• ঢাকা
  • সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
তেজগাঁওয়ে ট্রেনে আগুন

শিশু সন্তানকে বুকে জড়িয়েই পুড়ে মরলেন পপি


নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ১৯, ২০২৩, ১১:৫৪ এএম
শিশু সন্তানকে বুকে জড়িয়েই পুড়ে মরলেন পপি

ঢাকা: রাজধানীর তেজগাঁও রেলস্টেশনে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে মা ও শিশুসন্তানসহ চার যাত্রী মারা গেছেন। তারা হলেন- নাদিয়া আক্তার পপি (৩৫) ও তার শিশুসন্তান ইয়াসিন (৩)। অন্য দুজনের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

সোমবার রাতে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে ওঠেন তারা। বিমানবন্দর স্টেশনে নেমে যান তাদের পাঁচজন। এরপর ট্রেন চলতে শুরু করলে হঠাৎ ধোঁয়ায় ভরে যায় কামরা। ‘আগুন আগুন’ বলে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু হয়। তেজগাঁও স্টেশনে ট্রেন থামতে সবাই হুড়োহুড়ি করে নেমে যান। শুধু চার হতভাগ্য নামতে পারেননি। তাদের মধ্যে ছিলেন নাদিরা আক্তার পপি ও তার তিন বছরের ছেলে ইয়াসিন। আগুনে পুড়ে মর্মান্তিক মৃত্যু হয় তাদের। মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে। 

পপির দেবর প্রকৌশলী মিনহাজুর রহমান বলেন, ‘ভাবির কোলে ছিল ছোট্ট ইয়াসিন। বাচ্চা নিয়ে উনি আর নামতে পারেননি। আগুন নেভানোর পর ওনার লাশ উদ্ধার করা হয়। তখনও তার কোলে ছিল সন্তানের মৃতদেহ। দুজন একসঙ্গে পুড়ে মারা গেছেন।’

তিনি আরো জানান, তার ভাই মিজানুর রহমান কারওয়ান বাজারে হার্ডওয়্যার সামগ্রীর ব্যবসা করেন। দোকানের নাম- রহমান এন্টারপ্রাইজ। তিনি রাজধানীর তেজতুরী বাজার এলাকায় থাকেন। তার সঙ্গেই থাকতেন পপি ও তাদের দুই সন্তান। 

সোমবার গ্রামের বাড়ি থেকে অন্য স্বজনের সঙ্গে তারা ফিরছিলেন। তারা সবাই ছিলেন ‘জ’ কোচের যাত্রী। তাদের মধ্যে পপির বড় ছেলে মাহিন (৯) ও ভাই হাবিব ট্রেন থেকে নামতে পেরেছেন। পরে তারা লক্ষ্য করেন পপি ও ইয়াসিন নেই। 

তবে ততক্ষণে ট্রেনের ওই কোচটিতে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। ফলে কিছুই করার ছিল না। ফায়ার সার্ভিস আগুন নেভানোর পর চারজনের লাশ উদ্ধার করে। তাদের মধ্যে দু’জন পপি ও তার শিশু সন্তান ইয়াসিন। 

তিনি বলেন, ‘লাশ দেখে বোঝা যায়, শেষমুহূর্ত পর্যন্ত সন্তানকে বুকে আগলে বাঁচানোর চেষ্টা করেন ভাবি। তবে অনেক লোকের হুড়োহুড়ির মধ্যে পারেননি। সন্তানকে বুকে নিয়েই জীবন্ত পুড়ে মারা যান।’

উল্লেখ্য, জানা গেছে, দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনেই এ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। এর আগে গত ১৩ ডিসেম্বর গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বনখরিয়া এলাকায় রেললাইনে নাশকতা চালায় দুর্বৃত্তরা। এতে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এ ঘটনায় আসলাম মিয়া (৪৫) নামে একজন নিহত হন। তার বাড়ি ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে।

এআর

Wordbridge School
Link copied!