• ঢাকা
  • সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে বাড়তি নজর সরকারের


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ১৪, ২০২৩, ০৮:৩২ পিএম
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে বাড়তি নজর সরকারের

ঢাকা: জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র ৬ মাস বাকি। নির্বাচনকে সামনে রেখে সামাজিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত কর্মসূচিতে বাড়তি নজর দিয়েছে সরকার। এই কর্মসূচি যথা সময়ে বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। গত ১১ জুন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় সভায় এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সরকার সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় প্রায় ১ কোটি লোককে বিভিন্ন প্রকার ভাতা ও অনুদান প্রদান করে থাকে। ভাতাগ্রহীতার নাম অন্তর্ভুক্তিকরণ, যাচাই ও ভাতা বিতরণ কার্যক্রম নিয়ে নানা ধরনের ভোগান্তির অভিযোগ রয়েছে।

সরকারি সমীক্ষার তথ্যমতে, বয়স্ক ভাতার তালিকায় অনিয়মের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। আর সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির পুরো আয়োজনে অনিয়মের পরিমাণ ৪৬ শতাংশ। অনিয়ম দূর করে সঠিক লোকের কাছে এসব কর্মসূচির সহায়তা পৌঁছে দিতে পারলে কোনো বাড়তি ব্যয় ছাড়াই আরও ২৬ লাখ পরিবারের ১ কোটি ৭ লাখ মানুষকে দারিদ্র্যসীমার নিচ থেকে এক ঝটকায় তুলে আনা সম্ভব।

সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিগুলোর বাস্তবায়ন পরিস্থিতি নিয়ে জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলের (এনএসএসএস) মধ্যবর্তী উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। বলা হয়েছে, তালিকাভুক্ত ভাতাভোগীদের ৪৬ শতাংশের বেশি ভাতা পাওয়ার যোগ্য নয়। তবে প্রতিবেদনে একে অনিয়ম না বলে বলা হয়েছে, ‘তালিকাভুক্তির ভুল’। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসন এই সব তালিকা তৈরির সঙ্গে যুক্ত।

২০১৮ সালে বিশ্বব্যবাংকের সহযোগিতায় সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে ক্যাশ ট্রান্সফার মডার্নাইজেশন (সিটিএম) প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু হয়। যার মাধ্যমে ৪৯ লাখ বয়স্ক, ২০ লাখ ৫০ হাজার বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্ত মহিলা, ১৮ লাখ প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও ১ লাখ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী উপবৃত্তিসহ মোট ৮৮ লাখ ৫০ হাজার ভাতাভোগীর তথ্য ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমে (এমআইএস) অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

ভাতা কার্যক্রমের পাশাপাশি মন্ত্রণালয় ও আওতাধীন দপ্তর সংস্থাসমূহের প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা ও অন্যান্য সেবা কার্যক্রমেও এসেছে ডিজিটাল প্রযুক্তির ছোঁয়া। সব মন্ত্রণালয়ের সেবাসমূহকে একটি সিঙ্গেল ইন্টিগ্রেটেড ডিজিটাল সার্ভিস প্ল্যাটফর্মের আওতায় আনার জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, আইসিটি বিভাগ ও এটুআইয়ের সমন্বয়ে প্রণীত রোডম্যাপ অনুযায়ী সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও আওতাধীন দপ্তর বা সংস্থার আটটি ডিজিটাল সার্ভিসের ডিজাইন করা হয়েছে।

অনুদান, ফেলোশিপ, বৃত্তি, শিক্ষা উপবৃত্তি, ইন্টার্নশিপ ব্যবস্থাপনা; হাসপাতাল এবং প্রতিবন্ধী সেবা ব্যবস্থাপনা সিস্টেম; উৎপাদন, ব্র্যান্ডিং এবং বাজারজাতকরণ ব্যবস্থাপনা; সচেতনতা তৈরি ও সহায়ক যন্ত্র ব্যবস্থাপনা; ট্রেনিং ও আবাসন ব্যবস্থাপনা; প্রতিবন্ধী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষা ব্যবস্থাপনা; শিশু ব্যবস্থাপনা সিস্টেম এবং সামাজিক নিরাপত্তা ডেলিভারি অ্যাপে আটটি ডিজিটাল সার্ভিসের মাধ্যমে সমাজসেবা অধিদপ্তর, জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন, নিউরো ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট, বাংলাদেশ জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদ ও শারীরিক প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্টের সেবাসমূহ একটি সুইচের মাধ্যমে প্রদান করা হবে।

বর্তমানে এ আটটি সেবাকে ডিজিটালাইজড করার কাজ চলমান রয়েছে। এই ইন্টিগ্রেটেড ডিজিটাল সার্ভিস ডেলিভারি প্ল্যাটফর্ম বাস্তবায়িত হলে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং আওতাধীন দপ্তর বা সংস্থার সেবাসমূহের শতকরা ৮৫ ভাগ ডিজিটাল হবে এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় সেবাগ্রহীতারা বিনা ভোগান্তিতে সব ধরনের সেবা পাবেন বলে মনে করছে সরকার।

সফটওয়্যারের পাশাপাশি দুস্থ, অসহায়, দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত জনগোষ্ঠীর জন্য আর্থিক সাহায্য ও চিকিৎসা অনুদান প্রদানের কার্যক্রমও অনলাইনে চালু করা হয়েছে। ক্যানসার, কিডনি, লিভারসিরোসিস, স্ট্রোকে প্যারালাইজড, জন্মগত হৃদরোগ ও থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের আর্থিক সহায়তা কর্মসূচি সহজীকরণে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছে। 

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এবং নিরক্ষরদের জন্য প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে ১০৯টি পাঠ্যবইয়ের ডিজিটাল টকিং বুক চালু করা হয়েছে। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদর জন্য ডিজিটাল শিক্ষা-উপকরণ তৈরি ও বিতরণ করা হচ্ছে। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের চলাচল নিরাপদ করার জন্য বিভিন্ন আধুনিক সুবিধাসংবলিত ডিজিটাল স্মার্ট হোয়াইট ক্যান বিতরণ করা হচ্ছে।

সোনালীনিউজ/এসআই/আইএ

Wordbridge School
Link copied!