০ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে। সেই সঙ্গে পানির চাহিদাও বেড়েছে কয়েক গুণ। গত চারদিনের তীব্র গরমে পানির চাহিদা নিশ্চিত করে সংস্থাটি বলতে না পারলেও প্রায় ২৬০ থেকে ২৭০ কোটি লিটার পানির চাহিদা ছিলো।

রাজধানীর চামেলিবাগের আবুল কাশেম বলেন, সাধারণত এখানে পানির এতটা সংকট কখোনোই হয়নি। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে পানির সংকট দেখা দিয়েছে। হঠাৎ একদিন পানি আসেনি বাসায়। তবে ওয়াসাকে বলার সঙ্গে সঙ্গেই পানি চলে এসেছে বাসায়। কিন্তু পানি পাওয়ার আগে বেশ ভালোই ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। 

মিরপুরের বাসিন্দা আহমেদ শামিম বলেন, এখানে পানির সংকট গরম আসলেই বৃদ্ধি পায়। এটা বরাবরই। কিন্তু এবার পানির সংকট তীব্র। তবে পানি সরবরাহ রয়েছে গাড়ি দিয়ে। এতে কিছুটা সমস্যা রয়েছে। যা গণমাধ্যমে বলা যাবে না।

পানির লেয়ার নিচে নেমেছে বলে দাবি করেছেন রাজধানীর অনেক বাসিন্দা। তারা মনে করেন ভূগর্ভস্থ পানি কমে যাওয়ার কারণে পানির সংকট দেখা দিয়েছে। তবে এ বিষয়ে তাদের কাছে কোনো অকাট্য প্রমাণ নেই। 

পানি সংকট নিরসনে ঢাকা ওয়াসা কাজ করলেও বেশ কিছু এলাকার মানুষ বেশ কষ্টেই রয়েছে। এসব এলাকায় পানির সমস্যা বৃহস্পতিবার ঠিক হয়ে যাবে বলে আশা করছে ঢাকা ওয়াসা। আর সাধারণ মানুষকে পানি ব্যবহারে আরো সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। 

তারা বলছে, ঈদ উপলক্ষে ঢাকা থেকে বুধবার থেকে মানুষ তার নিজ বাড়ির দিকে রওয়ানা দিবেন। আশা করা যায় এরপরই পানির চাহিদা কমে আসবে। যেসব এলাকায় পানি পাওয়া যাচ্ছে না সেখানেও পানি পাওয়া যাবে। 

ঢাকা ওয়াসার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম শহিদ উদ্দিন বলেন, পানির যে চাহিদা তা আমাদের ধারণার বাইরে। তবে সব এলাকায় একই রকম চাহিদা না। কিছু এলাকায় স্বাভাবিক আছে, কিছু এলাকায় পানির চাহিদা অনেক। গরমের কারণে পানির ব্যবহার অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের উৎপাদন যা আছে তাতে আমরা এখন পর্যন্ত পানি দিতে পারছি। সরবরাহে কোনো সমস্যা নেই। তবে ঢাকায় কিছু এলাকায় পানির পকেট সমস্যা আছে। যেসব এলাকায় পানির সমস্যা আছে সেখানে গাড়িতে করে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। 

পানি উত্তলনে কোনো ঘাটতি আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছু এলাকায় পকেট সমস্যা চলছে। সেগুলো ওয়াসার জন্য না। বিভিন্ন হাউজিং তাদের পানির পাম্প বসানোর জায়গা রাখেনি। এখন সেখানে পানির পাম্প বসানোর কাজ চলছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি দ্রুত সেই সব এলাকায় পানির পাম্প বসাতে। জায়গা আমাদের দেয়া হলেই আমরা পাম্প বসিয়ে দিবো। 

তিনি বলেন, পানির লেয়ার বৃষ্টি না হওয়ার কারণে এক ফুট নিচে নেমে গেছে। এইটুকুতে পানি উত্তলনে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। গরমের কারণে পানির লেয়ার প্রাকৃতিক ভাবেই নেমে যায়। তারপরও আশা করা যায় কয়েকদিনের মধ্যেই সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে। পানির যে সংকট কিছু এলাকায় চলছে তা সমাধান হয়ে যাবে। 

নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, গরম না কমা পর্যন্ত পানি ব্যবহারে সবাইকে সর্বোচ্চ সচেতন হতে হবে। যেমন, আপাতত গাড়ি ধোয়া বন্ধ রাখতে হবে। অপ্রয়োজনে পানির কল ছেড়ে রাখা যাবে না। বাসা-বাড়ি ও আঙ্গিনা, গ্যারেজ ধোয়া মুছার ক্ষেত্রেও পানির স্বল্প ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। তবে ছুটি শুরু হবে মঙ্গলবার দিনগত রাত থেকে। আশা করি বৃহস্পতিবারই পানির চাহিদা অনেকাংশে কমে যাবে।    

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান বলেন, এই গরমে মানুষ পানি ব্যবহারে সংযোমী হয়নি। গোসল করতে গিয়ে পানির কল খুললেই গরম পানি বের হয়। সেই পানিটুকু সবাই ফেলে দেয়। এই ফেলে দেয়া পানি যে কত লিটার কেউ যানে? কেউ কি চিন্তা করেন এই পানিতে কত মানুষ উপক্রিত হতো? তাই সবার প্রতি আহ্বান পানি ব্যবহারে সংযোমী হোন।

সোনালীনিউজ/এলআই/আইএ

Wordbridge School
Link copied!