ঢাকা: রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রীণ কোজি কটেজ ভবনে অগ্নিকাণ্ডে ৪৬ জনের মৃত্যুর পর বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় অভিযান শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে রাজধানীতে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে দিয়েছে রাজউক সিটি করপোরেশনসহ একাধিক সংস্থা।
এই বিষয়টিকে একটু বাড়াবাড়ি বললো রেস্তারাঁ মালিক সমিতি।
বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান বলেছেন, রেস্টুরেন্টে একাধিক সংস্থা থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। আইন-শৃঙ্খলা কর্মে নিয়োজিত বাহিনী সমূহ যেমন- আনসার, পুলিশ ও এলিট ফোর্স র্যাব বাহিনীও তাদের নিজস্ব ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে নিরাপদ খাদ্য বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখতে সচেষ্ট। এটা হয়তো একটু বাড়াবাড়ি। কেননা নিরাপদ খাদ্য বাস্তবায়নে সরকার একটি কর্তৃপক্ষই গঠন করেছেন। তাদের কাজটি করতে দিতে হবে।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) বেলা ১১টায় রাজধানীর বিজয়নগরে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সাম্প্রতিক সময়ে বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে রেস্তোরাঁ শিল্পের সংকটের উত্তরণের উপায় এবং আসন্ন পবিত্র মাহে রমজানের পবিত্রতা বজায় রেখে রেস্তোরাঁ ব্যবসা করা নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
ইমরান হাসান বলেন, বেইলি রোডের গ্রীণ কোজি কটেজের অগ্নিকাণ্ডের দায় কেউ এড়াতে পারেন না। পুরো ভবনটাই ছিল অনিয়মে ভরা, ভবনটির অনুমোদন দিয়েছে রাজউক, রেস্তোরাঁ সেক্টরটি তদারকি করেন- বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, জাতীয় ভোক্তা অধিকার ও সংরক্ষণ অধিদপ্তর, সিটি করপোরেশন, কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর, সংযুক্ত আছেন জেলা প্রশাসক প্রশাসনসহ অনেক অধিদপ্তর ও সংস্থা। ৪৬ জনের প্রাণহানির পর রাজউক ও সিভিল ডিফেন্সের টনক নড়েছে। ঘটনার পর থেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঢাকা শহরের বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় অভিযান চালিয়ে সিলিন্ডার গ্যাসের বোতল জব্দ করছে এবং স্টাফদের গ্রেফতার করছে। এটি সমস্যার সমাধান নয়।
তিনি বলেন, সংবাদ সম্মেলনে সাম্প্রতিক সময়ে সংগঠিত অগ্নিকাণ্ডের জন্য সৃষ্ট সংকট থেকে উত্তোরণ শীর্ষক আলোচনা করে এমন একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হবে যে, রেস্টুরেন্ট করার পূর্বেই যথাযথ কর্তৃপক্ষ যাচাই-বাছাই করে রেস্টুরেন্টের অনুমোদন দেবেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, তিতাস গ্যাসের পর্যাপ্ততা নেই। আবার লাইন সংযোগ থাকলেও লাইনে গ্যাস নেই। এখন বিকল্প ব্যবস্থা গ্যাস সিলেন্ডার ব্যবহার বা লাকড়ি ব্যবহার, লাকড়ি ব্যবহার করলে কিচেনসহ পুরো রেস্টুরেন্ট কালো হয়ে যায়, পরিবেশ ঠিক থাকে না। পুরো বিষয়টি নিয়ে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাচ্ছি এবং ভবিষতের জন্য নির্দিষ্ট একটি গাইডলাইন তৈরি করতে হবে যাতে ব্যাঙের ছাতার মতো রেস্তোরাঁ গজিয়ে উঠতে না পারে।
একইসঙ্গে আসন্ন রমজানে পবিত্রতা বজায় রেখে রেস্তোরাঁ ব্যবসা করতে চান বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অপরদিকে, অগ্নিকাণ্ডে ৪৬ জনের মৃত্যুর ঘটনায় শোক প্রকাশ করে আগামী বৃহস্পতিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) প্রতিটি রেস্তোরাঁয় কালো পতাকা উত্তোলন ও কালো ব্যাজ ধারণ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি।
আইএ