• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১
আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস আজ

বাল্যবিবাহ আর ধর্ষণের শিকার বেশি কন্যাশিশুরা


নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ১১, ২০২৩, ১১:৫৯ এএম
বাল্যবিবাহ আর ধর্ষণের শিকার বেশি কন্যাশিশুরা

ঢাকা : ৯৯৯ জরুরি সেবা হেল্প লাইনে ২৫ হাজারেরও বেশি ফোন আসে বাল্যবিবাহ সংক্রান্ত। আইন ও সালিশ কেন্দ্র আর বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের তথ্য মতে দেশে যত সংখ্যক নারী যৌন নির্যাতনের শিকার হয় তার চেয়ে বেশি হয় কন্যাশিশু।

চলতি বছর ছয় মাসে মোট ২২৩ জন কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয় আর একই সময় ১০৭ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়।

নারীর চেয়ে শিশু ধর্ষণের শিকার হয় ১০৬ শতাংশ বেশি। এমন পরিস্থিতির মধ্যে আজ ১১ অক্টোবর ‘ইনভেস্ট ইন গার্লস রাইটস:আওয়ার লিডারশিপ, আওয়ার ওয়েল বিং’ প্রতিপাদ্য করে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস।

গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১০৭ জন শিশু। বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) ক্রৈমাসিক (জুলাই-সেপ্টেম্বর) শিশু অধিকার লঙ্ঘনের সংখ্যাগত প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ পায়।

দেশের বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও নিজস্ব তথ্য অনুসন্ধানের মাধ্যমে সংস্থাটি এই প্রতিবেদন তৈরি করে। ২০২২ সালের জুলাই মাস থেকে ২০২৩ সালের জুন মাস পর্যন্ত ১০৯৮এ মোট ২ লাখ ৫২ হাজার ৮২১টি সহায়তা চেয়ে কল আসে। তার মধ্যে বাল্যবিবাহ সংক্রান্ত ৬৯৮টি।

২০২২ সালে প্রকাশিত মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় বেসরকারি সংস্থা ইনসিডিন বাংলাদেশের ‘বাংলাদেশে শিশুর প্রতি সহিংসতা পরিস্থিতি’ শীর্ষক জরিপে দেখা যায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা নিজের বাড়ি—কোনো জায়গাতেই নিরাপদ থাকতে পারছে না কন্যাশিশুরা। অসংখ্য মেয়ে নিজের পরিবারের সদস্যদের কাছেই দিনের পর দিন শারীরিক, মানসিক ও যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, শতকরা ৫৫ ভাগ শিশু নিজের পরিবারের ভেতরেই যৌন হয়রানির শিকার হয়।

জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের তথ্য বলছে, এ বছর জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত আট মাসে মোট ৩২৯ জন কন্যাশিশু যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের তথ্য অনুযায়ী, কন্যাশিশুর ওপর যৌন হয়রানির ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে পর্নোগ্রাফি। এ বছর প্রথম আট মাসে পর্নোগ্রফির শিকার হয়েছে ৩০ জন কন্যাশিশু।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, বাল্যবিবাহ দেওয়া খুবই সাধারণ বিষয় বলে সমাজে ধরে নেওয়া হয়। মেয়েদের ১৫/১৬/ ১৭ বছরে বিয়ে হবে, এটাকে কেউ ক্ষতিকর বলে মনে করে না। দারিদ্র্যের সঙ্গে এমন সামাজিক কারণ যুক্ত হচ্ছে।

পাশাপাশি আমরা জন্মনিবন্ধন, কাজিদের সচেতনতা বৃদ্ধিসহ প্রাতিষ্ঠানিক দায়িত্বগুলো যথাযথভাবে পালন করতে দেখি না। ফলে আমরা আমাদের লক্ষ্য অর্জনে পিছিয়ে পড়ছি।

তাই শুধু আইন করে নয়, সামাজিকভাবে সম্মিলিত হয়ে সরকার ও সুশীল সমাজকে কাজ করতে হবে।

যৌন হয়রানি রোধ করতে ১০৯৮-এর ব্যবস্থাপক চৌধুরী মো, মোহাইমেন বলেন, ইন্টারনেটের অবাধ ব্যবহার রোধ করতে হবে। শিশুদের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি না করে গভীর সম্পর্ক ধরে রাখতে হবে।

শিশুকে পরিবারে ধর্ষণ রোধে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কামল উদ্দিন আহমেদ পারিবারিক, প্রাতিষ্ঠানিক ও রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি বলেন, শিশু ধর্ষণ রুখতে যেমন আইনে প্রয়োজন, তেমন ঐসব মানুষের মানসিক পরিবর্তন ঘটানোর জন্য শাস্তির পাশাপাশি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!