ঢাকা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, হাইওয়ে পুলিশ মহাসড়কে জনসাধারণের নিরাপত্তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে আসছে। পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় সম্পদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কার্যকর ভূমিকা রাখছে। ভবিষ্যতে হাইওয়ে পুলিশের কাজে অধিক গতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে আধুনিক যন্ত্রপাতি, পর্যাপ্ত যানবাহন ও জনবল বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
রোববার (১১ জুন) বাংলাদেশ হাইওয়ে পুলিশের ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ হাইওয়ে পুলিশের ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী’ উদযাপিত হচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত। এ উপলক্ষে তিনি হাইওয়ে পুলিশের সকল সদস্যকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
প্রধানমন্ত্রী মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশের গৌরবোজ্জ্বল আত্মত্যাগ ও বীরত্বের স্বর্ণোজ্জ্বল ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদাত্ত আহ্বানে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে অকুতোভয় বীর পুলিশ সদস্যরা গড়ে তুলেছিল প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ। প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য আত্মোৎসর্গকারী দেশপ্রেমিক বীর পুলিশ সদস্যদেরকে প্রধানমন্ত্রী গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমরা পুলিশের উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। বাহিনীর জনবল বৃদ্ধি, নতুন নতুন ইউনিট গঠন, ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন, আধুনিক যানবাহন ও লজিস্টিক্স সুবিধা বৃদ্ধি, সর্বাধুনিক প্রশিক্ষণ সুবিধা নিশ্চিতকরণ, পুলিশ সদস্যদের সার্বিক কল্যাণের জন্য কল্যাণ ট্রাস্ট ও ব্যাংক গঠন, আবাসন ও চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রভৃতি ক্ষেত্রে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশকে একটি আধুনিক, যুগোপযোগী, দক্ষ ও জনবান্ধব সার্ভিসে পরিণত করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।
সরকার প্রধান বলেন , গত প্রায় সাড়ে ১৪ বছরে আমরা হাইওয়ে পুলিশকে আধুনিকায়ন করার লক্ষ্যে আমরা ‘বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ বিভাগের ৫০টি হাইওয়ে আউটপোস্ট নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৫০টি হাইওয়ে আউটপোস্ট নির্মাণ করি এবং আধুনিক যন্ত্রপাতি ও পর্যাপ্ত যানবাহন, জনবল বৃদ্ধি করি। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সার্বক্ষণিক নজরদারির লক্ষ্যে ‘হাইওয়ে পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি শীর্ষক’ প্রকল্পের আওতায় নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড হতে চট্টগ্রাম সিটি গেট পর্যন্ত ২৫০ কিলোমিটার এলাকায় অত্যাধুনিক ডাটা সেন্টার ও আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স সহকারে সিসিটিভি মনিটরিং সিস্টেম স্থাপন করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে মহাসড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি হ্রাস পাবে। সড়কে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও বৈদেশিক পণ্য রফতানি পরিবহনে সুরক্ষা নিশ্চিত করে দেশের রফতানি খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এছাড়া ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, নৌ পুলিশ, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন, এন্টি টেররিজম ও কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটসহ বেশ কয়েকটি রেঞ্জ, মেট্রোপলিটন ইউনিট, সাইবার পুলিশ সেন্টার, ব্যাটালিয়ন, ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার থানা, তদন্ত কেন্দ্র, ফাঁড়ি এবং জাতীয় জরুরি সেবায় ৯৯৯ ইউনিট গঠন করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক চালু করেছি, বিট পুলিশিং এর মাধ্যমে পুলিশ সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী আশা করেন, হাইওয়ে পুলিশের প্রত্যেক সদস্য মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি বলেন, আপনারা সততা, নিষ্ঠা ও মানবিকতার সঙ্গে দায়িত্বপালনের মাধ্যমে জাতির পিতার প্রত্যাশিত ‘জনগণের পুলিশ’ হিসেবে গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করবেন। সবার ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠায় ‘রূপকল্প ২০৪১’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ তথা ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তুলতে আমরা সক্ষম হব, ইনশাল্লাহ।
সোনালীনিউজ/এমটিআই