• ঢাকা
  • সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
ডিএমপি কমিশনার

কনস্টেবল পারভেজ হত্যায় দুইজন গ্রেপ্তার, ‘উচ্চ নিম্ন’ কাউকে ছাড় নয়


নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ২৯, ২০২৩, ০৪:০২ পিএম
কনস্টেবল পারভেজ হত্যায় দুইজন গ্রেপ্তার, ‘উচ্চ নিম্ন’ কাউকে ছাড় নয়

ঢাকা : ঢাকায় বিএনপির ‘মহাসমাবেশের’ দিন পুলিশ সদস্য আমিরুল ইসলাম পারভেজ হত্যার ঘটনায় ‘সরাসরি যুক্ত’ দুইজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘উচ্চ নিম্ন’ কাউকে ছাড় না দেওয়ার ঘোষণা এসেছে।

রোববার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে পারভেজের জানাজায় গিয়ে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে যা কিছু করার দরকার আমরা করব। ইতিমধ্যে পারভেজ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি যুক্ত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পুলিশ জানাচ্ছে, যে দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয় তাদের একজনকে গাইবান্ধা থেকে আরেকজনকে ধরা হয়েছে ঢাকার ডেমরা থেকে।

গাইবান্ধা থেকে গ্রেপ্তার হওয়া শামীম রেজা জেলার পলাশবাড়ীর পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক বলে জানান জেলার পুলিশ সুপার কামাল হোসেন।

ডেমরা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সুলতান নামে একজনকে, তবে তার দলীয় পরিচয় নিশ্চিত করেননি ডিএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার কমিশনার কেএন রায় নিয়তি।

বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে শনিবার ঢাকায় বিএনপির ‘মহাসমাবেশের’ দিন ব্যাপক সংঘর্ষের মধ্যে পুলিশ সদস্য পারভেজকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলার বেশ কিছু ভিডিও ফেইসবুকে ভাইরালও হয়েছে। রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে জানান, একজন ছাত্রদল নেতা পারভেজকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করেছেন। এ বিষয়ে তাদের কাছে ছবি আছে।

পুলিশ সদস্য হত্যা ছাড়াও ব্যাপক সহিংসতা হয় সেদিন। কাকরাইল ও বিজয়নগর এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্যে সাংবাদিকদের নির্বিচারে পেটানো হয়েছে। হামলা হয়েছে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে। বেশ কিছু গাড়িতেও আগুন দেওয়া হয়েছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, পুলিশের তিনটি অস্ত্রও ছিনতাই করা হয়েছে।

এসব ঘটনায় মামলা হচ্ছে এবং আরও অনেক মামলা হবে জানিয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থার ইঙ্গিত দিয়েছেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, তারা মিটিং করেছেন, যারা উসকানি দিয়েছেন, বলেছেন কালকে থেকে লাগাতার ওমুক-তমুক, এই সমস্ত করে জনতাকে উত্তেজিত করেছেন, এই দায় কি তারা এড়াতে পারবেন? এটা বিচার বিভাগ দেখবে, আমরা তাদের সম্মুখে নিয়ে যাচ্ছি। আইন অনুযায়ী বিচার বিভাগ দেখবে।

এরই মধ্যে আটক করা হয়েছে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে। বিরোধী দলটির অনেক নেতাই নেই প্রকাশ্যে। অনেকের বাসায় যাচ্ছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।

পারভেজের মেয়ের ‘দায়িত্ব’ নিলেন ডিএমপি কমিশনার : কনস্টেবল পারভেজের পরিবারের পাশে থাকবেন জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ একটি পরিবার। এই পরিবারের প্রধান হিসেবে আমি পারভেজের মেয়ের পড়ালেখা থেকে শুরু করে সব কিছুর দায়িত্ব নিচ্ছি।

৩২ বছর বয়সী পারভেজ কাজ করছিলেন ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটে। শাহজাহানপুর রেল কলোনির ভাড়া বাসায় স্ত্রী রুমা আক্তার আর সাত বছরের মেয়েকে নিয়ে থাকতেন তিনি। তার মেয়েটি প্রথম শ্রেণিতে পড়ে।

১২ বছর আগে পুলিশে যোগ দেওয়া পারভেজের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জে। তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা সেকান্দর আলী মোল্লা।

কাউকে ছাড় নয় : ডিএমপির যুগ্ন কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার নিজ কার্যালয়ে বলেন, পুলিশকে যারা হত্যা করেছে, যারা প্রধান বিচারপতির বাসায় হামলা চালিয়েছে, পুলিশ হাসপাতালে ঢুকে অ্যাম্বুলেন্সসহ গাড়ি পুড়িয়েছে, পুলিশ বক্স পুড়িয়ে দিয়েছে তাদের ছাড় দেওয়ার কোন সুযোগ নেই।

এসব ঘটনায় যত উচ্চ পর্যায়ের হোক আর যত নিম্ন পর্যায়ের হোক কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

শনিবার (২৮ অক্টোবর) বিএনপির কর্মসূচি চলাকালে পুলিশ হত্যা, হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনার প্রেক্ষিতে পুলিশে অবস্থান নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামলার প্রক্রিয়া চলছে। তবে এখন পর্যন্ত কতটি মামলা হয়েছে সে ব্যাপারে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য দেওয়া মুশকিল।

বিএনপি ‘পরিকল্পিতভাবে এসব হামলা, হত্যার ঘটনা ঘটিয়েছে’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বিএনপির হরতালের বিষয়ে এক প্রশ্নে বিপ্লব কুমার বলেন, হরতাল করা সবারই অধিকার এবং না করার অধিকারও আছে। যারা কারো চলাচলে বাধা দেবে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!