ঢাকা : ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনের স্বতন্ত্র সংসদ-সদস্য প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের ওপর হামলার নেতৃত্বে ছিলেন যুবলীগ নেতা শেখ মেহেদী হাসানের অনুসারীরা।
তিনি যুবলীগের বনানী থানার শীর্ষ পদপ্রত্যাশী এবং ছাত্রলীগের থানা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তার বাড়ি গোপালগঞ্জে। নির্বাচনের দিন দলীয়ভাবে ভোটকেন্দ্রে তার দায়িত্ব না থাকলেও হামলার পুরো ঘটনায় সম্পৃক্ত হয়েছে মেহেদী হাসানের লোকজন।
মেহেদী দাবি করেছেন, এ ঘটনায় আটককৃত সাতজনের মধ্যে চারজনই তার ‘ছোট ভাই’। আটককৃতদের পাঁচজনের বাড়ি আবার মেহেদীর জেলায়। হামলাকারীদের সঙ্গে মোবাইলে তার সার্বক্ষণিক যোগাযোগের তথ্যও পেয়েছে পুলিশ। এ জন্য ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যে মেহেদীকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। যদিও পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
হামলার ঘটনায় মঙ্গলবার রাজধানীর বনানী থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। এতে অজ্ঞাত ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়। সাতজনকে গ্রেফতার করা ছাড়া আরও কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। যাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। গ্রেফতার সাতজনের মধ্যে দুজনকে তিন দিনের রিমান্ড দিয়েছেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত। বাকি পাঁচজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) হিরো আলম এক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘যাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে তারা প্রকৃত অপরাধী নয়। মূল অপরাধীদের আড়াল করতেই আশপাশে থাকা সাধারণ মানুষ বা দর্শকের ভূমিকায় যারা ছিলেন তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। সুষ্ঠু নির্বাচন ও আমার নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় ডিএমপি কমিশনারের পদত্যাগ চাই। মার খেয়ে যেসব পুলিশ ও বিজিবি সদস্যের কাছে সাহায্য চেয়েও পাইনি তাদেরও বিচার চাই।’
তিনি বলেন, ‘হামলার ঘটনাসহ আমার ওপর যেসব অন্যায় করা হয়েছে তা বিস্তারিত তুলে ধরে ই-মেইলের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘকেও জানিয়েছি।’
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছেন সাতজন। তারা হলেন— ছানোয়ার কাজী (কাশিয়ানী, গোপালগঞ্জ), বিপ্লব হোসেন (মোকসেদপুর, গোপালগঞ্জ), মাহমুদুল হাসান মেহেদী (মোকসেদপুর, গোপালগঞ্জ), মোজাহিদ খান (গোপালগঞ্জ সদর, গোপালগঞ্জ), মো. আশিক সরকার (হোমনা, কুমিল্লা), মো. হৃদয় শেখ (জাজিরা, শরীয়তপুর) এবং সোহেল মোল্লা (কাশিয়ানী, গোপালগঞ্জ)। রিমান্ডপ্রাপ্ত দুজন হলেন- ছানোয়ার কাজী ও বিপ্লব হোসেন। অপর আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
এদিকে হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। তীব্র নিন্দা জানিয়েছে লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়েও উঠে আসে এ হামলার প্রসঙ্গ। তারা সবাই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, পুরো বিষয়টি আমরা তদন্ত করব। এ জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশের কোনো গাফিলতি থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হামলার ঘটনায় মামলা রেকর্ড হয়েছে। যারা তার গায়ে হাত দিয়েছে তাদের কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদেরও গ্রেফতার করব।
সোনালীনিউজ/এমটিআই