ঢাকা : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন শেখ হাসিনা। সেখানে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে।
বিগত মন্ত্রিসভায় পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে ছিলেন, অথচ এবারের মন্ত্রিসভায় ঠাঁই হয়নি এমন সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। বাদ পড়া প্রভাবশালী মন্ত্রীদের মধ্যে রয়েছেন—কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান।
এ ছাড়া বাদ পড়েছেন বর্তমান পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীর, মৎস্য ও প্রাণি সম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ।
সুনামগঞ্জের সংসদ সদস্য এমএ মান্নান গত ১০ বছর ধরে মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। শুরুতে তিনি অর্থ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন পাঁচ বছর। এর পর তিনি পরিকল্পনা মন্ত্রী হিসেবে কাজ করেছেন।
এবারের মন্ত্রিসভায় তিনি নেই। মন্ত্রিসভায় কেন জায়গা হয়নি - সেটি নিয়ে কোন ধারণা করতে পারছেন না আবদুল মান্নান।
মান্নান বলেন, আই এম ভেরি হ্যাপি হোয়াট আই ডিড (আমি যা করেছি তাতে আমি খুশি)। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় জনগণের আড়ালে থাকা একটি বিষয় ছিল। আমি সেটাকে মানুষের সামনে আসতে পেরেছি। গ্রামের লোকেরাও 'একনেক' শব্দটা ব্যবহার করতো। একনেক সভা নিয়ে তারা ওয়েট করতো।
এম এ মান্নান মনে করেন, মন্ত্রিসভায় পরিবর্তনের বিষয়টি এমন নয় যে কেউ ব্যর্থ হয়েছে। এখানে ভারসাম্যের একটি বিষয় জড়িত।
মন্ত্রিসভা থেকে ‘বাদ পড়া’ বিষয়টিকে নেতিবাচক শব্দ হিসেবে মনে করেন তিনি।
সর্বশেষ মন্ত্রিসভায় টেকনোক্রেট কোটায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ছিলেন মোস্তফা জব্বার।
বাদ পড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, মন্ত্রিসভা গঠনের বিষয়টি সম্পূর্ণ প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। এখানে আমার মন্তব্য করার কিছু নেই। তিনি কাউকে যোগ্য মনে করতে পারেন, আবার কাউকে অযোগ্য মনে করতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, আমি একেবারে মহা যোগ্য বা ব্যর্থ – এসব কিছুই বিষয় নাই। মন্ত্রিপরিষদ গঠন করার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার সাংবিধানিকভাবে।
মন্ত্রী তালিকা থেকে যারা বাদ পড়েছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।
তিনি বলেন, মন্ত্রিসভা গঠন করা প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। যে মন্ত্রিপরিষদ গঠিত হয়েছে সেখানে সবাই যোগ্য বলে মনে করি।
তিনি আরও বলেন, আমি তো সংসদ সদস্য, আমার তো দায়িত্ব চলে যায়নি। মন্ত্রী হিসেবে এতদিন আমি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেছি। এখন আমি নির্বাচনি এলাকায় বেশি সময় দিতে পারব। আমি একজন আইনজীবী, আদালতে আমার পুরনো পেশায় ফিরে যেতে পারব।
যারা বাদ পড়েছেন তাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক। তিনি শুধু মন্ত্রীই ছিলেন না, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যও ছিলেন।
আওয়ামী লীগের নির্বাচন ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন। শুরুতে ২০০৯ সালে তিনি খাদ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন।
কিন্তু ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর মন্ত্রিসভায় স্থান না পেলেও, ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর তিনি আবারও মন্ত্রিসভায় ফিরে আসেন।
এবার কেন তিনি বাদ পড়লেন সেটি নিয়ে কেউ কোনো ধারণা করতে পারছেন না। সূত্র: বিবিসি।
এমটিআই