ঢাকা: নির্বাচন কমিশন (ইসি) চ্যালেঞ্জ নিতে চায় বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচনে যে সংকটটা রয়েছে, সেটা আস্থার। আমরা অবাধ, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ নিতে চাই।’
গতকাল রবিবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (ইটিআই) এক কর্মশালার উদ্বোধনীতে তিনি এ কথা বলেন। দুই দিনের এই আবাসিক কর্মশালায় ৫০ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও ৫০ নির্বাচন কর্মকর্তা অংশ নেন।
কর্মকর্তাদের উদ্দেশে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরা আগামীতে যে নির্বাচন করতে যাব, সেখানে যেন আস্থার সংকট না থাকে। আমরা যারা নির্বাচন পরিচালনা করব, নির্বাচন কর্মকর্তা থেকে শুরু করে আপনারা যারা আছেন, আরপিও (জনপ্রতিনিধিত্ব আদেশ) অনুযায়ী দায়িত্বটা ভালোভাবে বুঝে নেবেন। কোনো প্রশ্নের উদ্রেক হলে, কথা বলে নিশ্চিত হয়ে নেবেন। দায়িত্বটা কঠোরভাবে প্রতিপালন করতে হবে। ইসি থেকেও কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করব।
নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন তর্ক ও বিতর্ক হতে পারে বলে জানিয়ে সিইসি বলেন, অতীতেও হয়েছে। আমরা যদি ৫০, ৬০, ৭০ বছরের ইতিহাস দেখি তখনও হয়েছে। কিন্তু মাত্রাটা কম ছিল। তবে আমরা বর্তমানে যে নির্বাচনটা করতে চাচ্ছি সেটার একটা বিশেষ দিক হচ্ছে অভিযোগ বা বিতর্কের মাত্রাটা অতিরিক্ত। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের চাপটা এসে আমাদের ওপর পড়েছে। কাজেই আমরা নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছি।
সব দেশের আইনে ক্রেডিবল বলে একটা শব্দ আছে জানিয়ে সিইসি বলেন, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও বলা হয় নির্বাচন ক্রেডিবল হতে হবে। ক্রেডিবল তখনই হবে যখন আমরা আমাদের দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে স্বচ্ছতা আনতে পারি।
ডিজিটাল প্রযুক্তির কারণে মিডিয়ার কর্মীরা তাৎক্ষণিক প্রচার করতে পারে জানিয়ে সিইসি বলেন, বাজারে কথা আছে, আমাদের ওপর, সরকারের ওপর আস্থা নেই; নির্বাচন নিরপেক্ষ হয় না। আমরা এই চ্যালেঞ্জটা গ্রহণ করতে চাই, আগামীতে যে নির্বাচনটা হবে অবাধ, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ হবে, একই সঙ্গে স্বচ্ছ হবে। স্বচ্ছতাটা আমরা দেখাতে চাইব মিডিয়া এবং পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে।
প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশে সিইসি আরও বলেন, জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে নির্বাচন পরিচালনা হবে। নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য, শান্তিপূর্ণ হতে হবে। আরেকটা বিষয় হচ্ছে, ভোটাররা যেন নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে এসে ভোট দিতে পারে। তা না হলে দায়িত্ব আপনাদের ওপর বর্তাবে। পুলিশ প্রশাসনের সহায়তা নেবেন এবং জনগণকেও উদ্বুদ্ধ করবেন, তারা যেন এসে ভোট দিয়ে যায়।
শক্তিশালী পোলিং এজেন্ট নিয়োগের পরামর্শ দিয়ে সিইসি বলেন, পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ আছে। অনেকে আবার এজেন্ট না দিয়েও অভিযোগ করেন। কাজেই প্রতিটি দল থেকে এজেন্টে দিয়েছেন কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে। এজেন্ট শক্তিশালী হলে কারচুপি হওয়ার আশঙ্কা অনেক কমে যাবে।
কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম, অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ এবং জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক একেএম হুমায়ুন কবীরসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এমএস
আপনার মতামত লিখুন :