• ঢাকা
  • সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

রোহিঙ্গাদের এনআইডি, জন্মসনদ ও পাসপোর্ট তৈরি চক্রের ২৩ জন গ্রেপ্তার


নিজস্ব প্রতিবেদক  ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৪, ০৪:৩৪ পিএম
রোহিঙ্গাদের এনআইডি, জন্মসনদ ও পাসপোর্ট তৈরি চক্রের ২৩ জন গ্রেপ্তার

ঢাকা: দাগী অপরাধী ও রোহিঙ্গাদের অবৈধভাবে জন্মসনদ, এনআইডি ও পাসপোর্ট বানিয়ে দেওয়া চক্রের ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) লালবাগ বিভাগ। গত শুক্রবার ও রবিবার রাজধানী ও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে তারা পাঁচ দিনের রিমান্ডে আছেন।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হচ্ছেন রোহিঙ্গা উম্মে ছলিমা ওরফে ছমিরা, মরিজান, রশিদুল, রোহিঙ্গা দালাল আইয়ুব আলী ও মোস্তাকিম, আনসার সদস্য জামসেদুল ইসলাম ও মো. রায়হান, বাংলাদেশি দালাল রাজু শেখ, শাওন হোসেন নিলয়, ফিরোজ হোসেন, মো. তুষার মিয়া, মো. শাহজাহান শেখ, মো. শরিফুল আলম, জোবায়ের মোল্লা, শিমুল শেখ, আহমেদ হোসেন, মো. মাসুদ আলম, মো. আব্দুল আলিম, মো. মাসুদ রানা, ফজলে রাব্বি শাওন রজব কুমার দাস দীপ্ত, আল আমিন ও মো. সোহাগ।

সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ডিবি লালবাগ বিভাগের একাধিক টিম রাজধানীর আগারগাঁও, মোহাম্মদপুর, যাত্রাবাড়ী ও বাড্ডায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বিপুল পরিমাণ পাসপোর্ট সংক্রান্ত ডকুমেন্ট, পাসপোর্ট এবং কম্পিউটারসহ তিনজন রোহিঙ্গা ও ১০ জন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করে।

এতে আরও বলা হয়, তাদের দেওয়া তথ্য ও সংগৃহীত ডকুমেন্ট বিশ্লেষণ করে ২৫ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার, টাঙ্গাইল ও ঢাকায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে দুইজন আনসার সদস্যসহ রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি দালাল চক্রের আরেও ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ১৭টি পাসপোর্ট, ১৩টি এনআইডি, পাঁচটি কম্পিউটার, তিনটি প্রিন্টার, ২৪টি মোবাইল ফোন ও পাসপোর্ট তৈরির সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র জব্দ করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে হারুন অর রশীদ জানান, শক্তিশালী এই চক্র মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা শিশু, নারী ও পুরুষদেরকে লক্ষাধিক টাকার বিনিময়ে এনআইডি, জন্মসনদ ও পাসপোর্ট বানিয়ে দিত। চক্রটির একটি দল কক্সবাজার, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি থেকে রোহিঙ্গাদের ঢাকায় নিয়ে আসে। আরেকটি দল এদের জন্য জন্মসনদ, এনআইডি বানিয়ে দেয়। সবশেষে অন্য দলটি ঢাকাসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে আনসার সদস্যদের মাধ্যমে ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়া, বায়োমেট্রিক্স করা ও ছবি তোলার ব্যবস্থা করে দেয়।

ডিএমপি অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবির) বলেন, ছয় ঘণ্টার মধ্যে জন্মসনদের জন্য ৫ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা, তিন দিনের মধ্যে এনআইডি করার জন্য ২৫ হাজার টাকা এবং পাসপোর্ট তৈরি করার জন্য ১ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে থাকেন বলে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে। গ্রেপ্তার দালালদের মোবাইল ফোনে শত শত পাসপোর্ট করে দেওয়ার ডকুমেন্ট ও ডেলিভারি স্লিপ পাওয়া গেছে। যার মধ্যে গত তিন মাসে রোহিঙ্গাদের জন্য করা ১৪৩টি পাসপোর্টের সন্ধান পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, ২০১৯ সাল থেকে চক্রটি রোহিঙ্গাদের, বাংলাদেশি দাগী অপরাধীদেরকে ভিন্ন নাম ও ঠিকানায় পাসপোর্ট করে দিচ্ছে বলে স্বীকার করেছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ, রংপুর, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ ও বরিশাল জেলার ঠিকানা ব্যবহার করে জন্মসনদ ও এনআইডি বানিয়ে তার ভিত্তিতে পাসপোর্ট বানিয়ে থাকেন।

হারুন অর রশীদ আরও বলেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ডাটা, ডিজিটাল জন্মসনদ ডাটা, স্মার্ট এনআইডি ডাটা ব্যাংক আছে। সার্বভৌমত্বের স্মারক পাসপোর্ট তৈরির জন্য তাৎক্ষণিকভাবে রোহিঙ্গা ডাটা, ডিজিটাল জন্মসনদ ডাটা এবং স্মার্ট এনআইডি ডাটা ভেরিফাই করলেই রোহিঙ্গাসহ অন্য দেশের নাগরিকদের শনাক্ত করা সম্ভব।

এমএস

Wordbridge School
Link copied!